×

প্রবাস

ছাত্রলীগের সহযোগিতায় স্পেন প্রবাসীদের ভোগান্তির অবসান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২০, ১০:০৭ এএম

ছাত্রলীগের সহযোগিতায় স্পেন প্রবাসীদের ভোগান্তির অবসান

বাংলাদেশ দূতাবাস, মাদ্রিদ, স্পেন।

ছাত্রলীগের সহযোগিতায় পাসপোর্ট নিয়ে স্পেন প্রবাসীদের সকল অভিযোগের অবসান ঘটেছে। প্রায় বছর খানিক আটকে থাকা পাসপোর্ট হাতে পেয়েছেন স্পেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ১১ নভেম্বর এই পাসপোর্টগুলো বাংলাদেশ থেকে স্পেনের মাদ্রিদে বাংলাদেশ দূতাবাসে এসে পৌঁছেছিল।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমিনের সরাসরি হস্তক্ষেপ, পাসপোর্ট অধিদপ্তরের নতুন ডিজি মেজর জেনারেল আইয়ূব আলীর সার্বিক তদারকি, বাংলাদেশ দূতাবাস মাদ্রিদ স্পেনের মান্যবর রাষ্ট্রদূত হাসান মাহমুদ খন্দকারের নিরলস প্রচেষ্টায়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ স্পেন শাখার সহযোগিতায় এই পাসপোর্টগুলো প্রবাসীদের নিকট প্রেরণের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ দূতাবাসে।

বছর পেরিয়ে গেলেও মিলছে না বাংলাদেশি পাসপোর্ট, ভুক্তভোগীরা পড়ছে চরম ভোগান্তিতে। দূতাবাসের আপ্রাণ চেষ্টা থাকলেও সাড়া দিচ্ছে না বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদপ্তর! গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর সালে রাষ্ট্রদূতের দেয়া স্মারকের পরও আটকে থাকা পাসপোর্ট আসছে না। পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ডিজির অ্যাপ্রুভাল চিঠি ইস্যু হবার পরও পাসপোর্ট পাচ্ছে না অনেক বাংলাদেশি। তবে পাসপোর্টের জন্য অপেক্ষারত কিছু বাংলাদেশি পাসপোর্ট অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সাথে অর্থনৈতিক লেনদেন মাধ্যমে তাদের পাসপোর্ট ছাড়িয়ে আনছে বলে অভিযোগ পাসপোর্ট আটকে থাকা প্রবাসীদের।

বাংলাদেশি পাসপোর্ট না পাওয়ায় অনেকের স্প্যানিশ রেসিডেন্ট কার্ড রিনিউ করতে পারছে না। এতে করে অনেকের অবৈধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অবৈধ হলে বাংলাদেশে বৈধভাবে রেমিটেন্স পাঠানোর সুযোগ নেই।

ভুক্তভোগীরা গতবছর প্রবাসীকল্যান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের কাছে সরাসরি বিষয়টি সমাধানের অনুরোধ করলে তারা আশ্বাস দেন বিষয়টি সমাধান করবেন কিন্তু বছর পেরিয়ে গেলেও সমাধান হয়নি বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক সুপারিশকৃত আটকে থাকা পাসপোর্ট গুলোর। এতে ভুক্তভোগীরা আছেন চরম হতাশা এবং ভবিষ্যত অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশ প্রতিদিনে ১৩ অক্টোবর ২০২০ তারিখে পাসপোর্ট জটিলতায় ভুগছে স্পেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী অবলোকন করেছেন এবং বর্ণিত বিষয়ে জরুরিভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ দূতাবাস স্পেন এর রাষ্ট্রদূত বর্ণিত বিষয়ে পাসপোর্ট অধিদপ্তর বরাবর একাধিক পত্র প্রেরণ করলেও এ বিষয়ে কোন অগ্রগতি অদ্যাবধি পরিলক্ষিত হয়নি মর্মে পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে মান্যবর রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন।

এমতবস্থায় বর্ণিত বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদটি পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এতদসঙ্গে নির্দেশক্রমে মহাপরিচালক বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরকে প্রেরণ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রীর একান্ত সচিব ড. দেওয়ান মো. শাহরিয়ার ফিরোজ। ওই পত্রটি ১৪ অক্টোবর প্রেরণ করা হয়।

এতে করে প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধান হচ্ছে খবর শুনে প্রবাসীরা আনন্দে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান সেইসাথে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে ধন্যবাদ জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, তার পাসপোর্ট প্রায় দেড় বছর ধরে আটকে আছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, বন পরিবেশ মন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী বলার পর পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ডিজি অ্যাপ্রুভাল চিঠি ইস্যুর অনুমোদন দেন তদন্ত শেষে। অ্যাপ্রুভাল চিঠি ইস্যুর পর AFIS এবং DEMO বিভাগ টাকার জন্য তার পাসপোর্ট প্রিন্টে দেয়নি বলে অভিযোগ করেন।

অন্য ভুক্তভোগী বলেন, একই সমস্যা নিয়ে তারা দুই বন্ধু পাসপোর্টের আবেদন করেন। তার বন্ধু দালালের মাধ্যমে টাকা দিয়ে পাসপোর্ট পেলেও সে এখনও পাসপোর্ট পায়নি। ইতিমধ্যে পাসপোর্টের জন্য তার স্প্যানিশ নাগরিকত্ব হারানোর পথে।

স্পেনের কমিউনিটি নেতারা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান, তারাও পাসপোর্ট অধিদপ্তর একটি দুর্নীতিগ্রস্ত অধিদপ্তর বলে আখ্যা দেন। এখানে টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না বলেও অভিযোগ করেন। দূতাবাসের শতভাগ চেষ্টার পরও দালাল চক্রের কারণে তারা প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপকার করতে পারছে না। পাসপোর্ট অধিদপ্তরে দালাল হটিয়ে রেমিটেন্স যোদ্ধাদের সহযোগিতা করার জন্য আহবান জানান তারা।

স্পেন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইসমাইল হোসাইন রায়হান জানান, দেশরত্ন শেখ হাসিনা একজন প্রবাসীবান্ধব প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের নিয়ে সবসময় ভাবেন। প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে তিনি সবসময় খোঁজ খবর রাখেন। আমরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ইতিমধ্যে প্রবাসী কল্যানমন্ত্রীর মাধ্যমে সৌদি আবর থেকে বিনা খরচে ৪টি লাশ বাংলাদেশে পাঠিয়েছি। এবং দীর্ঘ দিনের পাসপোর্ট জটিলতা সমাধানের জন্য প্রায় ১ বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সাবেক প্রবাসী কল্যান মন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন মন্ত্রীকে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর স্পেন সফরকালে আমরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদেরকে এই সমস্যা সমাধানের অনুরোধ করি। সেই ফলশ্রুতিতে আজকে প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানের পথে। ধন্যবাদ জানাই পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে। ভবিষ্যতে প্রবাসীদের সকল নায্য দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ স্পেন শাখা পাশে থাকবে ইনশাআল্লাহ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App