×

মুক্তচিন্তা

জাতিসংঘ দিবসে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২০, ০৫:০৭ পিএম

জাতিসংঘ দিবসে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি

ফাইল ছবি

আজ জাতিসংঘ দিবস। পৃথিবীর সব স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রে উদযাপিত হয়। সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুসারে জাতিসংঘ সনদ অনুমোদনের দিনে ১৯৪৮ সালে এ দিবস পালনের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছিল। জাতিসংঘ দিবসের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে জাতিসংঘের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যকে উৎসর্গ করা হয়েছে। দিবসটি জাতিসংঘ সপ্তাহ যা ২০ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত চলমান, তার একটি অংশ। সচরাচরভাবে জাতিসংঘ দিবসে বিভিন্ন ধরনের সভা-সমাবেশ, আলোচনা-অনুষ্ঠান এবং প্রদর্শনীর মাধ্যমে উদযাপিত হয়। মূলত দিবসটিতে জাতিসংঘের বৈশ্বিক অর্জন ও উদ্দেশ্যকে জনসমক্ষে তুলে ধরা হয়। ১৯৭১ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ঘোষণা করে যে জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত। দেশসমূহে দিবসটিকে ছুটির দিন হিসেবে পালনের জন্য সুপারিশ করে। ১৯৪৬ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতিরা কালানুক্রমে বার্ষিকভাবে জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষে ভাষণ দিয়ে আসছেন।

সর্বশেষ ভাষণটি প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা। কসোভোয় জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষে অন্তর্র্বর্তীকালীন প্রশাসন সরকারিভাবে ছুটি ঘোষণা করে। জাতিসংঘ দিবসের পাশাপাশি একই দিনে বিশ্ব উন্নয়ন তথ্য দিবস পালন করা হয়। জাতিসংঘের উদ্যোগে ১৯৭২ সাল থেকে প্রতি বছরের ২৪ অক্টোবর এ দিনটি বৈশ্বিকভাবে পালিত হয়। সবমিলিয়ে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রয়েছে ব্যাপক খ্যাতি ও দুর্দান্ত কিছু কর্মকাণ্ড। কিন্তু করোনাকালে এটির রাষ্ট্রগুলোর প্রতি কার্যক্রম অনেকটাই কমে গিয়েছে। মার্কিনদের হস্তক্ষেপ সংগঠনটিকে আরো কার্যক্ষম করে দিয়েছে। এছাড়া করোনা জাতিসংঘকে অনেকটাই স্থবির করে দিয়েছে। তবুও আশার প্রদীপ একমাত্র জাতিসংঘই। কেননা বর্তমানে করোনা টিকা তৈরিতে একমাত্র সাহায্য করতে পারে জাতিসংঘ। জাতিসংঘই পারে বিশ্বের সব রাষ্ট্রের টিকা গবেষকদের একত্র করতে। যার ফলে একটি কার্যকরী ভ্যাকসিন তৈরি সম্ভব হতো। আজ ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ দিবস। সুতরাং এই দিবসে জাতিসংঘের কাছে এটিই প্রত্যাশা থাকবে, যেভাবে বিশ্বযুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছিল জাতিসংঘ সব রাষ্ট্রের মাঝে সমন্বয় এনে তেমনি করোনার মতো এই প্রতিক‚ল পরিস্থিতিতে আমাদের বাঁচাতে আবারো সোচ্চার হতে হবে জাতিসংঘকে। রাষ্ট্রগুলোর মাঝে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। কেননা বিশ্ব থেকে করোনা নির্মূল করতে সব রাষ্ট্রের সক্রিয় অংশগ্রহণের বিকল্প নেই। পাশাপাশি জাতিসংঘ দিবসে এটিই প্রত্যাশা যে, করোনার ভ্যাকসিন যেন সহজলভ্য হয় এবং ধনী-গরিব নির্বিশেষে সব দেশের মানুষ ব্যবহার করতে পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। করোনা ভাইরাস ছাড়াও জাতিসংঘের প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। কেননা বিশ্বের যে কোনো দুর্যোগ বা প্রতিক‚ল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হবো তখনই যখন জাতিসংঘের প্রতি মর্যাদা প্রদর্শন করব। এজন্যই মূলত জাতিসংঘের জাতীয় দিবসটি আমাদের প্রতিনিয়ত স্মরণ করতে হবে।

দুর্যোগে আন্তর্জাতিক সংগঠন জাতিসংঘই আমাদের শেষ ভরসাস্থল। সেই জন্য প্রত্যাশা একটাই মহামারি থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে, নতুন এক শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে আবারো বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার সংগঠন জাতিসংঘকে সক্রিয় ভ‚মিকা রাখতে হবে। করোনা ব্যতীত এই মহামারিকালে জাতিসংঘকে আরো কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। ফিলিস্তিনিদের ইসরাইল থেকে মুক্তি দিতে হবে। চীন-ভারত যুদ্ধের মীমাংসা করতে হবে। পাকিস্তান-ভারতের মীমাংসা করতে হবে। এছাড়া সম্প্রতি যে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ চলছে আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের মাঝে সেগুলো নিষ্পত্তি ঘটাতে হবে।

বিশেষ করে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। কেননা জাতিসংঘ বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সংগঠন। একমাত্র জাতিসংঘই পারে আন্তর্জাতিক মহলে চাপ প্রয়োগ করতে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সংকট সমাধান করতে। এছাড়া বর্তমানে কুয়েত, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া বা আফ্রিকার দেশগুলোর মাঝে যে সমস্যাগুলোর সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো রেহাই করতে হবে জাতিসংঘকে। সর্বোপরি জাতিসংঘ দিবসে এটাই প্রত্যাশা করি জাতিসংঘ মানবকল্যাণে সর্বদা নিয়োজিত থাকুক। সব দেশের মধ্যে বৈরিতা ধ্বংস করে শাস্তি প্রতিষ্ঠা করুক। পৃথিবী থেকে জাতিসংঘের মাধ্যমে কাঁটাতার উঠে যাক এবং পৃথিবী গড়ে উঠুক সবার শান্তির আবাসস্থল।

শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।

[email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App