×

মুক্তচিন্তা

কৃষকের পাশাপাশি ভোক্তারাও সুফল পাবেন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২০, ০৯:৪১ পিএম

অতি মুনাফালোভী পাইকারি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভোক্তাদের জিম্মি করে পণ্যের দাম বাড়ানোর ঘটনা নতুন নয়। হঠাৎ অস্বাভাবিক দাম বেড়ে অস্থির হয়ে উঠেছে আলু, পেঁয়াজের বাজার, যা সন্দেহাতীতভাবেই উদ্বেগজনক বলে প্রতীয়মান হয়। প্রশ্ন থেকে যায়, কৃষকরা এর সুফল ভোগ করতে পারেন? নাকি মধ্যস্বত্বভোগীদের পোয়াবারো। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য দমনে কঠোর হচ্ছে সরকার। কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে দেশের ৬৪ জেলায় তৈরি হচ্ছে ‘কৃষকের বাজার’। এসব বাজারে কোনো ধরনের খাজনা ছাড়াই সরাসরি কৃষিপণ্য বিক্রি করতে পারবেন কৃষকরা। এমনকি কৃষকের বাড়ি থেকে বাজারে পণ্য নিয়ে আসতে পরিবহন সহায়তা দেবে সরকার। এই উদ্যোগ সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। জানা গেছে, প্রথমে অস্থায়ী ভিত্তিতে এসব বাজার চালু হবে। এরপর হালকা অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে। পরবর্তীতে স্থায়ী রূপ পাবে এসব বাজার। সিন্ডিকেট ভেঙে পাইকারি ও খুচরা দামের মধ্যে পার্থক্য কমাতে পারলে বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব হবে। প্রতিনিয়ত বাজারের ঊর্ধ্বগতির খবর গণমাধ্যমে আসছে। সরকার খুচরা বাজারে ৩৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও আলু এখনো বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৮ টাকায়। কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। দেশি পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার কাছাকাছি। আকাশচুম্বী শীতকালীন সবজির দাম ৮০ থেকে ১৫০ টাকা। আলু, পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে শুধু নিম্নবিত্ত নয়, সমাজের মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের নাভিশ্বাস চরমে উঠেছে। পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে কারো কারসাজি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা দরকার। পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির হলে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে হতদরিদ্র মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়ে। কাজেই নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতা দূর করার জন্য সময়মতো পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য তথা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি ক্ষেত্রেই সিন্ডিকেটের আস্ফালন লক্ষণীয়। তবে এটা নতুন কিছু নয়, সাংবার্ষিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্য তো বটেই, সেবা খাতেও সিন্ডিকেটের হস্তক্ষেপ প্রকট। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা এ চক্রটি অত্যন্ত শক্তিশালী ও ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। এরা ইচ্ছামতো বাজার নিয়ন্ত্রণ করে অনায়াসে অন্যায্যভাবে বিপুল মুনাফা লুটে নিচ্ছে। আমরা মনে করি, বাজার পরিস্থিতি পাল্টানোর জন্য সবার আগে প্রয়োজন বিক্রেতাদের অসৎ, লোভী ও প্রতারণামূলক মানসিকতার পরিবর্তন। এই পরিবর্তন কবে ঘটবে তার জন্য অপেক্ষা করে নিষ্ক্রিয় বসে থাকলে চলবে না। এর জন্য রাষ্ট্র-সমাজের সচেতন দায়িত্বশীল মহলকে ভ‚মিকা রাখতে হবে। ৬৪ জেলায় কৃষিবাজারের যে উদ্যোগের কথা আমরা শুনছি তা যেন দ্রুত বাস্তবায়ন হয়। কৃষকের পাশাপাশি ভোক্তরা যেন ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্য ক্রয় করতে পারে এমন প্রত্যাশা রাখছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App