×

সারাদেশ

৩ মাসেও গ্রেপ্তার হয়নি আসামি, বাদিকে হত্যার হুমকি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২০, ০৩:৪০ পিএম

৩ মাসেও গ্রেপ্তার হয়নি আসামি, বাদিকে হত্যার হুমকি

দক্ষিণ আইচা থানা

তিন মাসেও গ্রেপ্তার হয়নি ধর্ষণ চেষ্টা মামলার আসামি। মামলা তুলে না নিলে মামলার বাদিনী ও তার পরিবারকে বিভিন্ন মাধ্যমে হত্যার হুমকি দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার দূর্গম এলাকা উত্তর চর মানিকা ইউনিয়নের নতুন বাজার সংলগ্ন ১নং ওয়ার্ডে এক সন্তানের জননি (১৮) কে একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মন্তাজ হাওলাদারের ছেলে ইয়ার হোসেন (৩২) ও মৃত নেজামুল হক পাটোয়ারীর ছেলে আবদুর রব পাটোয়ারী (৪০) ধর্ষণ করার চেষ্টা করে।

ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করে বলেন, গত আগস্ট মাসের ৪তারিখে রাত সাড়ে ৯টার সময় আমাদের বসত ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় আমাকে ইয়ার হোসেন ও আবদুর রব চেতনানাশক পাউডার মিশ্রিত রুমাল দিয়ে আমার মুখ চেপে ধরে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় বাড়িতে আমার বাবা ছিল না। ধস্তাধস্তি ও মুখ গোঙ্গানীর শব্দ শুনে আমার মা পাশের বিছানা থেকে উঠে এসে তাদের ধাওয়া করলে ইয়ার হোসেন ও আবদুর রব পাটোয়ারী কৌশলে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

এঘটনার পরদিন আমার পরিবার আমাকে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে এবং দক্ষিণ আইচা থানা পুলিশকে মৌখিকভবে অভিযোগ জানায়।

৩দিন পরে চিকিৎসা শেষে গত আগস্ট মাসের ৯তারিখে ইয়ার হোসেন ও আবদুর রব পাটোয়ারীকে আসামি করে দক্ষিণ আইচা থানায় ধর্ষণ চেষ্টায় মামলা করি। মামলা নং ০১/৪৫ মামলার ৩মাস চলমান থাকলেও দক্ষিণ আইচা থানা পুলিশ কাউকেই এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেনি।

ওই ভুক্তভোগী নারীর মা কান্না কণ্ঠে অভিযোগ করে বলেন, আসামিরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছেনা। উল্টো আসামি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা আমাদেরকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে “মামলা তুলে না নিলে তোদের সকলকে জবাই করে শেষ করে দেয়া হবে” আবার আপস মিমাংসার জন্যেও প্রস্তাব পাঠায়।

এঘটনায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানান, ইয়ার হোসেন,আবদুর রব,রাজ্জাক,রাসেল,জহিরসহ আরও কয়েকজন মিলে ওই এলাকায় ত্রাসের রাজত্য কায়েম করেছে। ইয়ার হোসেন ও আবদুর রব বাহিনী মানিকা ইউনিয়নের সরকার দলীয় নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করছে।

উপজেলার দুর্গম এলাকা হওয়ায় ওই অঞ্চলে প্রতি মাসে বিভিন্ন অসহায় মানুষকে জিম্মি করে ও এলাকার সহজ সরল যুবকদের সাথে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে মারপিট করে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক জনপ্রতিনিধিসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, ইয়ার হোসেন কিছুদিন পূর্বেও নতুন বাজার মোড়ে চা বিক্রি করতো।

বর্তমানে এলাকার কতিপয় নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে চান্দাবাজি থেকে শুরু করে চুরি ছিনতাই ও ধর্ষণ চেষ্টাসহ এলাকায় নতুন কোনো লোকজন আসলে স্থানিয় থানাপুলিশের কর্মকর্তা সেজে এই গ্রুপটি টাকা পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। তারা আরও জানান, ইয়ার হোসেন ও আবদুর রবসহ তাদের গ্রুপের সদস্যরা মিলে কিছুদিন পূর্বে কুকরি-মুকরি ইউনিয়নের পাতিলা চর থেকে আসা কবির নামের জনৈক ব্যাক্তিকে থানার ওসি ও দারোগা পরিচয় দিয়ে মারধর করে ২০হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। ওই ভুক্তভোগী থানায় জানিয়েও কোনো সুরাহা পায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক বাসিন্দা দাবি করে বলেন, ইয়ার হোসেন ও আবদুর রব পাটোয়ারী দক্ষিণ আইচা থানা পুলিশের ইনফরমার হিসেবে কাজ করতো দির্ঘদিন। আর তাই থানা পুলিশ তাদের ইচ্ছে করেই গ্রেপ্তার করছে না।

এবিষয়ে দক্ষিণ আইচা থানার অফিসার ইনচার্জ হারুন অর রশিদের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ইয়ার হোসেন ও আবদুর রবের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ওই নারী থানায় একটি এজহার দাখিল করলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রুজু করা হয়। তবে আসামিরা দির্ঘদিন পলাতক রয়েছে। এছাড়াও আবদুর রবের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা রয়েছে। ইয়ার হোসেনদের বিরুদ্ধে আরও একাধিক অভিযোগ শুনেছি। তারা ওই এলাকায় পুলিশ সেজে মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ারও তথ্য রয়েছে পুলিশের কাছে। তবে তারা পুলিশের কোনো ইনফরমার নয়। দায়েরকৃত ধর্ষণ চেষ্টা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App