×

সারাদেশ

মিনারেল ওয়াটারের নামে বিক্রি হচ্ছে নোংরা পানি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২০, ০৪:১২ পিএম

মিনারেল ওয়াটারের নামে বিক্রি হচ্ছে নোংরা পানি

নির্বাহী ম্যাজিস্টেটের অভিযান

নোয়াখালীর সুবর্ণচরের খাসেরহাট বাজারের ছোট্ট একটি টিনসেট ঘরের সামনে দৃষ্টিনন্দন সাইন বোর্ড জুড়ে লিখা আছে, সুবর্ণ পিওর ড্রিংকিং ওয়াটার, “বিশুদ্ধ পানি খান, জীবন বাঁচান”। কিন্তু ওই পানি উৎপাদনের কারখানার ভিতরের চিত্র ভিন্ন।

কারখানার ভিতরে ডুকতেই চোখে পড়ে সামনের প্রথম কক্ষে এস.ডি ওয়াটারের ভলভো ‘ব্যাটারি পানি’ ও উৎপাদন সামগ্রী। পাশের রুমেই রয়েছে গোল্ডেন লাইফ ‘কলম’ তৈরির মেশিন ও উৎপাদন সামগ্রী। এর পিছনের অংশে রয়েছে সুবর্ণ পিওর ড্রিংকিং ওয়াটার বোতলজাতকরণের মেশিন ও উৎপাদন সামগ্রী। অর্থাৎ জনবহুল এলাকায় একটি টিনসেট ঘরে একের ভিতর তিন। এস.ডি ওয়াটারের ভলভো ‘ব্যাটারি পানি’ উৎপাদনের ঠিকানা জেলা সদরের সোনাপুর বিসিক এলাকায় হলেও কোম্পানীর নাম নকল করে ওই ভলভো ‘ব্যাটারি পানি’ সুবর্ণচরের খাসেরহাটে অবৈধভাবে উৎপাদন করছেন নুরুল ইসলাম নামের এক অসাধু ব্যক্তি।

বিশুদ্ধ বোতলজাতকরণের রুমে ফ্লোরে হাবুডুবু খাচ্ছে নোংরা পানি। এদিক-ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ময়লা-আবজনা। পানি পরিক্ষা ও বিশুদ্ধকরণের নেই কোনো কেমিস্ট। পাওয়া যায়নি পানি বিশুদ্ধকরণের মেডিসিন। তেমন শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও কারখানার মালিক নুরুল ইসলামের ছেলে তাজুল ইসলাম নিজেই কেমিস্ট, নিজেই উৎপাদক। বোতলের গায়ে নেই উৎপাদন ও মেয়াদ উর্ত্তীণের তারিখ। তাদের স্লোগানের সাথে পানি উৎপাদনের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। জীবন বাঁচানোর জন্য বিশুদ্ধ পানি মনে করে টাকা দিয়ে কিনে খেতে হচ্ছে নোংরা পানি।

জানা গেছে, এই পানি খেয়ে চরের হাজার হাজার মানুষ জীবন ঝুঁকিতে রয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে ওই কারখানার পানি খেয়ে চরের বহু মানুষ আর্সিনিক ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

সম্প্রতি ওই সুবর্ণ পিওর ড্রিংকিং ওয়াটার কারখানায় বিএসটিআই চট্রগ্রাম বিভাগীয় অফিসের সমন্বয়ে সুবর্ণচর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুর রহমান অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে বেরিয়ে আসে পানি বোতলজাতকরণের এমন নোংরা চিত্র। পরিবেশ এবং প্যাকেজিংয়ে অনিয়মের কারণে ওই প্রতিষ্ঠানকে দশ হাজার টাকা জরিমানা করলেও একই কারখানায় এস.ডি ওয়াটারের ভলভো ‘ব্যাটারি পানি’ উৎপাদন এবং কলম উৎপাদন বিএসটিআই এর আওয়াতায় না থাকায় কোনো বড় ধরনের জরিমানা করতে পারেনি ভ্রাম্যমান আদালত।

শুধু ব্যাটারি পানি আর কলম নয়, নুরুল ইসলাম পাশের একটি জনবহুল এলাকার ভবনে অবৈধভাবে তৈরী করছেন প্লাস্টিক। ওই কারখানার কারণে চরম ঝুঁকিতে রয়েছেন খাসেরহাট বাজারের হাজার হাজার মানুষ।

বিএসটিআই চট্রগ্রাম বিভাগীয় অফিসের পরিদর্শক (মেট) মো. মুকুল মৃধা বলেন, সম্পূর্ণ নোংরা পরিবেশে বিএসটিআই নিয়ম-নীতি না মেনেই সুবর্ণ পিওর ড্রিংকিং ওয়াটার তৈরি করা হচ্ছে। এ পানি পান করলে মানুষের শরীরে নানা ধরনের রোগ বাসা বাঁধতে পারে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্টেট মো. আরিফুর রহমান বলেন, এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত আছে। শীঘ্রই নুরুল ইসলামের নকল ভলবো ব্যাটারি পানি, প্লাস্টিক কারখানা ও কলম কারখানায় অভিযান চালানো হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App