×

জাতীয়

পাকিস্তান হাইকমিশনারের সিলেট সফরে কৌতূহল!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২০, ০৯:৪৩ এএম

পাকিস্তান হাইকমিশনারের  সিলেট সফরে কৌতূহল!

ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী/ ফাইল ছবি

ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকীর সিলেট সফর নিয়ে নানা কৌতূহল দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করে তিনি দুদিন ধরে কেন সিলেটে রয়েছেন তা জানতে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হলেও কেউ সদুত্তর দিতে পারছেন না। ফলে এ নিয়ে নানাজন নানারকম মন্তব্য করছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট যান পাকিস্তানি হাইকমিশনার। নগরের রোজভিউ হোটেলে রাত্রিবাস করেন। সেখান থেকে গতকাল শনিবার তার ভ্রমণসূচি ছিল- সিলেটের দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন। এই দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি তিনটি জায়গায় গিয়েছেন। এর মধ্যে সকালে সিটি করপোরেশনে গেছেন, এরপর হজরত শাহজালাল (রা.) মাজার পরিদর্শন করে ভোলাগঞ্জ দেখে আসেন। কিন্তু শনিবার রাতে তার সূচি কি, কবে সিলেট থেকে ঢাকায় ফিরবেন সে বিষয়ে ভোরের কাগজ জানতে পারেনি। এমনকি সিলেট জেলা প্রশাসনে যোগাযোগ করেও ভ্রমণসূচি সম্পর্কে জানা যায়নি। তবে সিলেট সিটি করপোরেশনকে পাকিস্তানের রাওয়ালপিণ্ডি অথবা করাচি সিটির সিস্টার সিটি বানানোর যে প্রস্তাব দিয়েছেন হাইকমিশনার সেটি ভোরের কাগজ জেনেছে।

জানা গেছে, গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী সিলেট নগর ভবনে পৌঁছালে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিকের) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় হাইকমিশনারের সঙ্গে দেখা হয়নি। মেয়রের সঙ্গে দেখা না হওয়ায় হাইকমিশনার নাখোশ হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়রের পরিবর্তে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরীসহ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তাপস দাশ পুরকায়স্থ উপস্থিত ছিলেন।

পাকিস্তান হাইকমিশনার কেন সিলেটে এবং আপনাদের সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী ভোরের কাগজকে বলেন, তিনি মূলত মেয়র সাহেবের সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে মেয়র অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় তার সঙ্গে হাইকমিশনারের দেখা হয়নি। ফলে মেয়রের অনুপস্থিতিতে আমরা হাইকমিশনারকে ফুল দিয়ে নগর ভবনে স্বাগত জানাই। তিনি সর্বোচ্চ ১০ মিনিট নগর ভবনে ছিলেন। এ সময় আমরা হাইকমিশনারকে ফুল দিয়েছি, নানা উপহারও দিয়েছি। হাইকমিশনার বিশেষ কিছু বলেছেন কি- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হাইকমিশনার জানতে চেয়েছেন অন্য কোনো দেশের সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের চুক্তি আছে কিনা?

সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তাপস দাশ পুরকায়স্থ ভোরের কাগজকে বলেন, শুক্রবার গভীররাতে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আমাকে ফোন দিয়ে জানান, সিলেটে পাকিস্তানের হাইকমিশনার এসেছেন। শনিবার সকালে তিনি নগর ভবনে আসবেন। কি কথা হয় বুঝতে পারছি না, তোমরা যদি সামনে থাক তাহলে আমি সাহস পাব। কিন্তু শনিবার সকালে মেয়র অসুস্থ হওয়ায় তিনি আর নগর ভবনে আসেননি। তবু আমি যাই। গিয়ে দেখি কর্মকর্তাদের সঙ্গে হাইকমিশনারের আলাপ চলছে। হাইকমিশনার বলেছেন, সিলেটকে পাকিস্তানের রাওয়ালপিণ্ডি অথবা করাচি সিটি করপোরেশনের সিস্টার সিটি তৈরি করতে চান। এর জবাবে কর্মকর্তারা বলেছেন, আমরা আপনার এই বক্তব্য মেয়রকে পৌঁছে দেব। এরপরই হাইকমিশনার মেয়রের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে সিটি করপোরেশন ছেড়ে চলে যান। তাপস আরো বলেন, চলমান কয়েকটি ঘটনায় সিলেট নগর এখন উত্তপ্ত। এই অবস্থায় পাকিস্তান হাইকমিশনারের সিলেট সফর এবং দুদিন ধরে অবস্থান নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।

এদিকে অসুস্থ অবস্থায় শনিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। দুপুরে তিনি হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন। এ তথ্য জানিয়ে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী সোহেল আহমদ সাংবাদিকদের বলেছেন, দুপুরে তিনি (মেয়র) হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন। চিকিৎসকরা তাকে বিশ্রামে থাকতে বলেছেন। এর আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় তাকে নগরীর নূরজাহান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, শনিবার সকাল থেকে মেয়র জিন্দাবাজার ও চৌহাট্টা এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ সরাসরি উপস্থিত থেকে তদারকি করছিলেন। এ সময় হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার সকাল ১০টায় সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পাকিস্তনের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদের সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা ছিল। তবে মেয়র অসুস্থ হওয়ায় তার দেখা পাননি হাইকমিশনার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App