×

সারাদেশ

‘দয়া কইরা আমরারে বাঁচতে দেইন’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২০, ১০:০২ পিএম

‘দয়া কইরা আমরারে বাঁচতে দেইন’

সীমান্ত নদী যাদুকাটা থেকে কুড়ানো কয়লা পরিষ্কার করার কাজ করছে শ্রমিকরা

‘দয়া কইরা আমরারে বাঁচতে দেইন’

বাবার সাথে নদী থেকে কুড়ানো কয়লা পরিষ্কার করার কাজ করছে ৬ বছরের শিশু ফয়সল

‘সব হারাইয়া এই কাম কইরা বাঁইচ্যা আছি, দয়া কইরা আমরারে বাঁচতে দেইন। বাঁইচ্যা থাহনের শেষ সম্বল লইয়্যা খেল্লৈইন (খেলবেন) না।’ খেটে খাওয়া মানুষের ছবি তুলতে গেলেই এমন ভাবে মিনতি করে কথা বলছিলেন, হাওর বেষ্টিত ভাটির জনপদ খ্যাত সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকা চারাগাঁওয়ের বাসিন্দা ষাঠোর্ধ্ব নুরেজা বেগম। তার ধারণা, সাংবাদিকদের লেখার কারণেই তাহিরপুর উপজেলার তিন শুল্ক স্টেশন, বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বীরেন্দ্রনগরে কয়লা এবং চুনাপাথর আমদানি, ফাজিলপুর বালি পাথর মহালে বালি পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। কিন্তু মহামারি করোনার কারণে অনেকদিন ধরে বন্ধ ছিল কয়লা ও চুনা পাথর আমদানি। এছাড়া উচ্চ আদালতের নির্দেশে বন্ধ রয়েছে একমাত্র সীমান্ত নদী যাদুকাটায় বালি পাথর উত্তোলন। এছাড়া কয়েক দফা বন্যায় পিছিয়ে পড়ে হাওর পাড়ের একমাত্র ফসল বোরো আবাদ। ফলে হাওর পাড়ের হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী কর্মহীন হয়ে পরিবার নিয়ে কোন রকমে অনাহারে, অর্ধ্বাহারে দিনাতিপাত করছেন। শুধু নুরেজা বেগমই নন, হাওরপাড় ও সীমান্ত এলাকার অনেক মানুষের কর্মস্থলের অন্যতম উৎস এখন ভারতের মেঘালয়ের ওপার থেকে পানির সাথে ভেসে আসা কয়লা। যা তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত নদী যাদুকাটায় ভেসে আসে। এরই মধ্যে প্রশাসনের নির্দেশে কিছুদিনের জন্য বন্ধ থাকে কয়লা সংগ্রহ। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পুনরায় চালু হয় কয়লা কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহের কাজ। [caption id="attachment_251668" align="aligncenter" width="700"] বাবার সাথে নদী থেকে কুড়ানো কয়লা পরিষ্কার করার কাজ করছে ৬ বছরের শিশু ফয়সল[/caption] সম্প্রতি যাদুকাটা নদীতে গিয়ে দেখা যায়, ৬ বছরের শিশু ফয়সল বাবার সাথে নদী থেকে কুড়ানো কয়লা পরিষ্কার করার কাজ করছে। পরিবারের অভাব দূর করতে সে এই কাজ করছে। ফয়সল উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামের রেজাউল মিয়ার ছেলে। এ প্রতিবেদক তার ছবি তুলতে গেলে সে দৌড়ে চলে যায়। শুধু ফয়সলই নয়, পরিবারের জন্য দুমুঠো অন্ন যোগানোর কাজে সহযোগিতার জন্য এমন অনেক শিশুরাই যাদুকাটা নদীতে কয়লা কুড়ানোর কাজ করছে। এসব শিশুদের অভিভাবকরা জানান, এই উপজেলায় কর্মসংস্থানের সব পথই বন্ধ হয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকাটাই তাদের জন্য এখন সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তারা প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন, যেন যাদুকাটা নদীতে ভেসে আসা কয়লা কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহে কোন রকম বিধি-নিষেধ আরোপ করা না হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App