×

সম্পাদকীয়

রাজস্ব আয়ের বাস্তবতা ও করণীয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২০, ১০:৫৯ পিএম

মহামারি করোনা ভাইরাসে অনেকটাই থমকে গেছে দেশের অর্থনীতি। স্বাভাবিকভাবে এর প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আদায়ের ওপর। প্রত্যাশা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না বলে ঘাটতি বেড়েই চলেছে। মহামারিকালে মানুষের আয়-উপার্জন কম। ব্যবসা-বাণিজ্য কমে গেছে। আমদানিও কম। তাহলে ট্যাক্স আসবে কোত্থেকে? দোকানপাটে বিক্রি নেই, ফলে ভ্যাট আদায়ও কম। মোটা দাগে পুরো অর্থনীতি-ব্যবসা-বাণিজ্যের দীর্ঘমেয়াদি স্থবিরতায় সরকারের আয় বা রাজস্বে রীতিমতো খরা চলছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে, যা আমাদের জন্য সুখকর হবে না। জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের প্রধান খাত হিসেবে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে ভ্যাট আদায় হয়েছে ১৮ হাজার ১১১ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রথম ৩ মাসে রাজস্ব আয়ের প্রধান খাত ভ্যাট আদায়ে ঘাটতি ৫ হাজার ৮৫ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভ্যাট আদায়ে প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ১৯ শতাংশ। রাজস্ব আদায়ের আয়কর ও আমদানি-রপ্তানিতে গতি ফিরতে শুরু করলেও বেহালদশা ভ্যাট আদায়ে। লাখ লাখ প্রতিষ্ঠান রাজধানীতে ব্যবসা করলেও ভ্যাট নিবন্ধন হাতেগোনা। যার কারণে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেশি হলেও আদায় কম। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার-আয়তন, বাণিজ্যসহ অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত আমলে নিলে নির্দিষ্ট রাজস্ব আহরণ কঠিন কিছু নয়। পরিকল্পিত উদ্যোগ নিলে ঘাটতি পূরণ সম্ভব। সরকারের লক্ষ্য ছিল ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলে আয় বাড়বে। কিন্তু ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলেও লক্ষ্যমাত্রার উন্নতি নেই। এতে ভ্যাট আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তা আদায় কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে এনবিআরের জন্য। এমনি পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড করের আওতা বাড়ানোসহ নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তবে এসব পরিকল্পনা খুবই শ্লথ গতির। ২০২১ সালে আমাদের লক্ষ্য মধ্যম আয়ের দেশের সারিতে পৌঁছানো। এ জন্য অপরিহার্য শর্ত- জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ থেকে ৮ শতাংশ নিশ্চিত করা। বিনিয়োগ বাড়াতে পারলেই কেবল এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। রাজস্ব আয় বাড়ানো এর শর্ত। এক্ষেত্রে সর্বাগ্রে দরকার করবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি। সেখানে রাজস্ব প্রদানে সেবা নিশ্চিত, অনুকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আইন-কানুন সময়োপযোগী করা গুরুত্ব পাবে। পরিকল্পনাজনিত সমস্যা তো রয়েছেই, সঙ্গে রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক নানা জটিলতা। আছে দুর্নীতির অভিযোগও। এসব বিষয়ে সরকারকে আরো জোরালো ভূমিকা নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App