×

সারাদেশ

মহিপুর ইউপি নির্বাচনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে প্রার্থীর সমর্থকরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২০, ০৬:৫৩ পিএম

মহিপুর ইউপি নির্বাচনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে প্রার্থীর সমর্থকরা
বঙ্গোপসাগর ঘেষা পটুয়াখালীর মহিপুর থানা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ মঙ্গলবার (২০অক্টোবর)। রোববার মধ্যরাতে প্রচার প্রচারণা শেষ হয়েছে। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র দুই প্রভাবশালী প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মাঝে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। কে হাসবে শেষ হাসি। ৬নং খাপড়াভাঙ্গা ইউনিয়নকে বিলুপ্ত করে মহিপুর ও ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করা হয় । খন্ডিত ১৮ বর্গকলোমিটারের মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদের মোট ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৭শ’৬৯ জন। যার ৭ হাজার ৫শ’৯৩ জন পুরুষ এবং ৭ হাজার ১শ’৭৬ জন নারী ভোটার। ভোট কেন্দ্রে রয়েছে ৯টি। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৪২জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারসহ রয়েছে ৮৪ জন পোলিং অফিসার। এছাড়া প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের জন্য ৩জন ম্যাজিস্ট্রেট’র নেতৃত্বে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স, ১শ’৭১ জন আনসার সদস্যসহ একাধিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা নির্বাচনের দিন মাঠে থাকবেন। এতসব প্রশাসনিক নিরাপত্তার বলয়ের পরও সাধারণ ভোটারা শংকিত। এসব শঙ্কার কারণ হিসেবে তাদের দাবি, সরকার দলীয় নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর রয়েছে দলীয় ও বংশগত প্রভাব। অপরদিকে আনারস প্রতীকে সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর রয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলার তালতলী উপজেলার ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রেজভীর ক্ষমতা, অন্তরালে থাকা বিএনপির দলীয় দাপটও পারিবারিক টাকার জোর। পুর্নগঠিত হওয়া মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদে ২০১৫ সালের ১২ এপ্রিল সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল। এতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুস সালাম আকন বিজয়ী হন। ভৌগলিক কারণে সমুদ্র বেষ্ট্রিত এ জনপদের গুরুত্ব বিবেচনা করে ২০১৬ সালে নবগঠিত মহিপুর থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ সামুদ্রিক মৎস্যবন্দর মহিপুর-আলীপুর। এর সর্বদক্ষিণে অবস্থান কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। অতি গুরুত্বপূর্ণ মহিপুর থানা সদর ইউনিয়নের অল্প ভোটের নির্বাচনে বেশি উত্তাপ বিধায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তাসহ ব্যাপক প্রস্তুতি। এ ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলের বড় দুই দলের জেলা উপজেলার নেতৃবৃন্দের জয় পরাজয়ের নিয়ে হিসেব নিকাশ রয়েছে। ইতিমধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পক্ষে ভোটের দিন নীতিবাচক প্রভাব ফেলতে বহিরাগত অনেকেই পর্যটক সেজে কুয়াকাটাসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন এমনটাই দাবি করছেন দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার সমর্থকরা। এ নির্বাচনকে ঘিরে সোমবার (১৯ অক্টোবর) সকাল সকাল ১০ টায় পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মইনুল হাসান মহিপুর কো-অপ্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশ প্রশাসনসহ প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিমিয় সভা করেছেন। এদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আঃ মালেক আকন্দ ও আনারস মার্কার স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাজী ফজলু গাজী চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতা দিয়ে প্রচার ও প্রচারণা শেষ করেছেন। রয়েছে এক প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপর প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। এরমধ্যে উভয় প্রার্র্থী নির্বাচনী আচরণবিধীভঙ্গসহ একাধিক অভিযোগ এনে দফায় দফায় সংবাদ সম্মেলনসহ নির্বাচন অফিস ও প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন তারা। সর্বশেষ শুক্রবার রাত ১টায় বরিশাল র‌্যাব-৮ এর অভিযানে সরকার দলীয় নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে দু’টি ওয়ান শুটারগান, দুই রাউন্ড কার্তুজ, একটি বিদেশী রিভলবার ও আট রাউন্ড গুলি এবং দু’টি চাপাতি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় র‌্যাব একটি মোটর সাইকেলসহ বহিরাগত ৪জনকে গ্রেপ্তার করেছে । র‌্যাব-৮, বরিশাল সিপিসি-১ এর ডিএডি মোঃ মোক্তার হোসেন বাদী হয়ে শনিবার সন্ধ্যায় মহিপুর থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে র‌্যাবের অস্ত্র উদ্ধার এবং গ্রেপ্তারের ঘটনাকে প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী ফজলু গাজীর ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে শনিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে নৌকা মার্কার ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী আঃ মালেক আকন্দ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এর আগে (১৬ অক্টোবর) শুক্রবার সকালে কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সতন্ত্র ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সরকার দলীয় প্রার্থী, সমর্থক,কর্মী ও জেলা উপজেলার নেতারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট কেন্দ্রে না যাবার জন্য হুমকি দিচ্ছে। এ নির্বাচন সুষ্ঠ্যু হয় কিনা- এমন শঙ্কার কথা ও জানিয়েছেন হাজী ফজলু গাজী। অপরদিকে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুর রশিদ মহিপুর ইউপি নির্বাচনে ৯টি কেন্দ্রই ঝুকিঁপুর্ণ এমন আশংকার কথা উল্লেখ করে এবং প্রশাসনের অতিরিক্ত নিরাপত্তার দাবি করে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছেন। । পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মতিউল ইসলাম বলেন, মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠ্য ও নিরপেক্ষ করতে প্রতিটি কেন্দ্রে ৩ জন করে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। পাশাপাশি প্রতিটি স্ট্রাইকিং ফোর্সের সাথে ১জন করে ভ্রাম্যমান ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া জেলা নির্বাচন রির্টানিং অফিসার সার্বক্ষণিক নির্বাচনটি পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানান জেলা প্রশাসক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App