×

সম্পাদকীয়

ইরফানদের দমন করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২০, ০৮:৪৯ পিএম

নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খানকে মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত সোমবার নিজ বাসায় অভিযান চালিয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান সেলিমকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এ সময় অবৈধভাবে ওয়াকিটকি ও মাদক রাখার দায়ে ইরফানকে ১ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ ঘটনা দুদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়াসহ গণমাধ্যমে খুব আলোচনা হচ্ছে। নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে প্রকাশ্যে এভাবে পেটানো সত্যিই দুঃখজনক। সরকারি দলের সাংসদের পুত্র হয়ে বেপরোয়া জীবনযাপন এমন ঘটনার জন্য দায়ী। আশার বিষয়, প্রশাসন এ বিষয়ে ত্বরিত ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা চাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও আইনের আওতায় আনা হোক। ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী সেলিমের পুত্র ইরফান সেলিম। কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। রাজনৈতিক খুঁটি ব্যবহার করে ধরাকে সরা জ্ঞান করেছেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচিত হলেও পিতা এবং শ্বশুর ক্ষমতাসীন দলের এমপি হওয়ায় অনেকটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। ঘটনার সময় রাতে নৌবাহিনীর কর্মকর্তার মোটরসাইকেল ইরফান সেলিমের গাড়ি ধাক্কা দেয়। এর কারণ জানতে চাইলে ইরফানসহ তার দলবল ওই কর্মকর্তাকে মারধর করে। এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ইরফানকে প্রধান আসামি করে মামলা হলে র‌্যাব গ্রেপ্তার অভিযানে নামে। সোমবার ইরফানের বাসায় অভিযানের সময় দেখা যায়, বাসায় গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ আধুনিক রেডিও ফ্রিকোয়েন্সিসহ অত্যাধুনিক কন্ট্রোল রুম। কন্ট্রোল রুমে রয়েছে আধুনিক ভিপিএস (ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার), ৩৮টি ওয়াকিটকি, ড্রোনসহ বিভিন্ন ডিভাইস। রাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (ভিভিআইপি) নিরাপত্তায় নিয়োজিত এলিট বাহিনীর কাছে যেসব সরঞ্জাম থাকে, সেরকম সরঞ্জাম পাওয়া গেছে এখানে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ফাঁকি দিয়ে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষায় এই কন্ট্রোল রুম ব্যবহার করা হতো বলে র‌্যাবের ধারণা। বিদেশি অস্ত্র, হ্যান্ডকাফ ও মদও জব্দ করেছে র‌্যাব। ওই সময় গ্রেপ্তার করা হয় ইরফানকেও। বর্তমানে দেশের অধিকাংশ অপরাধের পেছনে কিংবা অপরাধের বিচার না হওয়া কিংবা অপরাধীদের আইন-কানুনকে তোয়াক্কা না করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাই ভ‚মিকা রাখে। গণতান্ত্রিক ভাবধারায় রাজনীতির ব্যবহার মানুষের আচরণে আইনের স্পষ্ট উপস্থিতি তৈরি করে। কারণ শান্তি ও শৃঙ্খলার অব্যাহত জয়যাত্রা প্রস্তুত করাই রাজনীতির লক্ষ্য; কিন্তু রাজনৈতিক শৃঙ্খলার বাইরে গিয়ে মদদপুষ্ট কতিপয় ব্যক্তিরা সমাজকে অতিষ্ঠ করে তোলার চেষ্টা করছে। এতে সমাজের শৃঙ্খলার কাঠামোতে আবদ্ধ মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলে। তৈরি হয় পারস্পরিক অবিশ্বাস। তবে এসব অপরাধীকে দমনে সরকার সচেতন। এদের কোনোভাবেই ছাড় নয়। সমাজের অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অপরাধপ্রবণ ব্যক্তির মনে এমন ভীতি জন্মাতে হবে যে, অপরাধ করে কোনোভাবেই ছাড় পাওয়া যাবে না, বিচারের আওতায় আসতেই হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App