×

মুক্তচিন্তা

বাংলাদেশের প্রতারক বিশ্বখ্যাত হয় না কেন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২০, ০৮:৩৪ পিএম

প্রায় সাত-আট লাখ টাকার জন্য ভিক্টর লাস্টিগ পৃথিবীতে সেলেব্রিটি, প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা নিয়েও পি কে হালদার এতো অচেনা, এতো উপেক্ষিত কেন? কারণ ওটা তো পিনাট! দুর্ভাগ্য বাংলাদেশেরই, চারদিকে বিপুল সংখ্যক প্রতারক। কিন্তু তাদের একজন বিশ্ববিখ্যাত নন। কেউ হতে পারেনি ভিক্টর লাস্টিগ, কেউ হতে পারেনি ফ্রাঙ্ক অ্যাবাগনেল, কেউ হতে পারেনি এমনকি নটবরলাল। কাউকে নিয়ে একটা উপন্যাস দূরে থাক একটা গল্পও ছাপা হয়নি, কাউকে নিয়ে একটা পূর্ণ দৈর্ঘ্য সিনেমা দূরে থাক, পাঁচ মিনিটের একটা ডকুমেন্টারিও তৈরি হয়নি। দুর্ভাগ্য তাদেরই, এমন পোড়ার দেশে জন্মগ্রহণ করেছে চার-পাঁচ হাজার কোটি টাকা এপথে ওপথে দেশের সীমানা পার করে দিলেও কেউ বলে না- এসব কী হচ্ছে- এটা মগের মুল্লুক নাকি, বড়জোর বলে, ধ্যাৎ ও কিছু না, জাস্ট পিনাট। যে দেশের হর্তাকর্তারাই দু’আনা মূল্য দেন না- বিদেশিরা কেমন করে তাদের মাথায় তুলে ধেই ধেই করে নাচবে। স্ক্যামার, কন ম্যান, ব্যাংকের এমডি, নবাব সলিমুল্লাহ বাহাদুরের নাতি, সরকারের জয়েন্ট সেক্রেটারি প্রধানমন্ত্রীর অফিসের মহাপরিচালক, সাহেদ, সাবরিনা, পাপিয়া, শারমিন কেউই এ দেশে প্রাপ্য গুরুত্ব পাননি। একজন জীবনীকারও তাদের প্রতি সুদৃষ্টি দেন নি। অথচ নটবরলাল, বাড়ির পাশের বিহারের ছেলে, এক সময় তো বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা একটাই ছিল, এক থাকলে আমাদেরও কি কম গর্ব হতো? বলতে পারতাম আমাদের নটবরলাল, তাকে নিয়ে মুম্বাইয়ের ধনী প্রযোজক সিনেমা বানিয়েছে, তার চরিত্রে অভিনয় করেছেন অমিতাভ বচ্চনের মতো বড়মাপের মানুষ, অভিনয় করে ধন্য হয়েছেন। যে তিনজন নারীর নাম নেয়া হচ্ছে যথেষ্ট সুশ্রী হওয়ার পরও কোনো প্রযোজক, পরিচালক বলেননি যে তিনি তাদের কাউকে নিয়ে বায়োপিক বানাবেন। এমনকি সরকারি নীতিমালায় রাষ্ট্রিয় অর্থানুক‚ল্যে ছবি বানাবার টাকা যাদের হাতে আসে সেই নীতিমালায়ও এ ধরনের চরিত্রের চিত্রায়নকে অগ্রাধিকার দেবার গ্যারান্টি দেয়া হয়নি। এমনকি আপামর জনগণের বিপুল সমর্থনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বিদেশি কারাগারে হরেকরকম প্রতারণার দায়ে নিজেকে আটক রাখার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়ে বিদেশি গণমাধ্যমে আরবি উচ্চারণে বাংলাদেশের নাম ফাটিয়েছেন। কিন্তু তার স্বীকৃতি কোথায়? বায়োপিক অগ্রাধিকারে তাদের মতো গণতন্ত্রের বরপুত্রদেরও রাখা হয়নি। তাহলে দেখুন নন্দলালের মুখ দিয়ে ডি এল রায় তো ঠিক কথাটিই বলিয়েছেন : তাহলে এই হতভাগা দেশের হবেটা কি? তবে এটাও মানতে হবে যারা আমাদের এই বিশেষ ক্যাটাগরির ভিআইপিদের সঠিক মূল্যায়ন করতে শেখেননি ইতিহাস তাদেরও ছেড়ে দেবে না। আমি নিশ্চিত কিঞ্চিত