×

বিশেষ সংখ্যা

শারদীয় দুর্গোৎসব মুখ্যত বাঙালির

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২০, ০৯:১২ পিএম

শারদীয় দুর্গোৎসব মুখ্যত বাঙালির

ড. অনুপম সেন

শারদীয় দুর্গাপূজা-উৎসব সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হলেও এই উৎসবে সবাই আমন্ত্রিত, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে। বাংলাদেশের যে-অসাম্প্রদায়িক চেতনা ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র ও উৎসব সবার’, এই উৎসবে ফুটে উঠে। শারদীয় দুর্গোৎসব মুখ্যত বাঙালির। বাংলাদেশের বাইরে এই উপমহাদেশের আর কোথাও এই উৎসবটি এত ব্যাপকভাবে ও বিচিত্ররূপে মহাআনন্দে ও আড়ম্বরে উদযাপিত হয় না।

এই উপমহাদেশের অন্যত্র এই পূজার শেষ দিনটিই অর্থাৎ দশমীর দিনটি ‘দশেরা’ নামে বিপুল উৎসাহে পালন করা হয়। বাঙালির দুর্গাপূজার একটি বাঙালিয়ানা রূপ রয়েছে ধর্মতাত্তি¡ক দিক ব্যতিরেকে; সেটি হলো এই দিনে মেয়ে বাপের বাড়ি আসে; তিনদিন পরে চতুর্থ দিনে আবার স্বামীগৃহে ফিরে যায়। বাঙালির কাব্যেও দুর্গা মা বাঙালির একটি সাধারণ মেয়ে হিসেবেই নিজের পরিচয় দিচ্ছেন। ভারত চন্দ্রের কাব্যে তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তার স্বামী কে, তিনি শিবের পরিচয় দিচ্ছেন এভাবে : অতি বড় বৃদ্ধ পতি সিদ্ধিতে নিপুণ কোন গুণ নাই তার কপালে আগুন। বাংলা সাহিত্যে এটি ব্যজস্তুতির এক অসাধারণ উদাহরণ। ‘অতি বড় বৃদ্ধ পতি’ বলতে বুঝানো হচ্ছে, তিনি বিশ্বের অধিপতি; ‘সিদ্ধিতে নিপুণ’ বলতে বুঝানো হচ্ছে, সবকিছুই তার, সবকিছুতেই তিনি সিদ্ধ। ‘কপালে আগুন’ অর্থ তিনি সর্বশক্তিধর, ত্রিনয়ন বিশিষ্ট।

বাঙালি জীবনে কন্যার পিতৃগৃহে আসা এবং ফিরে যাওয়া দু’টিই একই সঙ্গে বিশাল আনন্দ ও বেদনার। দুর্গাপূজার অন্তে এই বেদনার রূপ খ্রিস্টান কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তও বর্ণনা করেছিলেন এভাবে : ‘বিসর্জি প্রতিমা যেন দশমী দিবসে’। এই পূজায় ধর্ম যেমন একটি বড় বিষয়, তার চেয়েও বড় বিষয় হলো সার্বজনীন কল্যাণ কামনা। আমি এই শুভ সময়ে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের এবং সর্ব মানবের মঙ্গল কামনা করি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App