×

সম্পাদকীয়

প্রতিরোধে শৈথিল্য আর নয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২০, ১১:৩২ পিএম

সারাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রোগী বাড়ার পেছনে স্বাস্থ্যবিধি মানায় শিথিলতাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। শীতের সময় দ্বিতীয়বার করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রকোপ বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা থেকে সরকার ভাইরাসটি প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার ব্যাপারে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছিল। কিন্তু মাঠপর্যায়ে তার কার্যকর কিছু দেখা যাচ্ছে না। এমন শৈথিল্য মনোভাবে ভাইরাসটিতে প্রাণহানি বেড়ে যেতে পারে। মহামারি প্রতিরোধের ব্যাপারে দ্রæত গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করি। এরই মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত রবিবার শীতের সময় সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এরপর ভাইরাসটি মোকাবিলায় শীতকালে কী করা যেতে পারে তা নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে। আশা করছি, মাঠপর্যায়ে দ্রæত বাস্তবায়ন দেখব। চলতি বছরের ৮ মার্চের পর থেকে গত ২৫৪ দিনে ৪ লাখ ৪০ হাজার ৪৭২ জন করোনা সংক্রমণের শিকার হলেও গত সোমবার পর্যন্ত ৩ লাখ ৫১ হাজার ১৪৬ জন সুস্থ হয়েছেন। দেশে ৮০.৮২ শতাংশ সুস্থ হওয়ার সংখ্যা। অবশিষ্টরা এখনো হাসপাতালে ও বাড়িতে চিকিৎসাধীন, আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইনে আছে। গত জুন, জুলাই অথবা আগস্ট মাসের মতো আতঙ্কজনক সংক্রমণের হার এখন নেই। তবে আগামী শীতে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হলে সংক্রমণ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। অবশ্য বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি উভয় পর্যায়ের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ এখনো শুরু হয়নি। এখনো প্রথম সংক্রমণের পর্যায়ই চলছে। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুসারে, করোনার সংক্রমণে এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ভারত, দ্বিতীয় স্থানে ইরান, তৃতীয় স্থানে ইরাক, চতুর্থ স্থানে ইন্দোনেশিয়া এবং পঞ্চম স্থানে বাংলাদেশ। বাংলাদেশেও দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান আসছে বিভিন্ন মহল থেকে। ইতোমধ্যে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হয়েছে। এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশেও। এমতাবস্থায় আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের মাঝে এতটাই শৈথিল্য এসেছে যে এখন করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করানোর ব্যাপারেও তাদের আগ্রহ কমে গেছে। ফলে সংক্রমণের সঠিক চিত্র পাওয়া যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রচার কেউ মানে না। এমনকি বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানেও মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। এমন অবস্থার মধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না। তাই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে হবে। এক্ষেত্রে আইনের কঠোর প্রয়োগ প্রয়োজন। সরকারের পাশাপাশি সামাজিক সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। প্রয়োজনে জনসাধারণের মধ্যে বিনামূল্যে মাস্ক সরবরাহ করা যেতে পারে। কারণ শুধু মাস্ক পরলেই অনেকটা নিরাপদ থাকা যাবে। সেই সঙ্গে ‘সামাজিক দূরত্বের’ বিষয়টি কঠোরভাবে মানতে বাধ্য করা জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App