×

জাতীয়

শাহজালালে ১০ বিমান বাজেয়াপ্তের নির্দেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২০, ০৯:৪৩ এএম

বেবিচকের পাওনা সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা ১২টি উড়োজাহাজের মধ্যে ১০টি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। চূড়ান্ত নোটিস দিয়েও সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সগুলোর কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে গতকাল বুধবার শাহজালাল পরিচালককে এমন নির্দেশ দেয়া হয়। বাজেয়াপ্তের পর উড়োজাহাজগুলো নিলামে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

বেবিচকের সদস্য (অপারেশনস এন্ড প্ল্যানিং) এয়ার কমোডর মো. খালিদ হোসাইন জানান, গতকাল এক সমন্বয় বৈঠকে শাহজালালের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ উল আহসানকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। কারণ, পাওনা মিটিয়ে উড়োজাহাজগুলো সরিয়ে নিতে এয়ারলাইন্সগুলোকে দেয়া চূড়ান্ত নোটিসের সময়ও সম্প্রতি শেষ হয়েছে। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এখন সেগুলো নিলামে তোলার আগে কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। তার মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে, বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা। এ জন্য কিছু অফিসিয়াল নোট ও অনুমোদনের বিষয় রয়েছে।

তিনি জানান, মোট ১২টি উড়োজাহাজ দীর্ঘদিন ধরে শাহজালালের কার্গো ভিলেজের পাশের এপ্রোনে পড়েছিল। এর মধ্যে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের ৮টি, জিএমজির ১টি, অ্যাভিয়েনা এয়ারলাইন্সের ১টি ও রিজেন্ট এয়ারের ২টি রয়েছে। সেগুলোকে সরিয়ে পাশের এপ্রোনে নেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, অ্যাভিয়েনা এয়ারলাইন্সের যে উড়োজাহাজটি রয়েছে, সেটির অবস্থা খুবই খারাপ। একেবারেই ভাঙাচোরা অবস্থা। সেটির মালিকও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক আগে একজন এসেছিলেন মালিকানা দাবি করে। কিন্তু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এরপর আর যোগাযোগও করেননি তিনি। এ ছাড়া

ইউনাইটেডের ৮টি ও জিএমজির ১টিও বাজেয়াপ্ত করা হবে। তাদের কাছে অনেক টাকা পাওনা রয়েছে সরকারের। অন্যদিকে, ডি-রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় রিজেন্টের ২টি উড়োজাহাজ এখনই বাজেয়াপ্তের তালিকায় আনা হয়নি বলে জানান তিনি।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৪ এয়ারলাইন্সের ১২টি পরিত্যক্ত উড়োজাহাজ নিয়ে জটিলতা দীর্ঘদিনের। বিমানবন্দরের বিশাল অংশজুড়ে এসব উড়োজাহাজ পড়ে থাকায় অনেক কাজেই ব্যাঘাত ঘটে। থার্ড টার্মিনালের নির্মাণ শুরু হওয়ার পর এ জটিলতা আরো বাড়ে। বিষয়টি সুরাহা করতে গত ফেব্রুয়ারিতে বেবিচককে চাপ দেয় মন্ত্রণালয়। প্রয়োজনে নিলামে তোলার কথাও বলা হয় সে সময়। এসব এয়ারলাইন্সের কাছে সাড়ে ৭০০ কোটি টাকারও বেশি পাওনা রয়েছে বেবিচকের। কোম্পানিগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চার্জ পরিশোধ ছাড়াই রানওয়ের পাশে এপ্রোন এলাকায় ফেলে রাখা হয়েছে উড়োজাহাজগুলো।

বেবিচকের হিসাব মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের কাছে বেবিচকের পাওনা প্রায় ১৯০ কোটি টাকা, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের কাছে ২৩৬ কোটি ও জিএমজি এয়ারলাইন্সের কাছে পাওনা প্রায় ৩২৬ কোটি টাকা।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অপারেশন বন্ধ করে দেয় ইউনাইটেড। ২০১২ সালের মার্চে জিএমজি ও চলতি বছরের মার্চে বন্ধ হয় রিজেন্ট এয়ার। বর্তমানে জিএমজির ১টি এমডি-৮২ ও এ্যাভিয়েনার একটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ রয়েছে এ্যাপ্রোনে। রিজেন্টের ২টি ড্যাশ-৮, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের চারটি এমডি-৮৩, একটি ড্যাশ-৮সহ ৮টি উড়োজাহাজ পড়ে আছে। পাশাপাশি চালু থাকা এয়ারলাইন্সেরও কয়েকটি পরিত্যক্ত উড়োজাহাজ রয়েছে শাহজালাল বিমানবন্দরে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের দুটি এফ-২৮ ও চারটি ডিসি-১০ ও বেসরকারি কয়েকটি কার্গো ও প্রশিক্ষণ উড়োজাহাজ রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App