×

সারাদেশ

'মিথ্যা খবর লিখলেই মামলা'

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২০, ০৬:০৯ পিএম

'মিথ্যা খবর লিখলেই মামলা'

সংবাদ সম্মেলনে যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদের।

অনেক সহ্য করেছি। আর সহ্য করবো না। আর কোনো মিথ্যা খবর লিখলেই সরাসরি আইনের আশ্রয় নেব। মামলা করতে বাধ্য হবো। যদি সত্য খবর লেখা হয় তাতে কোনো সমস্যা নেই বরং সাধুবাদ জানাবো। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার রাজনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার জন্য মিথ্যা খবর লিখলে কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবে না। সংবাদ সম্মলেন ডেকে সাংবাদিকদের উদ্দেশে এমন হুঁশিয়ারি বক্তব্য দেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের।

শনিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা পরিষদ বাজারে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদের লিখিত বক্তব্যে বলেন, সম্প্রতি কু্ষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিক ও দুটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে আমার নামে চাঁদাবাজির মিথ্যা খবর প্রকাশ করা হয়। ওই খবরে উল্লেখ করা হয়, আমি নাকি উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে চাঁদাবাজি করে আসছি। কিন্তু দৌলতপুরবাসী সবাই অবগত আছেন, চাঁদাবাজি করার মতো এতবড় দৈন্যতায় আমি পড়িনি। নিজে ব্যবসা করে খাই আর মানুষের সেবার ব্রত নিয়ে ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির মাঠে সক্রিয় রয়েছি। মানুষের জন্য কাজ করে আসছি। কেউ চাঁদাবাজির প্রমাণ দেখাতে পারলে যে কোনো শাস্তি মেনে নেব। কিন্তু মান মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশে এ ধরনের মিথ্যাচার আর সহ্য করবো না।

যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদের আরো বলেন, আমার বসতবাড়ি এবং দলীয় কার্যালয়ের সঙ্গে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের ভৌগলিক অবস্থান খুবই কাছাকাছি। আমি মুজিব আদর্শের রাজনীতি করি, যার মূল আদর্শ হলো জনসেবা করা। উপজেলা পরিষদের ভেতর অবস্থিত সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে এখানকার ১৪ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষজনকে আমরা নানাভাবে সেবা দিয়ে থাকি। আজ পর্যন্ত কেউ চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলতে পারেনি, পারবেও না। অথচ আমার নামে মিথ্যা খবর পরিবেশন করা হয়েছে। ফেইক আইডির মাধ্যমে ফেসবুকে অপপ্রচার করা হয়েছে। রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয় করার লক্ষে একটি কুচক্রিমহল আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের জঘন্য মিথ্যাচার করে আসছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

নিজের পারিবারিক ও রাজনৈতিক অবস্থান তুলে ধরে উপজেলা যুবলীগ সেক্রেটারি আব্দুল কাদের বলেন, প্রয়াত বাবার (আব্দুল কুদ্দুস) হাত ধরে রাজনীতির মাঠে যাত্রা শুরু করি। এর আগে ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। এখন যুবলীগ করছি। তিন ভাইয়ের মধ্যে আমি বড়। পেশা ব্যবসা। ছোট ভাই দুজনের একজন সেনাবাহিনীতে লে. কর্নেল পদে কর্মরত, অপরজন কলেজে শিক্ষকতা করছে। সুতরাং আমরা এতটা দৈন্যদশায় পরিনি যে, চাঁদাবাজির মতো জঘন্য কাজে লিপ্ত হতে হবে।

তিনি আরো বলেন, যখন এই সাব-রেজিস্ট্রার অফিস উপজেলা চত্ত্বর থেকে স্থানান্তর করা হয়েছিল। তখন এই অফিস কেন্দ্রিক গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের রুটি-রুজির কথা ভেবে অফিস রক্ষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেই। পরবর্তীতে সবার আন্তরিক সহযোগিতায় আমরা পুনরায় অফিসটি উপজেলা চত্ত্বরে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হই।

যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদের বলেন, আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে স্পষ্ট ভাষায় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আমার নামে আর কোনো মিথ্যা ভিত্তিহীন খবর লিখলে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেব না। সরাসরি আইনের আশ্রয় নেব। মামলা করতে বাধ্য হবো। সাংবাদিকদের প্রতি সম্মান রেখে বলছি, আপনারা মিথ্যাচার পরিহার করুন, সত্য খবর তুলে ধরুন। আর সেই সত্য তুলে ধরতে গিয়ে যদি সেটা আমার বিপক্ষেও যায় তাতেও আমি খুশি, যে শাস্তিই হোক মাথা পেতে নেব। কিন্তু অযথা মিথ্যা খবর লিখে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াবেন না, কাউকে হেয় করার চেষ্টা করবেন না। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের খোলামেলা জবাব দেন। সংবাদ সম্মেলনে দৌলতপুর কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন দলীয় নেতাকর্মীরাও।

প্রসঙ্গত, দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত অফিস ছিল এখানকার সাব-রেজিস্ট্রার অফিসটি। পদে পদে দুর্নীতির কারণে মানুষের ভোগান্তির শেষ ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এসে অ্যাভভোকেট সরওয়ার জাহান বাদশাহ সর্বপ্রথম এই সাব-রেজিস্ট্রার অফিসকে সম্পূর্ণ দুর্নীতি মুক্ত করেন। এমপির ভয়ে অন্যান্য দপ্তরেরও দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যায়। এমপি বাদশার এই ভূমিকা নিয়ে সে সময় গণমাধ্যমে খবর বের হলে তিনি দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন। তার ডাক পড়ে বিভিন্ন টিভির টকশো অনুষ্ঠানেও। তবে বর্তমানে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরে দুর্নীতি চলে আসলেও সরাসরি এমপি বাদশার কঠোর হস্তক্ষেপে বন্ধ হওয়া সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দুর্নীতি এখনো বন্ধই রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App