×

সারাদেশ

ছোট যমুনা পারে ভরসা ‘দড়ি টানা নৌকা’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২০, ০৩:৫২ পিএম

ছোট যমুনা পারে ভরসা ‘দড়ি টানা নৌকা’
 

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কুজাইল-আতাইকুলা নামক স্থানে নওগাঁর ছোট যুমনা নদী পারাপারে তিন ইউনিয়নের বসবাসরত জনসাধারণের মাঝে সেতুবন্ধনের ভূমিকায় রয়েছে দড়ি টানা নৌকা। ডিজিটাল বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদের ভাল যোগাযোগের ভরসা হিসেবে ব্রিজের বদলে মিরাট, গোনা ও কাশিমপুর ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষের নওগাঁর ছোট যুমনা নদী পারাপার হতে বর্ষা মৌসুমে ইজারাদারের দঁড়ি টানা নৌকায় ভরসা হয়ে দাঁড়ায়।

উপজেলার কাশিমপুর, গোনা ও মিরাট ইউনিয়নের অবহেলিত জনপদের মধ্যে সর্বরামপুর, কাশিমপুর, ডাঙ্গাপাড়া, এনায়েতপুর, মঙ্গলপাড়া, ভবানীপুর, পীরেরা, বয়না, বেতগাড়ী, দূর্গাপুর, কৃষ্ণপুর, মালঞ্চি, ঘোষগ্রাম, নান্দাইবাড়ি, আতাইকুলা, কুনৌজ, হামিদপুর, জালালগঞ্জ গ্রামসহ এই তিন ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন কোন উন্নত না হওয়ায় রাষ্ট্রের অনেক জরুরী সুযোগ-সুবিধা ও সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে এই তিন ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ।

যোগাযোগ ব্যবস্থার এই আধুনিকতার যুগে স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর-মিরাট ইউনিয়নের বসবাসরত মানুষের নদী পারাপারের জন্য একটি ব্রিজের অভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয় প্রায় ১৫টি গ্রামের কৃষক-শ্রমিক, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ প্রায় ২০ হাজার জনসাধারণের।

জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার সদর থেকে প্রায় ০৮ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিনে কাশিমপুর-মিরাট ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেষে বুক চিড়ে বয়ে গেছে নওগাঁর ছোট যুমনা নদী। যুগ যুগ ধরে এই নদীতে কোন প্রকার খনন কাজ না করায় দিনদিন নাব্যতা সংকটের কারণে নদীর বুকে বিশেষ বিশেষ স্থানে চর জেগে উঠে, কৃষি জমিতে সেচ ব্যবস্থা ও নৌ চলাচল স্বাভাবিক গতি ধরে রাখার জন্য এবং নদীর পানি প্রবাহ সচল রাখার লক্ষ্যে সরকারি পর্যায় থেকে কোন প্রকল্প অদ্যবদি হাতে নেওয়া হয়নি।

বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি যখন ফুলে-ফেপে উঠে তখন পারিবারিক প্রয়োজনে যাতায়াতের এক মাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় নৌকা। কুজাইল-আতাইকুলা নামক স্থানে নওগাঁর ছোট যুমনা নদীর উপর একটি ব্রিজ নির্মানের এলাকাবাসির দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি থাকলেও সরকারি পর্যায়ে উন্নয়নের অনেক প্রকল্প আসে প্রকল্প যায় কিন্তু এই এলাকাবাসির ভাগ্য উন্নয়নের কারো যেন মাথা ব্যথা নাই।

আতাইকুলা গ্রামের সাইফুল ইসলাম, মহসিন আলী ও গোলাপ বলেন, কুজাইল-আতাইকুলা খেয়া পারাপার ঘাটে প্রতিদিন যে পরিমাণে লোকজন পারাপার হয় তাতে একটি ব্রিজ খুবই জরুরি।

আতাইকুলা জনকল্যান উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক (গণিত) নরোত্তম কুমার পাল বলেন, কুজাইলা-আতাইকুলা নামক স্থানে ছোট যুমনা নদীর উপর একটি ব্রিজ নিমার্ণ করা হলে অত্র এলাকায় যোগাযোগ, ব্যবসা ও শিক্ষা ব্যবস্থার আমল পরিবর্তন হবে। আমার প্রতিষ্ঠানসহ এখানকার দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৯শ’ ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্ষা ও খরা মৌসুমে নৌকাতে পারাপার হয়। জনস্বার্থে এই ঘাটে একটি ব্রিজ নির্মাণ একান্ত প্রয়োজন।

মিরাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, রাণীনগর ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে মিরাট একটি অবহেলিত ইউনিয়ন। যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে ভালো না। কুজাইল-আতাইকুলা জনগুরুত্বপূর্ণ এই খেয়া পারাপার ঘাটে একটি ব্রিজের দাবিতে আমরা একাধিকবার প্রয়াত এমপি ইসরাফিল আলমের নিকট স্বরনাপর্ণ হয়েছি। এমপি আমাদের একটি ব্রিজ নির্মানের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। উপ-নির্বাচনে যে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে তার প্রতি এই খেয়া পারাপার ঘাটে একটি ব্রিজ নির্মাণের জোর দাবি আমাদের।

রাণীনগর উপজেলা প্রকৌশলী এলজিইডি শাহ মো. শহিদুল হক বলেন, কুজাইল-আতাইকুলা নামক স্থানে নওগাঁর ছোট যুমনা নদীর উপর একটি ব্রিজ নিমার্ণের জন্য ঘটনাস্থল নির্ধারণ করে মাপ-যোগ ও ডিজাইন করে একটি প্রস্তাবনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এর প্রধান কার্যালয়ে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে আমরা কাজ করতে পারবো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App