×

জাতীয়

ধর্ষণমুক্ত বাংলাদেশ চাই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২০, ০৯:৫৯ এএম

ধর্ষণমুক্ত বাংলাদেশ চাই

ফাইল ছবি

দেশের বিভিন্নস্থানে ধর্ষণ, যৌন হয়রানি ও সহিংসতার প্রতিবাদ এবং বিচারের দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল রবিবার সচিবালয়ের পশ্চিম পাশে অবস্থান নিয়ে ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে গণসংহতি আন্দোলন। উত্তরায় বিক্ষোভ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। খাগড়াছড়িতে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সাভারে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। এসব কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, আমরা ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি ও ধর্ষণমুক্ত বাংলাদেশ চাই।

লাগাতার কর্মসূচির মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সচিবালয়ের অদূরে বিক্ষোভ করেছে গণসংহতি আন্দোলন। সমমনা বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে আন্দোলন করে সংগঠনটি। গতকাল সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব সংলগ্ন সচিবালয় গেটের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে তারা। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরসহ অন্যরা। তবে বৃষ্টির কারণে কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করায় বক্তব্য রাখতে পারেননি জোনায়েদ সাকি। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে গণসংহতির নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আকবর খানসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

ধর্ষকের বিচার দাবিতে রাজধানীর উত্তরায় আবার রাস্তায় নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। ৩ দিনের জন্য বিক্ষোভ স্থগিতের পর ৭ দফা দাবি নিয়ে তারা আবার নামেন। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে উত্তরার বিএনএস সেন্টারের সামনে মানববন্ধন-বিক্ষোভে তারা ধর্ষকের সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি ও ৭ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলেছেন, বর্তমান সমাজব্যবস্থায় ধর্ষণ মারাত্মক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ঘটছে ধর্ষণ ও নিপীড়নের মতো ঘটনা। ক্ষমতার অপব্যবহার বা আইনের ফাঁক গলে এসব অপরাধ থেকে পার পেয়ে যাচ্ছেন অনেকে। তাই এর প্রতিকার হিসেবে ধর্ষকের সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি ও ধর্ষণ রোধে ৭ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন তারা। কিন্তু দাবিগুলো উত্থাপনের ৩ দিন পার হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সেভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই বাধ্য হয়ে আবার রাস্তায় নেমেছেন তারা। ধর্ষণবিরোধী এ আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি কার্যকরের ব্যাপারে সরকার থেকে কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু ধর্ষণ রোধে আমরা আরো যে ৬ দাবি উত্থাপন করেছি, সে ব্যাপারে কোনো কথা হচ্ছে না, কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। দাবিগুলোর ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে আবার রাস্তায় নেমেছেন তারা। তাতেও কাজ না হলে আজ সোমবার থেকে আবার লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে গতকাল সকালে খাগড়াছড়ি শহরের মিল্লাত চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মসূচি শেষে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাসের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনটি। স্মারকলিপিতে এমসি কলেজ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, খাগড়াছড়ি ও মুন্সীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত নারীর ওপর নারকীয় পাশবিক নির্যাতন ও সহিংসতায় উদ্বেগ ক্ষোভপ্রকাশ করে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠনের মাধ্যমে দ্রæত বিচারের দাবি জানানো হয়। খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সহসভাপতি ক্ষেত্র মোহন রোয়াজা, সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রব রাজা, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক কুহেলী দেওয়ান, খাগড়াছড়ি জেলা নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব মরিয়ম আক্তার মনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সারাদেশে নারী-শিশু ধর্ষণ, নির্যাতনের প্রতিবাদে ও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ জনগণ। গতকাল দুপুরের দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাকিজা এলাকা থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি গেণ্ডা পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়। ফলে প্রায় আধা ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে যান চলাচল বন্ধ থাকে। বিক্ষোভ মিছিলে বক্তারা বলেন, সারাদেশে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই। ধর্ষণমুক্ত বাংলাদেশ চাই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App