×

সারাদেশ

এসআই আকবরকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২০, ০৯:৪৯ এএম

এসআই আকবরকে খুঁজে  পাচ্ছে না পুলিশ!

এসআই আকবর

রায়হানের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন আজ

পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান হত্যার ৮ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে জেলাজুড়ে প্রতিদিনই সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন হচ্ছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের কর্মীরা রায়হানের বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানাচ্ছেন, প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিচ্ছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এমনকি খোদ এসএমপি কমিশনার গোলাম কিবরিয়া নিহত রায়হানের বাড়িতে গিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে তার পরিবারকে আশ্বস্ত করে এসেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসআই আকবরসহ কাউকেই আইনের আওতায় আনতে পারেনি পুলিশ। এই প্রেক্ষাপটে আজ রবিবার নিহত রায়হানের পরিবারের পক্ষ থেকে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এই সংবাদ সম্মেলন থেকে সিলেটের বিশিষ্টজনরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন। এদিকে নিরাপরাধ রায়হানের হত্যাকারী পুলিশ সদস্যরা গেপ্তার না হওয়ায় জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। মূল অভিযুক্ত বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (বরখাস্ত) এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়ার হদিসই পাচ্ছে না পুলিশ। ঘটনার পর থেকে বরখাস্ত ও প্রত্যাহার হওয়া দুই এএসআই ও চার কনস্টেবল পুলিশের পাহারায় সিলেট পুলিশ লাইন্সে রয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য ইতোমধ্যে কাষ্টঘর এলাকার সুইপার কলোনির সুলাই লালসহ দুজনকে জিজ্ঞাবাদ করেছে। তবে মূল হোতা এসআই আকবর হোসেনসহ জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে এখন উত্তাল সিলেট।

সবকিছু ছাপিয়ে সবার মনে একটাই প্রশ্ন- আকবর হোসেন ভূঁঁইয়া কোথায়? সিলেট মহানগর পুলিশের লাপাত্তা এই অফিসারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও। এ বিষয়ে অবশ্য বিভিন্ন জন বিভিন্ন কথা বলছেন। কেউ বলছেন, তিনি পুলিশের হাতের মুঠোয়ই আছেন। আবার পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, তিনি নাগালের বাইরে। এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার গোলাম কিবরিয়া বলেন, ঘটনার পর থেকেই আকবর পলাতক রয়েছে। পুলিশ সব বিষয়ে সর্তক রয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই। তারা চাইলে আকবর ছাড়া অন্যদের তাদের কাছে দেয়া হবে।

পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মো. খালেদুজ্জামান জানান, তদন্তকালে যাদের না পাওয়া যাবে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। মামলাটি স্পর্শকাতর, তাই সব বিষয়ে তথ্য প্রমাণের প্রয়োজন। সেজন্য পিবিআইয়ের তদন্ত দল নানা বিষয় মাথায় রেখে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

রায়হান হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পুলিশ লাইন্সে ৬ জনকে পাহারায় রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের। তিনি বলেন, হত্যা মামলাটির পুরো বিষয় তদন্ত করছে পিবিআই। আর তাদের সহযোগিতা করছে পুলিশ। বন্দরবাজার ফাঁড়ির বরখাস্ত হওয়া ইনচার্জ এসআই আকবরকে ধরতে ইতোমধ্যে সম্ভাব্য কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এছাড়াও সীমান্ত এলাকা ব্যবহার করে এসআই আকবর যাতে দেশ ছাড়তে না পারে সেজন্য পুলিশের নজরদারি রয়েছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পুলিশের হেফাজতে থেকে পুলিশ সদস্যের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি নাটকের একটি অংশ। এখন দেখুন নিরাপত্তা কোথায় রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পক্ষপাতিত্ব আচরণ করেছেন। বরখাস্ত ও প্রত্যাহার হওয়ায় পুলিশ সদস্যদের পুলিশ লাইনে নিরাপত্তা দিয়ে রাখা হলেও এসআই আকবরকে তারাই পালাতে সুযোগ করে দিয়েছেন। এটা পুলিশের ব্যর্থতা ও উদাসিনতার একটি উদহারণ।

নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পুলিশ যে আচরণ করেছে তা আমাদের হতাশ করেছে। আমার ছেলের হত্যাকারী এসআই আকবরকে তারাই পালাতে কিংবা সরে যেতে বলেছে। এক সাপ্তাহ হয়ে গেলেও আকবরসহ খুনি পুলিশদের গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। আমি কিছুই চাই না, শুধু আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। সেই সঙ্গে ওই যমদূত এসআই আকবরকে ধরার জন্য পুলিশের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App