×

মুক্তচিন্তা

এখনো ডেঙ্গু : মশা নিধন জোরদার করুন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২০, ১০:৫৯ পিএম

এখনো ডেঙ্গু : মশা নিধন জোরদার করুন

রাজধানীতে ডেঙ্গুর আগ্রাসন বাড়ছে। অক্টোবরেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩৮ জন। মূলত সেপ্টেম্বরে শেষ হয় ডেঙ্গুর মৌসুম, কিন্তু এ বছর বর্ষা প্রলম্বিত হওয়ায় অক্টোবরেও বিপুলসংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এ বছর নভেম্বরেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। করোনাকালে যাতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব না ঘটে সে বিষয়ে দুই সিটি করপোরেশন এ বছর বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করে। কিন্তু বর্ষা মৌসুম অক্টোবরের শেষদিন পর্যন্ত প্রলম্বিত হওয়ায় এডিস মশার দৌরাত্ম্য থামানো যায়নি। তবে মশা নিধন কার্যক্রম গত বছরের তুলনায় বাড়ায় এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা কম।

গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা এর আগের সব বছরের রেকর্ড ছাড়িয়েছিল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে ২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন। সরকারি হিসাবে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৭৯ জন।

গত বছর ডেঙ্গু জ্বরের ব্যাপক প্রকোপের কারণগুলো খতিয়ে দেখতে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের গাফিলতি ছিল ডেঙ্গুর প্রকোপ এত বেশি হওয়ার আংশিক কারণ। দুর্ভাগ্যের বিষয়, তাদের সেই গাফিলতি এ বছরও দূর হয়নি। তাদের মশা নিধন কার্যক্রম যেন ঢিমেতালে এক মৌসুমি কাজ। মশার উপদ্রবে নগরবাসীর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও তাদের টনক নড়ে না। গত বছর ডেঙ্গু জ্বরে অনেক মানুষের মৃত্যু হলে যখন প্রচণ্ড শোরগোল উঠেছিল, তখনই কেবল তাদের টনক কিছুটা নড়েছিল। কিন্তু ডেঙ্গুর মৌসুম শেষ হলেই তাদের মশা নিধন কার্যক্রমে শিথিলতা দেখা দেয়। এ কাজে তাদের অব্যবস্থাপনা-অনিয়মের অভিযোগও অনেক পুরনো।

মশার লার্ভা মারার ওষুধের অকার্যকারিতা, ওষুধ ছিটানোর যন্ত্র নিম্নমানের বলে অচিরেই নষ্ট হয়ে যাওয়া- এসব অভিযোগের প্রতিকার হয়নি। দেশের পুরো চিকিৎসাব্যবস্থা যখন করোনা মহামারির কবলে পড়ে খাবি খাচ্ছে, সেই সময়ে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ শুরু হলে তা হবে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। সুতরাং সারা মহানগরের এডিস মশা ধ্বংস করতে হবে। মহানগরের বিভিন্ন স্থান জীবাণুমুক্ত করার পাশাপাশি মশক নিধনের কার্যক্রম আরো জোরদার করা হোক। প্রতি বছরই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বাস দেয়, অতীতের অভিজ্ঞতা নিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। ডেঙ্গুর বাহক- এডিস মশা ধ্বংসে আগাম ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ডেঙ্গু নির্মূল অভিযান অবশ্যই কেন্দ্রীয়ভাবে পরিকল্পনা ও পরিচালনা করা উচিত। একই সঙ্গে জনসচেতনতা এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কর্তৃপক্ষের অবশ্যই এটি নিশ্চিত করতে হবে।

মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষাবিদ, ঢাকা। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App