ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধার রেখে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এর সাক্ষরের মাধ্যমে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) সকালে এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
এর আগে সোমবার (১২ অক্টোবর) মন্ত্রীসভার বৈঠকে আইন সংশোধনের সুপারিশ করা হলে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) অধ্যাদেশ জারি অর্থাৎ আইন কার্যকরের কথা বলা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণ মামলা শুরু থেকে তদন্ত হয়ে বিচার শেষ করতে হবে ৬ মাস বা ১৮০ দিনের মধ্যে। বিচারক বদলি হলেও মামলার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। বিচারক যদি কোনো কারণে বদলি হয়ে যান সেক্ষেত্রেও বিলম্ব হয় অনেক সময়। তবে কোনো বিচারক চলে গেলে তিনি মামলা যে অবস্থায় রেখে যাবেন সে অবস্থা থেকে মামলা চালিয়ে যেতে হবে।
গত কিছু দিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০০০’-এর খসড়া অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয়। আইনের ৯(১) ধারায় পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করা হয়েছিল। নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ প্রতিরোধে এই ধারায় ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীসহ সবাই এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। তবে যেহেতু এখন সংসদের অধিবেশন নেই এবং আশু ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে, তাই রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাবলে অধ্যাদেশ করতে পারবেন। ভেটিংয়ের পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর হয়ে যাবে।
এদিকে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রধান বিচাপরপতিকে ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ জারির অনুরোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, আমি প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করব, তিনি যেন প্র্যাকটিস নির্দেশনা দেন- যেন বিজ্ঞ বিচারকরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এইসব মামলার বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেন। অন্যদিকে আইন মন্ত্রণালয় থেকে আমরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে যে স্টেশন পিপিরা আছেন, তাদের নির্দেশনা দেব মামলাগুলো শেষ করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মৃত্যুদণ্ড কোনো সমস্যার সমাধান নয়। শুধু সাজা বাড়িয়েই ধর্ষণ বন্ধ করা যাবে না। এই সমস্যার সমাধান করতে হলে, দ্রুত বিচার শেষ করে শাস্তি কার্যকর করতে হবে। একই সঙ্গে মানুষের মধ্যে ধর্মীয়, মানবিক ও নৈতিক শিক্ষা বিস্তারের পাশাপাশি আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন আনতে হবে। কঠোর আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমেই অপরাধীদের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। মানবাধিকার কর্মীদের মতে, সবচেয়ে বড় প্রয়োজন, মানুষকে সংশোধন করা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।