×

জাতীয়

মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা কবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২০, ০৯:৩১ এএম

মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা কবে

ফাইল ছবি

অন্যান্য বছর এই সময় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের প্রিটেস্ট ও টেস্ট পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এবার তা কবে হবে বা আদৌ হবে কি না তা এখনও বলছেন না সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা। এরফলে অনিশ্চয়তায় পড়েছে লাখ লাখ পরীক্ষার্থী। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে মাধ্যমিকে প্রায় ২০ লাখ এবং উচ্চ মাধ্যমিকে প্রায় ১৮ লাখ পরীক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ভিন্ন কোনো মূল্যায়নের মাধ্যমে এই পরীক্ষায় ছাড় দেয়া হবে না। টেস্ট পরীক্ষা হবে। কিন্তু কিভাবে এই পরীক্ষা নেয়া হবে তা নিয়ে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে মন্ত্রণালয়। এর ফলে শিক্ষার্থীদের অনিশ্চয়তা আরো বেড়েছে। এরকম আবহে আজ রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এরপর সাপ্তাহিক অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা হবে। করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি বলেছিলেন, টেস্ট পরীক্ষা কিভাবে নেয়া যায় সে বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ভাবছে। যদি কোনো কারণে টেস্ট পরীক্ষা না হয়; সেক্ষেত্রে কি দশম ও দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত সবাই ২০২১ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেবে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, না, এমন সুযোগ নেই। অবশ্যই তাদের একটা এসেসমেন্ট হবে। এসেসমেন্টটা কিভাবে হবে তা পরবর্তীতে জানিয়ে দেয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী। তবে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, শুধু টেস্টই নয়, আগামী বছর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সময়মতো হবে কিনা তা নিয়েও চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। সেই সঙ্গে পরীক্ষায় পাঠ্যক্রম কিছুটা কমানো হবে কি না, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। শিক্ষার্থীরা বলেছেন, প্রায় আট মাস ধরে স্কুল বন্ধ। অনলাইনে কিছু কিছু ক্লাস হলেও মফস্বলে ইন্টারনেট সার্ভিস খুবই দুর্বল। একইসঙ্গে বহু শিক্ষার্থীর কাছে স্মার্টফোন না থাকায় অনেকেই সেই ক্লাসও করতে পারেনি। তাই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম কমানো হবে কি, কমালে কতটা কমানো হবে তা এখনই জানতে চায় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকরা বলেছেন, পড়াশুনায় কি হবে এ নিয়ে সবচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তায় ভুগছেন গ্রাম, হাওড়-বাঁওড়, পাহাড় এবং চা শ্রমিক পরিবারের শিক্ষার্থীরা। কারণ তারা অনলাইন ক্লাসের সুবিধা পায়নি। গ্রামের স্কুলে অনলাইন ক্লাসও ঠিকমতো হয়নি। অনেক পরীক্ষার্থী বাড়িতে বসে নিজেদের মতো প্রস্তুতি নিলেও ঠিকঠাক তথ্য না জানায় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বেগ যাচ্ছে না। সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার একটি স্কুলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, শহরের স্কুলগুলোতে অনলাইনে ক্লাস হলেও গ্রামে অন্যচিত্র। ইন্টারনেট কিনে কেউ ক্লাসে অংশ নিতে চায় না। এরফলে রাস্তাঘাটে দেখা হলে বা ফোনে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের একটাই প্রশ্ন টেস্ট পরীক্ষা আদৌ হবে তো, হলে কি পুরো সিলেবাসেই পরীক্ষা নেয়া হবে? এ কারণে বিভিন্ন গুজবও ছড়িয়ে পড়ছে। রাজধানীর রায়েরবাজারের বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ে ২০২১ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। কিন্তু এর আগে টেস্ট পরীক্ষা হওয়ার কথা। অন্যান্য বছর এমন সময়ে টেস্ট পরীক্ষা হয়ে যায়। এবার এখনও হয়নি। এরফলে আমি বুঝতে পারছি না, টেস্ট পরীক্ষার কি হবে? বিশেষ করে, শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, একটি এসেসমেন্টের মাধ্যমে টেস্ট পরীক্ষা হবে। কিন্তু কিভাবে সেই এসেসমেন্ট হবে, সেটা এখনও জানতে পারিনি। তা নিয়ে ঝামেলায় আছি। তার মতে, এসেসমেন্টের প্রক্রিয়া দ্রুত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জানিয়ে দেয়া উচিত। রাজধানীর গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের একজন শিক্ষার্থী বলেন, আগামী বছর আমার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। কিন্তু এরআগে আমার টেস্ট পরীক্ষা কিভাবে হবে তা বুঝতে পারছি না। আর কলেজ বন্ধ থাকায় পড়াশুনাও ঠিকঠাকভাবে চলছে না। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে মাধ্যমিকের পাঠদান শুরু আজ : মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে আজ রবিবার থেকে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের মাধ্যমে পাঠদান শুরু হচ্ছে। আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে এই পাঠদান শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী ডিসেম্বরের মধ্যে আট সপ্তাহের সিলেবাস শেষ করতে হবে। আঞ্চলিক উপ-পরিচালকদের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত এই সিলেবাস দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাবে মাউশি। মাউশি সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীকে পড়াশোনার সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখতে বাড়ির কাজ ও অ্যাসাইনমেন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। পাঠ্যসূচি ও মূল্যায়ন টুলস তৈরির ক্ষেত্রে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮ সপ্তাহ পাওয়া যাবে। কোনো সপ্তাহে শিক্ষার্থীর কী মূল্যায়ন করা হবে, তার নির্দেশনা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে দেয়া হয়েছে। প্রথম সপ্তাহে মূল্যায়নের পর ২য় সপ্তাহের প্রস্তুতি নিতে হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে আট সপ্তাহ শেষে শিক্ষার্থী মূল্যায়ন কার্যক্রম শেষ হবে। প্রস্তাবিত মূল্যায়ন নির্দেশনা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীকে প্রতি সপ্তাহে প্রত্যেক বিষয়ে একটি করে বাড়ির কাজ দিতে হবে। প্রত্যেক বিষয়ে আট সপ্তাহে প্রস্তাবিত আটটি কাজ শেষ করতে হবে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক কাজের মূল্যায়ন করবেন। এ কার্যক্রমে প্রতে?্যক শিক্ষার্থীর অংশ নেয়া নিশ্চিতসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সব মূল?্যায়নের তথ?্য সংরক্ষণ করতে হবে। মাউশির মহাপরিচালক সৈয়দ গোলাম ফারুক বলেন, ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০ দিনের সংক্ষিপ্ত এই সিলেবাস তৈরি করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এরপর এনসিটিবি এই সিলেবাস শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। পরে মন্ত্রণালয় থেকে এর অনুমোদন দিয়ে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App