×

মুক্তচিন্তা

এই জঞ্জাল সরাতেই হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২০, ০৬:৩৭ পিএম

শহরের সৌন্দর্য ফেরাতে কঠোর অবস্থানে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। ইতোমধ্যে সেবা সংস্থার তার ভূগর্ভে নেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে উত্তর সিটি করপোরেশন। একটি পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টর এলাকায় কয়েকটি সড়কের ঝুলন্ত তার নেয়া হচ্ছে সড়কের নিচে করা ইউটিলিটি ডাক্টে। পর্যায়ক্রমে পুরো ডিএনসিসি এলাকায় এই ডাক্ট বসানো হবে। এর মাধ্যমে তারগুলো নিয়ে যাওয়া হবে মাটির নিচ দিয়ে। গত ১ অক্টোবর থেকে পূর্ব নির্ধারিত কার্যক্রম অনুযায়ী গুলশান ২-এ ঝুলন্ত তার অপসারণে মাঠে নামে ডিএনসিসি। আগামী এক বছরের মধ্যে ঢাকার সব ঝুলন্ত তার নামিয়ে ফেলা হবে বলে ডিএনসিসি ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে ঝুলন্ত তার কাটায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে ডিশ ক্যাবল ও ইন্টারনেট সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন। এমন সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে সব মহলে। তথ্যপ্রযুক্তি, ই-কমার্সের মতো বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীসহ দুশ্চিন্তায় খোদ সরকারের দায়িত্বশীলরাও। এমতাবস্থায় দুপক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নির্ভরযোগ্য সমাধান হওয়া জরুরি মনে করছি। এটাও সত্য যে, রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তাকালেই দেখা যায় চারদিক ভরে গেছে ইন্টারনেট ও ডিশ লাইনের তারের গোছায়। ইন্টারনেট, ডিশ, টেলিফোন, বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনগুলো জড়িয়ে আছে একসঙ্গে। সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও ক্যাবল টিভি অপারেটররা দিনের পর দিন মাথার ওপর দিয়ে তার টানছে। এটা তো কোনোভাবেই কাম্য নয়। দিন দিন এতে ঝুঁকি বাড়ছে। নগরী হয়ে উঠছে ঝুঁকিপূর্ণ, হারাচ্ছে সৌন্দর্য। চানখাঁরপুল, লালবাগ, নবাবপুর, তাঁতীবাজার, ইংলিশ রোড, চকবাজার, আরমানিটোলা, আজিমপুর, বংশালসহ বেশকিছু এলাকায় তারের জঞ্জালের অবস্থা ভয়াবহ। মতিঝিল, পল্টন, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, ধানমন্ডি, মিরপুর, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় সর্বত্রই জট পাকানো তার ঝুলছে। বিদ্যুতের পিলার ব্যবহার করে এসব তার ছড়িয়ে পড়েছে অলিগলিতে। তারের জঞ্জাল সরাতে সরকার দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে আসছে। গত এক দশক ধরে এজন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা ও উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়। যদিও বেশকিছু এলাকায় এরই মধ্যে বিদ্যুতের তার মাটির নিচে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তবে ক্যাবল টিভি ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ায় এসব সেবা সংস্থার তারের জঞ্জাল এখনো মাটির নিচে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তারের জঞ্জাল সরাতে উচ্চ আদালত ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নির্দেশ দিয়েছেন। ঢাকার বিদ্যুতের খুঁটি থেকে তারের জঞ্জাল সরাতে চীনের অর্থায়নে ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ডিপিডিসি। ২০২৫ সালের মধ্যে রাজধানীর সব এলাকার বিদ্যুতের তার মাটির নিচে চলে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। ক্যাবল অপারেটররা নানাভাবে এই অভিযান বন্ধে তৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা দাবি করছে সময় দেয়া হলে তারগুলো সরিয়ে নেয়া হবে। তার বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে কোটি কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে বলে তারা দাবি করছে। তাদের এই দাবি কতটা যুক্তিযুক্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় বিবেচনা করে দেখবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App