চন্দ্রগঞ্জে আ.লীগের দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন কর্মসূচি
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২০, ০৬:৪৪ পিএম
ছবি: প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরে স্কুলছাত্র শিমুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তার আসামি স্থানীয় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি তাজুল ইসলাম ভূঁইয়াকে নিয়ে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান বিরাজ করছে। রবিবার (৮ নভেম্বর) স্থানীয় চন্দ্রগঞ্জ পশ্চিম বাজারে বেলা ১১টায় ও দুপুর ১টায় পৃথক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয় দলের দুই পক্ষ থেকে। এ নিয়ে ওই এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল স্থানীয় বিএনপি সমর্থিত শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও নাছির বাহিনীর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চন্দ্রগঞ্জের পশ্চিম লতিফপুরে ও দেওপাড়া গ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষ এবং পাল্টাপাল্টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় নাছির বাহিনীর সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালায় জিসান বাহিনী। এতে হামলা ও অগ্নিসংযোগে অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত হয় প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের তৎকালীন ৮ম শ্রেণির ছাত্র ও চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক কাজী বাবলুর ভাগিনা শিশুছাত্র রবিউল আউয়াল শিমুল। পরে এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা করেন কাজী বাবলু। এরপর লক্ষ্মীপুর থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের পৃথক দুই তদন্তকারী কর্মকর্তা দু’বারই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আদালতে। কিন্তু বাদির আবেদনের প্রেক্ষিতে তৃতীয় দফায় মামলাটি পিবিআইকে তদন্তভার দেয় আদালত। পিবিআই ওই মামলার তদন্ত শেষে ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। সম্প্রতি ওই প্রতিবেদনের আলোকে ৪ নম্বর আসামি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি তাজুল ইসলাম ভূঁইয়াকে র্যাব গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। এ নিয়ে তাজুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের একাংশকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুব ইমতিয়াজ হোসেন প্রমুখ। বক্তারা তাজুকে নির্দোষ ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় তাকে হত্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে দাবি করে অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান। এ সময় বক্তাদের মধ্যে কেউ কেউ ছাত্রলীগ নেতা ও মামলার বাদি কাজী বাবলুকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে মামলা ও হত্যার মূল রহস্য উৎঘাটনের দাবি জানান।
একইদিন একইস্থানে সর্বস্তরের জনগণের ব্যানার নিয়ে শিশু হত্যার বিচার দাবিতে পাল্টা মানববন্ধন করা হয়। এসময় স্থানীয় চন্দ্রগঞ্জ থানা ১৪ দলীয় জোটের আহ্বায়ক ছাবির আহমেদ, আওয়ামীলীগ নেতা মুনছুর আহমদ ও ছাত্রলীগ কাজী বাবলুসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে মামলার বাদি ও ছাত্রলীগ নেতা কাজী বাবলু দাবি করেন- ২০১৪ সালে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সময় তাজুল ইসলাম ভূঁইয়া বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং জিসান বাহিনীর সদস্য ছিলেন।
এ সময় তাজুল ইসলাম ভূঁইয়াকে খুনি ও বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারী অভিযোগ তুলে পিবিআই’র প্রতিবেদনের আলোকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দাবি করে তাজুসহ সব খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।