×

জাতীয়

সাইবার অপরাধ বেড়েছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২০, ০৯:২৭ এএম

সাইবার অপরাধ বেড়েছে

ফাইল ছবি

প্রযুক্তির উৎকর্ষে পাল্টেছে অপরাধের ধরন প্রতিদিন গড়ে ১০টি অভিযোগ

দেশে অপরাধ না কমলেও বদলে গেছে অপরাধের ধরন। এখন আর বড় ধরনের খুন, অপহরণ, ডাকাতি বা ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ হরহামেশা ঘটছে না। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির উৎকর্ষে পাল্টে গেছে অপরাধের ধরন। প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদেশে বসেও দেশে অপরাধ সংঘটন ও ইন্ধনদানের ঘটনা ঘটছে। দিনে দিনে সাইবার ক্রাইম বেড়ে যাওয়ায় তা দমনে পুলিশের একাধিক পৃথক ইউনিট গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ নিয়ে কাজ করছে তারা। আইনের আওতায় আসছে সাইবার অপরাধীরা।

পুলিশ সদর দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গত ১০ বছরে সারাদেশে অপরাধের ধরন পাল্টে গেছে। এ কারণে পুলিশের কাজে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যুগোপযোগী করা হচ্ছে আইন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জঙ্গি তৎপরতা ও সাইবার ক্রাইম বেড়ে যাওয়ায় তা দমনে প্রযুক্তির ওপর বেশি জোর দেয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে একদিকে যেমন জঙ্গি ও সাইবার ক্রাইমের মতো অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশে দক্ষ জনবল তৈরি করা হচ্ছে, তেমনি পুলিশের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে জঙ্গি তৎপরতা ও সাইবার ক্রাইম বন্ধ করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি), পুলিশ সদর দপ্তরের এলআইসি বিভাগ, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এছাড়া সিআইডির অধীনে গঠন করা হয়েছে সাইবার পুলিশ ব্যুরো।

এ প্রসঙ্গে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাইবার ক্রাইম এন্ড সাইবার সিকিউরিটি ডিভিশনের অতিরিক্ত পুলিশ উপকমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে হ্যাকিং কমেছে। তবে অনলাইনে প্রতারণার অভিযোগ বেড়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশ আর্থিক প্রতারণা। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ অনলাইনে প্রপাগান্ডা বেড়েছে। এগুলো দমনে সাইবার ক্রাইম প্রতিনিয়ত কাজ করছে। অপরাধীরা আইনের আওতায় আসছে।

সিআইডির সিনিয়র এএসপি জিসানুল হক বলেন, অভিযোগের ধরন অনেক পাল্টে গেছে। সাইবার ক্রাইম ইউনিট যে কোনো অভিযোগ পেলে তা আমলে নিচ্ছে। তদন্ত করছে। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেসব অপরাধ করা হচ্ছে, তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এসব ঘটনায় শতকরা ৮০ ভাগ অপরাধী ধরা পড়ছে দাবি করে তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত চক্র ধরা পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ইউটিউবে কোনো ধরনের আপত্তিকর ছবি বা ভিডিও আপলোডের অভিযোগ পেলে

সেগুলো সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। জড়িতদের আটক করা হচ্ছে। সাইবার ক্রাইম দমনে কঠোরভাবে কাজ করা হচ্ছে। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মাহাবুব মহসীনের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে এই ব্যুরো। রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দপ্তরে এর প্রধান কার্যালয়।

এদিকে ছাড়া জঙ্গি দমনে পুলিশে এন্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ) নামে আরো একটি নতুন ইউনিট গঠন করা হয়েছে। এই ইউনিটের সদর দপ্তর বারিধারায়। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এসটিএমসি জঙ্গি ও সাইবার ক্রাইমবিষয়ক সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করে থাকে। সাইবার ক্রাইমের মামলাগুলো তদন্ত করছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম-সিটিটিসি সাইবার ক্রাইম এন্ড সাইবার সিকিউরিটি ডিভিশন, সিআইডি ও পিবিআই। প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন এসব ইউনিট সার্বক্ষণিক নজর রাখছে সাইবার ওয়ার্ল্ডে।

জানা গেছে, সিটিটিসি সাইবার ক্রাইম এন্ড সাইবার সিকিউরিটি ডিভিশনে প্রতিদিন গড়ে ১০টি করে অভিযোগ নেয়া হয়। যারা মামলা করতে চান না তারাই সিটিটিসির কার্যালয়ে হাজির হয়ে কিংবা হ্যালো সিটি অ্যাপ, ফেসবুক পেজ, ই-মেইলে অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হয়। ২০১৫ সালে সারাদেশে সাইবার ক্রাইম অ্যাক্টে মামলা হয়েছিল ৬৩৮টি। ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৩২টিতে। ২০১৭ সালে ১ হাজার ৪৮টি এবং ২০১৮ সালে ১ হাজার ১৩৫টি মামলা হয়। এর বাইরেও অনেক ঘটনা আছে যা মামলা হিসেবে লিপিবদ্ধ হয়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App