অবিভাসীকর্মীদের স্ব স্ব কর্মস্থলে ফেরত যাওয়া নিয়ে উদ্ভূত জটিলতায় উষ্মা প্রকাশ করে কুটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের ভিসা জটিলতাসহ নানা সমস্যার সমাধানের সুপারিশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি।

বুধবার (২১ অক্টোবর) স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ ধরনের সুপারিশ করা হয়। জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির ১৬তম বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ. কে. আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, নূরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, মো. আব্দুল মজিদ খান এবং মো. হাবিবে মিল্লাত।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে- চলমান মহামারীর কারনে যেসব অবিভাসী কর্মী তাদের স্ব স্ব কর্মস্থলে ফেরত যেতে পারেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্বাগতিক দেশসমূহের সাথে ফলপ্রসু কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমে মেয়াদোত্তীর্ন ভিসা, ইকামা ইত্যাদির মেয়াদ বাড়িয়ে বিশেষ ফ্লাইটযোগে অভিবাসী কর্মীদের প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করছে। ইতালি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, পর্তুগাল, ফ্রান্স,গ্রীস, সৌদি আরব ও ওমানে বিশেষ ফ্লাইটযোগে মোট ২ হাজার ৫৬০ জন আটকে পড়া প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রত্যাবাসন করা হয়েছে।

বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, করোনার কারনে কর্মহীন প্রবাসীদের নতুন কর্মসংস্থান তৈরী, আটকে পড়া বাংলাদেশী নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনা, দেশে আটকে পড়া প্রবাসীদের স্ব স্ব কর্মস্থলে পাঠান এবং বিশেষ বিমান চলাচলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া বিদেশে বাংলাদেশী মিশনগুলোতে একাধিক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করলেও ‘এক দেশ এক মিশন’ সংস্কৃতির ভিত্তিতে সম্মিলিত প্রয়াস অব্যাহত থাকায় কোভিড মহামারীর কারনে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জসমূহ সাফল্যের সাথে মোকাবেলা করা সম্ভব হচ্ছে।

বৈঠকে আরো জানানো হয় যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মহিলা কর্মী কর্মরত রয়েছে। তাই সংঘটিত দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার কারনে যাতে ভুলভাবে সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে এই বিপুল মহিলা কর্মীদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য জনগণ দাবী উত্থাপন না করে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সে দিকে দেশের সকল নাগরিককে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়।

বৈঠকে করোনা ভাইরাসযুক্ত নতুন পরিবেশে কিভাবে নতুন প্রেক্ষাপটে এ পরিবেশের সাথে সমন্বয় করে একটি স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নির্বাহ করার জন্য নতুন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বিশ্বের সাথে যোগাযোগ রেখে অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারের জন্য বাংলাদেশে তৈরী পণ্য রপ্তানীর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয় । এ বিষয়ে বৈঠকে বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোকে সে দেশের চাহিদা নিরুপন করে বাংলাদেশকে জানানোর এবং সে আলোকে রুপরেখা প্রণয়ন করে একটি পরিকল্পনা নেয়ার মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

বৈঠকে কানাডা ও ইন্দোনেশিয়ার বাংলাদেশী মিশনে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদ্বয় সে দেশে তাদের করনীয় বিষয়ে তাদের রুপরেখা উপস্থাপন করেন। এসময় কমিটির পক্ষ থেকে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত এয়ার ভাইস মার্শাল মোস্তাফিজুর রহমানকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পক্ষে ইন্দোনেশিয়ার সমর্থণ আদায়ে কাজ করার সুপারিশ করা হয়।