×

মুক্তচিন্তা

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট তথ্যবহুল নয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২০, ১০:৪৭ পিএম

ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। ‘শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এ আমার অহংকারÑ এখনই সময় দায় মোচনের’ শিরোনামে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, ফরেন ডেলিগেটরা এখানে এলে যখন উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক হয়, তখন আমি তাদের বলি আমাদের ৮৪টি বিভাগ, ১১টি ইনস্টিটিউট, প্রায় ৬০টি গবেষণাকেন্দ্র, ১৪০টি অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প প্রতিষ্ঠান আছে। এগুলো শুনে তারা অবাক হয়ে যান। তারা বলেন, ‘ইটস আ হিউজ এন্ড ম্যাসিভ ইউনিভার্সিটি।’ আমাদের ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০ হাজার, শিক্ষার্থীরা ১২ টাকায়, ১৫ টাকায় পড়েÑ ইটস অ্যামেজিং, রেকর্ড। এত শিক্ষকের বিদেশি ডিগ্রি আছে। এগুলো শুনে তারা (বিদেশি প্রতিনিধি) বলেন, ‘এগুলো তো তোমাদের ওয়েবসাইটে দেখি না।’ এই কথাটি কতটুকু বিস্ময়কর! বর্তমান দুনিয়া ডিজিটাল দুনিয়া। বাংলাদেশ এখন সম্পূর্ণরূপে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর হতে যাচ্ছে। সেই বাংলাদেশে কী না বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অবাক হতে হয় বাংলাদেশের বিদ্যাপীঠ নিয়ে। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্ব র‌্যাংকিং অনেক দূর। ‘কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‌্যাংকিংস ২০২১’ শীর্ষক এই র‌্যাংকিংয়ে ঢাবি ও বুয়েটের অবস্থান ৮০১ থেকে ১০০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে। তবে সুনির্দিষ্টভাবে কত নম্বরে, তা উল্লেখ করেনি কিউএস। বিশ্ব যে সংস্থাগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং করে, তারা নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য ওপর। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে যেসব তথ্য দেয়া থাকে তার ওপর নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যখন বিশ্ব র‌্যাংকিং খুব খারাপ অবস্থা করে তখন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এবং আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষার্থীদের আগমন আপনাআপনি কমে যায়। এছাড়া বিদেশি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ওপর নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি জন্য যোগাযোগ করে থাকেন। এমনকি বিভাগীয় প্রধান অথবা বিভাগের অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটে ঢুকে বিষয়গুলো উপলব্ধি করতে পারলাম, বিষয়টি খুব লজ্জাকর হলেও সত্য। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগ কোন মাধ্যমে নেই। যদিও কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে শিক্ষকদের সাধারণ পরিচয় দেয়া আছে এবং ই-মেইল অ্যাড্রেস দেয়া আছে, অনেক সময় দেখা যায় ই-মেইল অ্যাড্রেস ভুল, এমনকি ই-মেইল করার পড়ে তেমন কোনো রেসপন্স পাওয়া যায় না। বিষয়টি খুব দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ কোনো তথ্য বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনেক আগেই উচিত ছিল এ বিষয়ে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে নোটিস দেয়ার। অনতিবিলম্বে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটগুলো তথ্যবহুল করা না হয় তাহলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্বমানের শিক্ষা থেকে অনেক পিছিয়ে যাবে। এখন উচিত এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সজাগ হওয়া এবং যথারীতি ব্যবস্থা নেয়া।

কবি ও লেখক [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App