×

মুক্তচিন্তা

এই নিষ্ঠুরতার লক্ষ্য কী?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২০, ০৯:০৯ পিএম

রাজধানীতে আগুন সন্ত্রাসের বিভীষিকার ঘটনায় নগরবাসীদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। ২০১৩-১৪ সাল এবং ২০১৫ সালের আগুন সন্ত্রাসের ঘটনায় এখনো ভাবায়। মাঝে কিছুদিন স্বাভাবিক থাকলেও বৃহস্পতিবার আবারো দেখতে হলো এমন বর্বর ঘটনা। মাত্র চার ঘণ্টার ব্যবধানে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ১২টি গাড়িতে আগুন দেয়া হলো। স্বস্তির বিষয় হলো, কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু দেশের সম্পদ তো নষ্ট হয়েছে। এই করোনাকালে মানুষ যখন নানা ধরনের দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে, ঠিক তখন এ ধরনের ঘটনায় মানুষ আতঙ্কিতবোধ করবে, এটাই স্বাভাবিক। এই বিরামহীন সন্ত্রাস, এই নিষ্ঠুরতার আসল লক্ষ্যটা কী? পুলিশ বলছে, বাস ও যাত্রীদের টার্গেট করে যানবাহনে আগুন লাগানোর এ ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। হঠাৎ বাসে আগুন দেয়ার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগুনের ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। বাসে আগুনের ঘটনায় গানপাউডার ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে। এরই মধ্যে ঘটনাস্থল থেকে জব্দ আলামত পরীক্ষা করে গানপাউডার থেকে আগুন ধরানোর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন পুলিশের বিস্ফোরক ও বোমা বিশেষজ্ঞরা। পুলিশ আরো জানিয়েছে, বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় তারা একাধিক ভিডিও ফুটেজ পেয়েছে। ইতোমধ্যে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে অনেককে আটক করা হয়েছে, মামলাও করা হয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে। অতীতের আগুন-সন্ত্রাসের কথা দেশবাসী ভুলে যায়নি। কীভাবে নিরপরাধ মানুষদের পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য বিএনপি-জামায়াত চক্র জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি শুরু করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য যখন বিচার শুরু হয় তখনই এই ধ্বংসাত্মক রাজনীতি শুরু হয়। সে সময় ৪১৯টি ঘটনায় ১৫ জন পুলিশ সদস্যসহ নিহত হন ৪৯২ জন, আহত আড়াই হাজারের কাছাকাছি। ২০১৪-১৫ সালে দেশজুড়ে আগুন-সন্ত্রাস দেখেছে এই দেশের মানুষ। অনেক নারী-পুরুষ ও শিশু হতাহত হয়েছিলেন। এ নিয়ে রাজনৈতিক বিতণ্ডা হলেও কারা ওই সব নাশকতা ঘটিয়েছিল, তা দেশেবাসীর কাছে পরিষ্কার ছিল। তখন ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা এসব নাশকতা ঘটিয়েছেন। আবার বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, সরকারি দলের লোকজন কর্মসূচি বানচাল করতে এসব করেছে। স্বস্তির কথা যে আমরা রাজনীতির সেই অন্ধকার পর্ব পার হয়ে এসেছি। বৃহস্পতিবারের ঘটনায় রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ শুরু হয়েছে। একে অপরে দোষারূপ করা হচ্ছে। ১২টি বাসে আগুনের ঘটনায় ১৩টি মামলা হয়েছে। বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার হয়েছে। আমরা চাইব, পুলিশ মামলাগুলো যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসুক। দেশের এমন দুঃসময়ে আমরা সামাজিক স্থিতিশীলতা দেখতে চাই। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মূল ভূমিকা পালন করতে হবে। বৃহস্পতিবারের ঘটনার প্রকৃত মোটিভ উদঘাটিত হবে। দায়ীরাও কোনোভাবে যেন ছাড় না পায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App