বেকায়দায় পড়া এসব বড় মানুষদের কেউ কেউ মনোকষ্টের ভার নামাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পঙ্ক্তিই উচ্চারণ করে চলেছেন : হে মোর দুর্ভাগা দেশ, যাদের করেছ অপমান অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান। মানুষের অধিকারে বঞ্চিত করেছ যারে সম্মুখে দাঁড়ায়ে রেখে তবু কোলে দাও নাই স্থান। অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান। কেবল মধ্যম আয়ের দেশ হবার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা অর্ধশিক্ষিত মানুষে ভরপুর এই দেশে কেউ হতে পারেনি ভিক্টর লাস্টিগ। এমনকি এক দশক পর যে তারও সার্ধশত জন্মবার্ষিকী আসছে, তাকে স্মরণ করার বিন্দুমাত্র আভাস কোথাও নেই। ১৮৯০ সালে জন্মগ্রহণ করা অস্ট্রিয়-হাঙ্গেরিয়ান এই মানুষটি পড়াশোনা থেকে একটি ব্রেক নিয়ে প্যারিসে এলেন, একটু জুয়াটুয়া খেললেন, বাঙালি স্বভাবের এক প্রেমিকের প্রেমিকার সাথে একটু মৌজ করতে গেলে মুখের বাম পাশে ঈর্ষাপরায়ন প্রেমিকের আঘাতে স্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি হল। এই ক্ষতচিহ্নই পরবর্তী সময়ে তাকে শনাক্ত করা সহজ করে দেয়। ১৯২৫-এ এসে শুনলেন আইফেল টাওয়ারের রক্ষণাবেক্ষণে অনেক খরচ- বামপন্থিরা প্রশ্ন তুলছেন লোহালক্কড়ে তৈরি এই টাওয়ারের কি দরকারÑ এতে প্যারিসবাসীর কোন উপকারটা হচ্ছে? সুতরাং এটাকে সরিয়ে নেয়া বরং ভালো। এই সিদ্ধান্তই ভিক্টর লাস্টিগের জন্য হাতিহার হয়ে দাঁড়াল। তখনই তিনি ফরাসি সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপমহাপরিচালক সেজে আইফেল টাওয়ারের কাছাকাছি একটি অফিস বসিয়ে লোহালক্করের প্রকৃত ডিলারদের নিয়ে বৈঠকে বসলেন এবং সৎ ব্যবসায়ীদের একজনের কাছে দাম কম হলেও বেচে দেবার সিদ্ধান্তটি জানালেন। তবে যেহেতু আইফেল টাওয়ার রাখার পক্ষেও একটি জনমত রয়েছে, কাজটি করতে হবে সঙ্গোপনে, কিছুটা রাখঢাক করেই। ভিক্টর তার বৈঠকে উপস্থিত ব্যবসায়ীদের কাছে অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে বিশেষজ্ঞের মতো উপস্থাপন করলেন প্যারিসের জন্য গোথিক ক্যাথিড্রাল কিংবা এলিসি প্রাসাদ সংলগ্ন আর্ক ট্রাম্প অব দ্য স্টার স্থাপনা জরুরি এবং কেন আইফেল টাওয়ার বেমানান এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ কেনো অপ্রয়োজনীয় । বক্তব্য প্রদানের সময়ই উপস্থিত ব্যবসায়ীদের একজন আঁদ্রে পুসোঁকে তিনি বেছে নেন এবং বৈঠকের পর তার সাথে একটি নিভৃত বৈঠকের সময় চ‚ড়ান্ত করেন। ভিক্টর তাকে বোঝাতে সক্ষম হন যে তিনি ঘুষখোর কর্মকর্তাদের একজন, সরকারি কাঠামোতে বেতন এমনিই কম, বাড়তি কিছু না পেলে চলা মুশকিল। আঁদ্রে পুঁসো টাওয়ারের মূল্য ও ঘুষসহ তাকে ৭০ হাজার ফ্রাঙ্ক প্রদান করলেন। তিনি হিসাব করে দেখলেন লোহালক্কর ও ধাতব পদার্থের বিক্রিতে তিনি এর কয়েকগুণ অর্থ তুলে আনতে পারবেন। তার সামাজিক প্রতিষ্ঠাও আরো দৃঢ় হবে। টাকা হাতে পেয়ে