×

সাহিত্য

একুশের গ্রন্থমেলা নিয়ে দোলাচলে লেখক প্রকাশক প্রচ্ছদ শিল্পীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২০, ১১:১২ এএম

একুশের গ্রন্থমেলা নিয়ে দোলাচলে লেখক প্রকাশক প্রচ্ছদ শিল্পীরা

সংকটের মুখে এমন মিলনমেলা -ফাইল ছবি

করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে অমর একুশে গ্রন্থমেলা নিয়ে সন্দেহের দোলাচলে আছেন লেখক, প্রকাশক এবং প্রচ্ছদ শিল্পীরা। আদৌ গ্রন্থমেলা হবে কিনা তা নিশ্চিত হতে পারছেন না তারা। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রন্থমেলা হবে বলে জানিয়েছে বাংলা একাডেমি। করোনার কারণে স্থবির সারাদেশ। নেই শিল্প-সংস্কৃতির কোনো আয়োজন। তবে বাংলা একাডেমির অমর একুশে গ্রন্থমেলার দিকে তাকিয়ে আছে সারাদেশ। চলছে নতুন বই প্রকাশের সব আয়োজন। ব্যস্ত সময় পার করছেন লেখক, প্রকাশক, প্রচ্ছদ ও মুদ্রণশিল্পীরা। তবে কোথায় যেন ছন্দহীনতা! গোপনীয়তা। বইমেলা আদৌ হবে কিনা? হলে এর কলেবর কেমন হবে? এসব নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির নির্বাহী পরিচালক ও অনন্যা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মনিরুল হক ভোরের কাগজকে বলেন, করোনার কারণে আমরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো প্রণোদনা পাইনি। এবার মেলার বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছি না। এই পরিস্থিতিতে বইমেলায় ২০/২৫টি বই প্রকাশ করব। অথচ গত বছর ১৫০টি বই প্রকাশ করেছি। উৎস প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মোস্তফা সেলিম বলেন, বইমেলার প্রস্তুতি মোটামুটি এবং কনজারভেটিভ। আমার কাছে বইমেলা মানে সংস্কৃতির মেলা। এই আয়োজন না থাকলে কেমন হবে? তাই অংশ নিচ্ছি। প্রতি বছরের মতো এবার লেখকদের মধ্যে উৎসাহ নেই। আমাদেরও উৎসাহ কমে গেছে। অথচ গত বছর পঞ্চাশের অধিক বই প্রকাশ করেছিলাম। এবার ২০ থেকে ২৫টা বই করব। গ্রন্থমেলাকে সামনে রেখে ৬ মাস আগে থেকেই প্রচ্ছদশিল্পীরা চরম ব্যস্ত থাকেন। এবারো তারা ব্যস্ত। তবে ছন্দহীন। প্রচ্ছদশিল্পী ধ্রæব এষ বলেন, লকডাউনের সময় থেকে আজ অবধি কোনো কাজই করিনি। একধরনের মানসিক চাপে আছি। অথচ গত বছর ১২০০ বইয়ের প্রচ্ছদ করেছি। চলতি মাসে মাত্র কাজ শুরু করেছি। অবশ্য কাজও কম। শিল্পী মাসুক হেলাল বলেন, করোনা সব কিছুর মতো তুলিক আচড়ও থামিয়ে দিয়েছে। আমাদের প্রথমা প্রকাশন থেকে গত বছর শতাধিক বই বেরিয়েছিল। এবার এখন পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫টা বইয়ের প্রচ্ছদ করেছি। শিল্পী সব্যসাচি বলেন, পরিস্থিতির ওপরই নির্ভর করছে সব আয়োজন। মেলা নিয়ে আমার তেমন কোনো প্রস্তুতি নেই। প্রকাশকদেরও তেমন তাড়া নেই। শিশু সাহিত্যিক আলী ইমাম বলেন, উৎকণ্ঠা নিয়ে সৃজনশীলতা হয় না। এটা লেখকদের জন্য অশনি সংকেত। এবারের বইমেলায় ১০টি বই প্রকাশের চিন্তা করছি। অথচ গত বছর ৫০টি বই প্রকাশিত হয়েছিল। পেশাদার কথাসাহিত্যিক আন্দালিব রাশদী বলেন, করোনার কারণে গত ঈদেই আমি প্রায় দেড় লাখ টাকার সম্মানী থেকে বঞ্চিত হয়েছি। কারণ ঈদসংখ্যাগুলো প্রকাশ হয়নি। আর বইমেলা প্রসঙ্গে যদি বলতে হয় বলব, আমার প্রস্তুতির চাইতে প্রকাশকের প্রস্তুতিই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গত বছর এই সময়ে আমার ১১টা বই বেরিয়েছিল। এবার মাত্র ৪টা বইয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। অন্যান্য সময়ে অক্টোবরের মধ্যেই ৭-৮টা বইয়ের চুক্তি হতো। পরিস্থিতির কারণে এবার প্রকাশকদের সাড়া কম। তিনি বলেন, বাংলা একাডেমি এখন পর্যন্ত কেন ঘোষণা দিচ্ছে না যে, যেসব প্রকাশক বইমেলায় অংশ নেবে তাদের উদ্দেশে একাডেমি বলে, আমরা দুটো ইউনিটের দাম রাখব না। তাহলে ছোট প্রকাশকদের মধ্যে স্বস্তি আসবে। জানতে চাইলে বাংলা একাডেমি মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী ভোরের কাগজকে বললেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবশ্যই বইমেলা হবে। যদি কোনো দৈব দুর্বিপাক না ঘটে তবে বইমেলা হবেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App