×

সারাদেশ

কুড়িগ্রামের আলোচিত বাল্যবিয়ের তদন্ত সম্পন্ন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২০, ০৯:৩৫ পিএম

নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে বাল্য বিয়ে করে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অবশেষে আনুষ্ঠানিক তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ-জান্নাত রুমি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সোমবার (৯ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় উলিপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসারের কার্যালয়ে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিম এর নির্দেশে এ তদন্ত কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানকে তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে নোটিশ প্রদান করা হলেও তিনি কমিটির সামনে উপস্থিত হননি বলে তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান। তবে তদন্ত কমিটি কিশোরীর প্রকৃত বয়স ও বাল্য বিয়ের রহস্য উদঘাটনে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের নিকাহ্ রেজিস্ট্রার নুরুন্নবী খন্দকার, উলিপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ নাদিরুজ্জামান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এরশাদুল আলম হীরা, কিশোরীর চাচা চৌকিদার আবু বক্কর, কিশোরীর বাবা প্রতিবন্ধী ওসমান গনি সরকার বাচ্চু, ইউপি সচিব কাওছার আলীসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার বেশ কয়েকজনের সাক্ষ্য লিপিবদ্ধ করেন। একটি সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটি তাদের মতামত সহ রিপোর্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানোর পর অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হবে। উল্লেখ্য, জেলার উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের দোলন গ্রামের হতদরিদ্র প্রতিবন্ধি ওসমান গনি সরকার বাচ্চুর ৯ম শ্রেণীতে পড়ুয়া বকসীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোছাঃ বর্ণিতা ওসমান বর্ণী (১৪) এর উপর বেশ কিছুদিন আগ থেকে লুলুপদৃষ্টি পড়ে বুড়াবুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকারের। প্রায় ৩ মাস আগে ওই কিশোরীকে নিয়ে চেয়ারম্যানের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের একটি ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে বিপাকে পড়েন তিনি। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ধুরন্ধর ওই চেয়ারম্যান, তারই ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আজিজুল হকের সহযোগিতায় কিশোরীর চাচা চৌকিদার আবু বক্করকে ম্যানেজে নিয়ে তাড়াহুড়ো করে কাজী ডেকে বিয়ে রেজিস্ট্রি করান বলে জনশ্রুতি পাওয়া যাচ্ছে। অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দায় এড়াতেই ওই চেয়ারম্যান দরিদ্র পরিবারটিকে আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে বেআইনি বাল্যবিয়েতে রাজি হতে বাধ্য করে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে বর সেজে বধু বেশে ঢাকঢোল পিটিয়ে চেয়ারম্যান নবম শ্রেণী পড়ুয়া ওই কিশোরীকে বিয়ে করে আনেন। বাল্য বিয়ের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হলে ভোরের কাগজসহ জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হলে প্রশাসনের টনক নড়ে। চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকারের বর্তমানে এক স্ত্রী ও কলেজ পড়ুয়া এক কন্যা সন্তান রয়েছে। এছাড়াও আরো একটি বিয়ে করেছিলেন তবে সেটা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি বলে এলাকাবাসী জানান। বকসীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুজ্জামান বলেন, ওই শিক্ষার্থী আমার স্কুলের মানবিক বিভাগের ৯ম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত। তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ- জান্নাত রুমি বলেন, অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অচিরেই আইনি প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হবে, আপনারা সব দেখতে পাবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App