দ্রুত অস্ট্রিয়া পালিয়ে গেলেন। ভিক্টর লাস্টিগ নিশ্চিত ছিলেন এনিয়ে কোনো হইচই হবে না। মামলা মোকাদ্দমাও নয়; কারণ ব্যাপারটা বলা আঁদ্রে পুঁসোর জন্য খুব লজ্জার ব্যাপার হবে। বাস্তবিকই তা-ই হলো। অস্ট্রিয়াতে থাকা অবস্থায় তিনি প্যারিসের খবরের কাগজ নিয়মিত পড়তেন, কোথাও আইফেল টাওয়ার নিয়ে তার প্রতারণার কোনো সংবাদ ছাপা হয়নি, অর্থাৎ আঁদ্রে পুঁসো তার বোকামিটা পুরোপুরি হজম করে নিয়েছেন। ভিক্টর সিদ্ধান্ত নিলেন প্যারিসে ফিরে গিয়ে আইফেল টাওয়ার আবার বিক্রি করবেন। ১৯২৫ সালের শেষদিকে অস্ট্রিয়া থেকে প্যারিস ফিরে এলেন এবং একইভাবে টাওয়ার বিক্রির লক্ষ্যে সম্ভাব্য ক্রেতাদের নিয়ে বৈঠক করলেন। কিন্তু এ সময় সন্দিহান একজনের মাধ্যমে পুলিশ ঘটনাটি জেনে যায়। পুলিশ তার কাছে পৌঁছার আগেই তিনি নিউ ইয়র্কেও পথে সমুদ্রগামী জাহাজে তীর থেকে অনেকটা দূওে, তিনি প্যারিস পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। ভিক্টর লাস্টিগের আর একটি আলোচিত প্রকল্প রোমানিয়ান মানি বক্স। অত্যন্ত সুনির্মিত সুদৃশ্য এই বাক্সে যে কোনো নোট প্রবেশ করালে ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে তা অনুরূপ একটি নোট তৈরি করতে পারে যা জাল নোট বলে পৃথিবীর কেউই ধরতে পারবে না। তিনি যে ক্লায়েন্ট গ্রæপকে এই যন্ত্রের ডেমনস্ট্রেশন দিচ্ছিলেন, তারা মেশিনে উৎপাদিত নোট নিয়ে ব্যাংকে যায় এবং ব্যাংক নোট যথার্থ বলে রায় দেয়। ফলে যন্ত্রটির প্রতি আগ্রহ ও চাহিদা বেড়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে তিনি যন্ত্রের ভেতর ভালো নোটই রেখেছেন, ফলে বিশ্বাসযোগ্যতা সৃষ্টি হতে সময় লাগেনি। তিনি ১ হাজার ডলার দামে যন্ত্রটি টেক্সাসের শেরিফের কাছে বিক্রি করে দেন। টাকা উৎপাদন বিঘি্নত হওয়ায় শেরিফ তাড়া করে তাকে শিকাগোতে এসে ধরে ফেলেন। কিন্তু ভিক্টর তাকে বোঝাতে সক্ষম হন যে তিনি যন্ত্রটির অপারেশনে ভুল করেছেন। কষ্ট করে তার কাছে আসার জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে তিনি তাকে বেশকিছু ডলারও দেন। কিন্তু শেরিফ যখন ফিরে এলেন ব্যাংকে তার সদ্য পাওয়া নোটগুলো পাঠিয়ে চিশ্চিত হলেন এগুলো জাল নোট। ভিক্টর আরো কিছু উদ্ভাবনী জালিয়াতির কাজ করেন। একটি ছিল ‘সেইফ ডিপোজিট বক্স’- তিনি এটি ৫০০০ ডলারে বিক্রি করেন। শেষ পর্যন্ত টাকা জাল করার মামলায় শারীরিক চিহ্ন দিয়ে শনাক্ত হয়ে কারাগারে যান এবং অল্পদিনের মধ্যেই পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। কিন্তু ২৭ দিন পর পিটসবার্গে আবার গ্রেপ্তার হন। আদালত তাকে কুড়ি বছরের কারাদণ্ড দেয়। তাকে হাই সিকিউরিটি আলকাত্রাজ প্রিজনে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ১১ মার্চ ১৯৪৭ কারাগারেই তার মৃত্যু হয়। তিনি কাউন্ট ভিক্টর লাস্টিগ নামে পরিচিত ছিলেন। তার কাছের মানুষরা জানতেন তার বাবা মেয়র। তবে ভিক্টর জেলখানায় দেয়া