×

মুক্তচিন্তা

কী হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২০, ০৯:১৭ পিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পরই ২০০৮ সালে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পান অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় অর্থাৎ ওয়ান-ইলেভেন বা ১/১১-এর সময় জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার মুক্তির জন্য আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে রিমান্ডসহ ১০৪ দিন জেল-জুলুম আর অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেন অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান। তিনি প্রথম মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তার সুদৃঢ় ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শিক্ষা, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে গতি আসে। একই সঙ্গে ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের মেরুদণ্ড ও বিষদাঁত ভেঙে দেয়া থেকে শুরু করে ছাত্রশিবিরকে ক্যাম্পাস থেকে বিতারিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান। এছাড়া দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকায় সারাদেশের মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও বিএনপি-জামায়াতের ভিত নড়বড়ে হয়ে যায়। অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের উপাচার্য হিসেবে প্রথম মেয়াদের সমাপ্তি ঘটলে তখন উপাচার্যের দায়িত্ব পান অধ্যাপক ড. এম মিজান উদ্দিন। তবে ঢাকায় অতিথি ভবন ও জমি কেনায় দুর্নীতিসহ নানা অনিয়ম, লুটপাট ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠে ওই প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এরপর দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব পান অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান। দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য পদের দায়িত্ব নিয়েই অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান প্রথমবারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন, অবকাঠামো, শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমকে দ্রæততার সঙ্গে এগিয়ে নিতে থাকেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শিক্ষক ও ছাত্ররাজনীতিতে বিএনপি-জামায়াত ও ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের অস্তিত্ব বর্তমানে তেমন না থাকায় বাধাহীনভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানে নিয়ে যেতে থাকেন রেকর্ড দুবারের সফল উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, ক্ষমতার মোহে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরাই বাধা হয়ে দাঁড়ান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসের সার্বিক উন্নয়ন ও সফলতার ক্ষেত্রে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের মধ্যে তথা আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের মধ্যে বর্তমানে নানা গ্রুপ ও উপগ্রুপ সৃষ্টি হয়ে প্রকাশ্য বিভাজন আর বিভেদের কালো ছায়া দেখা দিয়েছে, যা সত্যিকার অর্থেই দুঃখজনক। বিভাজন সৃষ্টি করে ক্যাম্পাসে অস্থিরতা তৈরির পাঁয়তারাকারী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের একটি গ্রুপের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগ বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। আর সেই তদন্ত বাধাগ্রস্ত করতেই তারা বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ, করোনা মহামারিতে সারাবিশ্ব যখন বিপর্যস্ত তখনো আওয়ামী লীগের মুখোশধারী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওইসব শিক্ষকের বর্তমান উপাচার্যবিরোধী ষড়যন্ত্র থেমে নেই। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ, ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকা প্রগতিশীল শিক্ষকদের ওই একাংশ ক্যাম্পাসে নানাভাবে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বরাবর একের পর এক নালিশ দিতে শুরু করে। এ প্রেক্ষিতে বিভ্রান্ত হয়ে ‘অনৈতিকভাবে’ শুনানির আয়োজন করে ইউজিসি। এতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হয়েছে মর্মেও অভিযোগ করেন প্রগতিশীল একাধিক শিক্ষক। তাদের অভিযোগ, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে দুর্নীতিগ্রস্ত ও বিকৃত মস্তিষ্কের শিক্ষকদের মিথ্যা অভিযোগের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও মর্যাদাহানি হয়েছে। বলা বাহুল্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের এই বিভাজন, গ্রæপিং ও কাদা ছোড়াছুড়ির কারণে ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টরা বিব্রত হচ্ছেন। প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ তথা আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের এই গ্রুপিং, বিভাজন আর কাদা ছোড়াছুড়ি অবিলম্বে বন্ধ করে ক্যাম্পাসে দ্রæত শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ সুনিশ্চিত করার বিনীত আহ্বান জানান সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সচেতন মহল। সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (রাবিসাস)। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App