×

সারাদেশ

সারাদেশে গণঅবস্থান-বিক্ষোভ মিছিল ৭ নভেম্বর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২০, ০৫:২৭ পিএম

সারাদেশে গণঅবস্থান-বিক্ষোভ মিছিল ৭ নভেম্বর

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ-খৃস্টান ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। ছবি: প্রতিনিধি

ধর্ম অবমাননার জিগির তুলে দিনাজপুর-কুমিল্লাসহ বিভিন্ন এলাকায় মধ্যযুগীয় বর্বরতায় পিটিয়ে-পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, হিন্দু ধর্মীয় পরিবারের ওপর আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন-হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। সেই সঙ্গে আগামী ৭ নভেম্বর সারাদেশে গণঅবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ওই দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই গণঅবস্থান কর্মসূচি ঢাকার শাহবাগ চত্বর ও চট্টগ্রামের নিউমার্কেট চত্বরসহ সারাদেশের জেলা, উপজেলা, মহানগর ও বিভাগীয় সদরের মূল সড়ক সংযোগস্থলে অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘ফ্রান্সের ঘটনাকে পুঁজি করে সাম্প্রদায়িক শক্তি বাংলাদেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অভিসন্ধির বাস্তবায়ন করছে। দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই সেখান থেকে ফিরে আসতেই এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।’

ধর্ম অবমাননার জিগির তুলে দিনাজপুরের পার্বতীপুর ও কুমিল্লার মুরাদনগরের সংখ্যালঘু এলাকায় আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন, শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিলের অপ্রয়াস, অধ্যাপক কুশল চক্রবর্তীকে হত্যার হুমকি, ধর্মপ্রাণ শহিদুন্নবীকে পিটিয়ে পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলন থেকে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন, গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের মুক্তি, শো-কজ নোটিশ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

বিদ্যমান সংখ্যালঘু পরিস্থিতি তুলে ধরে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ভেবেছিলাম করোনাভাইরাস মহামারী সমাজকে অনেক বেশি মানবিক করবে। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, বিগত ৮ মার্চের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেখে মনে হয় সমাজের মানবিকতা অনেক বেশি নিম্নগামী হচ্ছে। একদিকে নারী, আরেকদিকে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে টার্গেট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ধর্মকে হেয় করে, তাদের ধর্মানুভূতিতে প্রতিনিয়ত আঘাত করে নানান অপপ্রচার বল্গাহীনভাবে চালানো হচ্ছে। এরমধ্য দিয়ে তৃণমূলে সাম্প্রদায়িকতাকে অনেক বেশি প্রোথিত করে চলেছে। অথচ সরকার-প্রশাসন এক্ষেত্রে রহস্যজনক নীরবতা পালন করে চলেছে। এহেন সামগ্রিক পরিস্থিতিতে আমরা শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন।’

মার্চ-সেপ্টেম্বর ৭ মাসের পরিসংখ্যান দিয়ে রানা দাশগুপ্ত বলেন, চলতি বছরের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাত মাসে ১৭ ব্যক্তি সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয়ে মারা গেছেন। হত্যাচেষ্টার শিকার ১০ জন। হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে ১১ জনকে। ধর্ষণ, গণধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার ৩০ জন। ধর্ষণ চেষ্টার শিকার ৩ জন। শ্লীলতাহানির কারণে আত্মহত্যা ৩ জনের। অপহরণ ২৩ জন। নিখোঁজ ৩ জন। প্রতিমা ভাঙচুর ২৭টি। মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ২৩টি। শ্মশান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি দখলের ঘটনা ৫টি। শ্মশান দখলের চেষ্টা করা হয়েছে ৭৩ বার, বসতভিটা, জমিজমা ও শ্মশান থেকে উচ্ছেদের ঘটনা ২৬টি। দেশত্যাগের হুমকি ৩৪ জনকে। গ্রামছাড়া ৬০ পরিবার।

এছাড়া জোরপূর্বক ধর্মান্তর করা হয়েছে ৭ জনকে। মহানবীকে (স.) কটূক্তির মিথ্যা অভিযোগে আটক করা হয়েছে ৪ জনকে। ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তিথি সরকার ২৮ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ উল্লেখ করে অনতিবিলম্বে তাকে উদ্ধারের পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App