×

সম্পাদকীয়

হয়রানি সময়ক্ষেপণ ও দুর্নীতি কমবে আশা করি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২০, ১১:০২ পিএম

লাগামহীন দুর্নীতি চলছে গোটা ভ‚মি খাতে। ভ‚মিসংক্রান্ত আইন, বিধি, জটিলতা, বেচাকেনা, রেজিস্ট্রেশন, নামজারি, খাজনা প্রদানে নানা সমস্যা-সংকট তদুপরি দেওয়ানি মামলার পাহাড় ও দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে প্রায় সর্বস্তরের মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই। নামজারিতে ঘুষ লেনদেন ওপেন সিক্রেট। সরকার নামজারিতে স্বচ্ছতা ও হয়রানি কমাতে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জমির দলিল করার সর্বোচ্চ ৮ দিনের মধ্যে নামজারি হবে। আর দলিল করার আগেই সফটওয়্যারের মাধ্যমে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (এসিল্যান্ড) কার্যালয় থেকে জমির তথ্য জেনে নেবেন সাব-রেজিস্ট্রার। একইভাবে দলিলের পর সেই তথ্য এসিল্যান্ডকে জানিয়ে দেবেন। তখন এসিল্যান্ড নামজারি করবেন। সফটওয়্যার ব্যবহার করে স্বচ্ছতার সঙ্গে জমির রেজিস্ট্রেশন করার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার নামজারি ও রেকর্ড সংশোধন প্রক্রিয়ায় ভ‚মি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল এ বৈঠক হয়। নামজারিতে ডিজিটাল প্রক্রিয়া হলে অনিয়ম-দুর্নীতি অনেকটা কমে আসবে বলে আশা করা যায়। মামলা-মোকাদ্দমা কমে যাবে। এক হিসাবে বাংলাদেশের মামলার মোট ৮৭ শতাংশের মূল কারণ ভ‚মিসংক্রান্ত বিরোধ। এতে মামলাজট তৈরি হয় আদালতে। আর্থিক ক্ষতি হয় সংশ্লিষ্ট সবার। এসব ঝামেলা থেকে মুক্ত হতে ভ‚মি ব্যবস্থাপনায় নতুন কিছু করার চেষ্টা ছিল সরকারের। সেই চেষ্টার যাত্রা শুরু করেছে একটি পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দলিল রেজিস্ট্রেশন, নামজারি এবং আরওআর সমন্বিতভাবে হবে। এতে করে একজনের জমি আরেকজন রেজিস্ট্রি করতে পারবে না। ১৭ উপজেলায় হতে যাওয়া পাইলট প্রকল্পটি সফল হলে দেশব্যাপী চালু হবে এই সেবা। জানা গেছে, দেশের সব এসিল্যান্ড অফিসের ৪ কোটি ৩০ লাখ রেকর্ডস অব রাইটস অনলাইনের আওতায় আসছে। এখন থেকে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস এবং এসিল্যান্ড অফিসের একজন আরেকজনের ডেটাবেজে ঢুকতে পারবে। যখন কেউ জমি রেজিস্ট্রেশনের জন্য যাবে, সাব-রেজিস্ট্রার আগের মতো সঙ্গে সঙ্গে রেজিস্ট্রি করে দেবে না, অনলাইনে এসিল্যান্ডের অফিস থেকে রেকর্ড অব রাইটসের স্ট্যাটাস জানবেন। রেসপনসিভ সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেই তথ্য জানানো হবে। তখন এসিল্যান্ডও জানবেন এ তথ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে পারলে মানুষের হয়রানি কমে যাবে। এটা স্বীকৃত হয়ে আছে যে, ঘুষ ছাড়া কোনো নামজারি হয় না। এ ঘুষের সঙ্গে দালাল থেকে শুরু করে পদস্থ কর্মকর্তাদের একটি অংশ জড়িত। জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি জমি যে কারো নামে এবং একজনের জমি অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করে দেয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে ভ‚মি অফিসের অসাধু কর্মকর্তারা জড়িত। নতুন এই উদ্যোগ সফল হলে ভ‚মিব্যবস্থা আমূল পাল্টে যাবে। পাশাপাশি কমবে অযথা হয়রানি, সময়ক্ষেপণ ও দুর্নীতি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App