×

আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প-বাইডেনের ফলাফল উল্টে দিয়েছে জোরগেনসেন!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২০, ০৫:১৯ পিএম

ট্রাম্প-বাইডেনের ফলাফল উল্টে দিয়েছে জোরগেনসেন!

লিবারটারিয়ান প্রার্থী জো জোর্গেনসেন/ছবি: ইন্টারনেট।

ব্যাটলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্য হিসেবে পেনসিলভানিয়া ও জর্জিয়াতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে যেভাবে তীব্র ভোটযুদ্ধ চলছে, সেখানে জো জোর্গেনসেন দুজনেরই ‘পথের কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। পেনসিলভানিয়াতে ৭৭ হাজার ১১৬ ভোট পেয়েছেন তিনি, যা মোট ভোটের ১ দশমিক ১ শতাংশ। জর্জিয়াতে পেয়েছেন ৬১ হাজার ৬৭২ ভোট, যা মোট ভোটের ১ দশমিক ২ শতাংশ। এই দুই অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্পের চেয়ে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন।

সিএনবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জো জোর্গেনসেন যদি এ ভোট না পেতেন, তবে ফলাফল ভিন্ন হতে পারত। তিনি বড় দুই প্রার্থীর ভোট কেড়েছেন বলে কথা উঠছে। কিন্তু জো জোর্গেনসেন এ কথায় ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন। তাঁরবি ভাষ্য, তৃতীয় পক্ষের কোনো প্রার্থী অন্য কোনো দলের ভোট কেড়ে নেয় না। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসিকে জো জোর্গেনসেন বলেছেন, ‘আমি একে ভোট কেড়ে নেওয়া হিসেবে বিবেচনা করি না। এগুলো মার্কিন নাগরিকদের দেওয়া ভোট।’

এবারের মার্কিন নির্বাচনে জো জোর্গেনসেন (৬৩) লিবারটারিয়ান পার্টির নারী প্রার্থী হিসেবে ইতিহাস গড়েছেন। ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক জো জোর্গেনসেন দুই সন্তানে মা। তিনি ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড অর্গানাইজেশনাল সাইকোলজিতে পিএইচডি ডিগ্রিধারী।

জো জোর্গেনসেনের প্রচার শিবিরের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ১৭ লাখ ২৪ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন লিবারটারিয়ান পার্টির এ প্রার্থী। জোর্গেনসেন মনে করেন, ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকানদের মতো বড় দলগুলো যে ভোট কেড়ে নেওয়ার কথা বলছে, তা তাদের দাম্ভিকতা মাত্র। তিনি আরও বলেন, ‘এটি সত্য যে তৃতীয় পক্ষের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা নির্বাচন নির্ধারণে সহায়তা করতে পারে।’

এর আগে ২০১৬ সালের নির্বাচনে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে গ্রিন পার্টির প্রার্থী জিল স্টেইন ও লিবারটারিয়ান পার্টির প্রার্থী গ্যারি জনসন কয়েকটি সুইং অঙ্গরাজ্যে উল্লেখযোগ্য ভোট পেয়েছিলেন। মিশিগানের মতো অঙ্গরাজ্যে, যেখানে হিলারি ক্লিনটনের জেতা জরুরি ছিল, সেখানে তাঁরা ২ লাখ ২২ হাজার ৪০০ ভোট পেয়েছিলেন। হিলারি মিশিগানে ট্রাম্পের কাছে ১০ হাজার ৭০৪ ভোটে হেরেছিলেন। ফ্লোরিডাতেও তৃতীয় পক্ষের প্রার্থীরা ২ লাখ ৯৩ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। সেখানে হিলারি ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৭০ ভোটে হেরেছিলেন।

জো জোর্গেনসেন আশির দশকে লিবারটারিয়ান পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে তিনি দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হন। জোর্গেনসেন বলেন, ‘লিবারটারিয়ানের গবেষণা অনুযায়ী, ঐতিহাসিকভাবেই দলটি বড় দুই দল থেকে ভোট টানে। রিপাবলিকানদের কাছ থেকে কিছুটা বাড়লেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সমান সমান হতে দেখা যায়।

https://twitter.com/Jorgensen4POTUS/status/1323665355630366720?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1323665355630366720%7Ctwgr%5Eshare_3&ref_url=https%3A%2F%2Fwww.prothomalo.com%2F

জো জোর্গেনসেন দাবি করেন, ‘দলের অধিকাংশ ভোটার এসেছেন স্বাধীনভাবে। আগে যাঁরা কখনো ভোট দেননি, তাঁরা এবার লিবারটারিয়ানকে বেছে নিয়েছেন। এ বছরের নির্বাচনের পুরো চিত্র এখনো পরিষ্কার হয়নি।’ তবে ইউএসএ টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘তাঁর দলের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা লোকদের ৭০ শতাংশই নিবন্ধিত ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকান।’

লিবারটারিয়ান পার্টি ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত। দলটির ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দলটি জনগণের ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তগুলোয় যেকোনো ধরনের সরকারি হস্তক্ষেপের বিরোধী। এটি সরকারের আকার ও হস্তক্ষেপকে পর্যাপ্ত পরিমাণে কমানো এবং কর কমানো, এমনকি তুলে দেওয়ার পক্ষে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আর জো বাইডেনের বাইরেও এবারের নির্বাচনী লড়াইয়ে আরও ১ হাজার ২১৪ জন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আছেন। তাঁরা তেমন আলোচনায় না থাকলেও ট্রাম্প-বাইডেনের ভোট নষ্টে ভূমিকা রাখতে পারেন বলে আগে থেকেই আলোচনা হচ্ছিল। দ্য গার্ডিয়ানের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে জো জোর্গেনসেন ছাড়াও গ্রিন পার্টির হাউয়ি হকিংস ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৪ ভোট পেয়েছেন। অন্যান্য দলের প্রার্থীরা মিলে ৩ লাখ ৮১ হাজার ৭৭৭ ভোট পেয়েছেন। তবে তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচনা হচ্ছে জো জোর্গেনসেনকে ঘিরেই।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে নিজের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের এ জ্যেষ্ঠ প্রভাষক। তবে নির্বাচন নিয়ে তাঁর চাওয়া-পাওয়া বেশি কিছু নয়। সিএনবিসিকে জোর্গেনসেন বলেছেন, কে জিতবে, তাতে সত্যিই তাঁর কিছু যায়-আসে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App