×

মুক্তচিন্তা

প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২০, ১০:৫১ পিএম

প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন

সশ্রদ্ধ সালাম নিবেন। আপনি জানেন বিগত ২০১২ সাল থেকে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ’ নামের ব্যানারে যৌক্তিকভাবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর পর্যন্ত করার দাবিতে আপনার সুদৃষ্টি আকর্ষণে আমরা মাঠে, রাস্তায়, রোদ-বৃষ্টিতে আইনের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা রেখে শান্তিপূর্ণ ও অহিংসভাবে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন, অনশনসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছি, নানা রকম হুমকি-ধমকি ও জেল খেটেছি। নবম ও দশম জাতীয় সংসদে অসংখ্যবার দাবির পক্ষে প্রস্তাব উঠার পাশাপাশি বিগত জনপ্রশাসনের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও কয়েকবার সুপারিশ করেছে। আপনার একাদশ জাতীয় নির্বাচনী ইশতেহারেও ছিল বয়স বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি। আপনি জানেন নিয়োগ স্বল্পতার পাশাপাশি আমরাই ভয়াবহ সেশনজটের কবলে ছিলাম। সর্বশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রায় তিন বছর সব নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। এরই ভেতরে অবসরের বয়স ২ বছর বৃদ্ধি এবং ডিগ্রি ও অনার্স কোর্সের পরিধি ১ বছর বর্ধিত করা হয়েছে যা কারো অজানা নয়। এসব প্রতিবন্ধকতা বারবার আমাদের চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ সঙ্কুচিত করেছে।

অস্বীকার করার সুযোগ নেই, যে কোনো দাবিতে দেশের জনসাধারণের কোনো মহলকেই আপনি অসুখী রাখেননি। সব শ্রেণির প্রতিই রয়েছে আপনার সুদৃষ্টি ও মমতাময়ী আচরণ। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে আজ পর্যন্ত শুধু আমরাই অবহেলিত, বঞ্চিত ও উপেক্ষিত রয়েছি। সময়মতো যদি আমাদের দাবির পুরোটা না হোক কিছুটা সময় বর্ধিত করেও দিতেন তাহলে হয়তো এতদিনে আমাদের অনেকের ভবিষ্যৎটা বদলে যেত। সরকারপ্রধান নয় বরং একজন মমতাময়ী মা হিসেবে একবার হৃদয়ের গভীর থেকে ভাবেন, অনুধাবন করেন আমরা কতটা কষ্টে থাকতে পারি! পরিবার, মা-বাবা, সমাজ, বিয়েশাদি, সংসার নিয়ে সত্যিই আমরা খুবই কষ্টে ও বিপাকে রয়েছি। এই বাস্তবতাটুকু যদি আপনার মতো একজন যোগ্য দেশকর্তাই না বুঝেন তাহলে আমরা যাব কোথায়?

চলতি বছরে বৈশ্বিক মহামারি করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে একটা নির্দিষ্ট সময় থেকে সব নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় গত ২৫ মার্চ যাদের বয়স ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে সুযোগ হিসেবে তাদের জন্য সব চাকরির আবেদনে পরবর্তী ৫ মাস ছাড় দিয়েছেন। এতে মুষ্টিমেয় ক্ষতিগ্রস্তরা নিঃসন্দেহে উপকৃত হয়েছে যা সত্যিই তাদের অধিকার। এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই আপনার নীতি, আদর্শ ও সুবিচারের আরো একটি উদাহরণ। আমরা সবসময় বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি করলেও আমরা যারা ভুক্তভোগী, ক্ষতিগ্রস্ত তাদের অনেকের বয়স আজ ৩৭ বছর ছুঁইছুঁই। আমরা সত্যিই আজ বড় অসহায় ও নিরুপায়। তাই দয়া করে দ্রæতই করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের মতো (প্রকৃত ভুক্তভোগীদের বয়স ৩৪ থেকে ৩৭ পর্যন্ত বা ক্ষতিগ্রস্তদের চিহ্নিত করে) আমাদেরও কমপক্ষে ১ বছর বা ন্যূনতম সময়ের একটা সুযোগ দিন। তাহলে আমরাও সব সাধারণ ও কারিগরি পদে মুষ্টিমেয় কিছু প্রার্থী আবেদন করতে পারব। তবুও যদি দয়া না করেন তাহলে আজ বা কাল হোক প্রজাতন্ত্রের কর্মে প্রবেশের বয়স বাড়বে সেদিন হয়তো আপনিও থাকবেন না আর আমরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিতই থাকব। শুধু আফসোস আর হাহাকার আমাদের ছেয়ে যাবে। পরিশেষে আপনার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল, সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

সভাপতি বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ, ঢাকা।

[email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App