জবানবন্দিতে বলেছেন দারিদ্র্য এবং ক্ষুধার কারণে শৈশব থেকে তাকে প্রতারণা করে আসতে হয়েছে। মোজেসের কাছে আসা টেন কমান্ডমেন্টের মতো কাউন্ট ভিক্টর লাস্টিগের নামে সফল প্রতারণার দশটি কমান্ডমেন্ট চালু আছে। কনফিডেন্স ম্যান বা কল ম্যান হয়ে বিশ্বাস অর্জনের জন্য অবশ্য অনুসরণীয় এই দশ কমান্ডমেন্ট: ১. ধৈর্যশীল শ্রোতা হোন। ২. কখনো বিরক্তি প্রকাশ করবেন না। ৩. অপেক্ষা করুণ রাজনৈতিক মতামত শুনুন এবং সম্মত হোন। ৪. তার ধর্মীয় মতামত শুনুন এবং সহমত পোষণ করুন। ৫. যৌনতার টোকা দিন, অপর পক্ষ আগ্রহী না হলে এ আলাপ ছেড়ে দিন। ৬. অসুস্থতা নিয়ে কোনো আলাপ নয়, যদি না তিনি বলেন। ৭. ব্যক্তিগত বিষয় জানতে উসখুস করবেন না, নিজে থেকেই তিনি বলবেন। ৮. সামান্য অহংকারও করবেন না, নীরবে আপনার গুরুত্ব প্রতিষ্ঠা করুন। ৯. কখনো অপরিচ্ছন্ন ও আনস্মার্ট থকবেন না। ১০. কখনো মাতাল হবেন না। কাউন্ট ভিক্টর লাস্টিগ ‘হ্যান্ডসাম ডেভিল’ নামে খ্যাত হয়েছেন। তাকে নিয়ে ডজনখানেক জীবনগ্রন্থ লেখা হয়েছে। পৃথিবীর সকল প্রধান ভাষায় তাকে নিয়ে নিবন্ধ, ফিচার রচনা করা হয়েছে, তাকে নিয়ে সিনেমা তৈরি হয়েছে। ভিক্টর লাস্টিগ যে টাকায় আইফেল টাওয়ার বিক্রি করেছিলেন তখনকার ফ্রাঙ্ক এবং ভারতীয় মুদ্রার বিনিময় হার হিসাব করলে বাংলাদেশের টাকায় তা আট নয় লাখ টাকার বেশি হবে না। তাতেই তার বিশ^খ্যাতি। তা ছাড়া এ টাকাটা রাষ্ট্রেরও নয়, একজন লোভী ব্যবসায়ীর। একবার ভাবুন আমাদের প্রতারকরা তাদের সাধারণ মেধা দিয়ে চার থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা নিয়ে ভিআইপি সেজে দেশ থেকে বিদায় নিচ্ছেন। কেবল সৃজনশীল প্রতারক হতে না পারার কারণে তারা বিশে^র নজরে আসছেন না। মিথিলেশ কুমার শ্রীবাস্তব ওরফে নটবরলাল ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন, দিল্লির লাল কেল্লা, আগ্রার তাজমহল ও দিল্লির পার্লামেন্ট হাউস বিক্রি করে জাতে উঠেছেন। এমনকি নিজের মৃত্যু নিয়েও অসাধারণ একটি চাতুরি করে গেছেনÑ তার মৃত্যুর ১৩ বছর পর তিনি সত্যি-সত্যিই মারা যান। ফ্রাঙ্ক উইলিয়াম অ্যাবাগনেলের মতো চেক ও ব্যাংক জালিয়াত এখন এফবিআইর প্রশিক্ষক। পি কে হালদার থেকে শুরু করে সাহেদ, পাপিয়া থেকে শুরু করে পাপুল কি সাবরিনা জাতির প্রশিক্ষক নিযুক্ত হলে সম্ভবত আমরা কিছুটা নিরাপদ থাকতামÑ প্রতারণা ঠেকানোর কৌশল তো তারা কমবেশি শেখাতেন। তারাই ভালো করে জানেন রাষ্ট্রের টাকা রাষ্ট্রের হাতে নাইরে ভাই, রাষ্ট্রের টাকা স্ক্যামারের নয় তো। আমাদের জাতীয় প্রতারকরা কবে সৃষ্টিশীল হবেন? কবে শুনব তখনকার সেকেন্ড ক্যাপিটালে নির্মিত লুই আই কানের শ্রেষ্ঠ স্থাপত্যকর্মটিও বিক্রি হয়ে গেছে! আমাদের প্রতারকরা খ্যাতি এড়িয়েও নতুন কোনো প্রতারণা করছেন কিনা কে জানেন!

ড. এম এ মোমেন : সাবেক সরকারি চাকুরে, নন-ফিকশন ও কলাম লেখক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App