×

পুরনো খবর

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়সারা মনোভাব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২০, ১১:৩৫ পিএম

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়সারা মনোভাব
করোনা মহামারির কারণে গত মার্চ মাস থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। মৃত্যুও হচ্ছে অনেক মানুষের। আর তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটিও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া দেশের সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, শপিংমল, দোকানপাট সব আগের মতো স্বাভাবিক নিয়মেই চলছে। মানুষ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছে। দেশের শহরাঞ্চল থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চল স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষের চলাচল করতে খুব কমই দেখা যাচ্ছে। দেশের সবকিছুই যখন স্বাভাবিকভাবে চলছে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেই তালা ঝুলছে। দীর্ঘ সাত-আট মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স-মাস্টার্স ফাইনালের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা আটকে আছে, তারা অনেকাংশে ক্ষতির সম্মুখীন। যদিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সেখানেও এক ধরনের বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসে। তাদের অনেকেরই এই অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ডিভাইস কিংবা ধীরগতির নেটওয়ার্কের কারণে, তাছাড়া দারিদ্র্যও রয়েছে। যদিও ইউজিসি থেকে শিক্ষার্থীদের ডিভাইস ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে নামমাত্র মূল্যে ডাটা দেয়ার ব্যবস্থা করেছে। তবে তা কতটা ফলপ্রসূ হবে তা আমার বোধগম্য নয়। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই টিউশনি করিয়েই নিজের খরচ চালান, কেউ আবার ওই টাকা দিয়ে পরিবার চালান, আর করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, তাই শিক্ষার্থীরা টিউশন হারিয়ে আর্থিকভাবে অসচ্ছল হয়ে পড়েছে। যেসব শিক্ষার্থী অনার্স-মাস্টার্সের শেষবর্ষে শুধু পরীক্ষার জন্য আটকে আছে তাদের মধ্যে দিন দিন হতাশা বাড়ছে। কারণ চাকরির বয়স তো আর করোনার জন্য থেমে নেই। দিন দিন তাদের মধ্যে বেকারত্বের হতাশা বাড়ছে। ইউজিসি স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স-মাস্টার্স ফাইনালের ক্লাস-পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দিয়েছে, তাহলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কী হবে! আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে যাতে শিক্ষার্থীরা ঘরে থাকে, আক্রান্ত না হয় তবে শিক্ষার্থীদের কি ঘরে আটকে রাখা যাচ্ছে! তারা কিন্তু ঠিকই বাইরে ঘোরাঘুরি করছে। নভেম্বরের শেষের দিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার একটা আভাস পাওয়া যাচ্ছে, আর যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের অসমাপ্ত পরীক্ষাগুলো নেয়া উচিত। এরপর ধীরে ধীরে বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যেতে পারে। করোনার টিকা আসবে তারপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে এটা কখনো যুক্তিযুক্ত হবে বলে আমার মনে হয় না। উল্টো এতদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে শিক্ষার্থীদের হতাশা বাড়বে, আর তারা একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হবে। তাই আশা করব কর্তৃপক্ষ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে সুনজর দেবে এবং যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App