×

জাতীয়

সিনহা হত্যার বিচার: কেউ যেন ফয়দা লুটতে না পারে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২০, ০৬:৪০ পিএম

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে যাতে কেউ ফায়দা লুটতে না পারে, সেদিকে নজর রাখার সুপারিশ করেছে জাতীয় সংসদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বুধবার (৭ অক্টোবর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয় এবং তখন কমিটি বিচারকার্য পর্যবেক্ষনে রাখার সুপারিশ করে।

কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়ার বৈঠকে কমিটির সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, মো.ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ, মোতাহার হোসেন, মো. নাসির উদ্দিন, মো. মহিববুর রহমান এবং নাহিদ ইজাহার খান অংশ নেন।

গত আগস্ট মাসে কমিটির বৈঠকে বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে না থাকলেও এ নিয়ে কথা তোলেন কমিটির সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান। কমিটির পরের বৈঠকে মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটি প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ওই বৈঠকে সুপারিশ করা হয়। বুধবারের বৈঠকে ওই ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন দেয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

সংসদীয় কমিটির কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসপি মাসুদ সিনহা হত্যার সঙ্গে জড়িত। তিনি ঘটনার শুরু থেকে তদন্তের কাজে অসহযোগিতা ও বাঁধা দিয়ে আসছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার পরপরই সিনহার পরিবার এসপি মাসুদকে বদলির দাবি জানায়। সেনাসদরও সুষ্ঠু তদন্তের এবং ন্যায়বিচারের স্বার্থে তাকে বদলি করা দরকার বলে মত পোষণ করে।

মন্ত্রণালয়ের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সিনহাকে গুলি করার ২০-২৫ মিনিট পরে ওসি প্রদীপ ঘটনাস্থলে যান। অত্যন্ত নির্মম ও অমানবিকভাবে পা দিয়ে চেপে ধরে মাটিতে পড়ে থাকা সিনহার মৃত্যু নিশ্চিত করেন ওসি প্রদীপ। ওই প্রতিবেদনে সেদিনকার ঘটনার বিবরণও তুলে ধরা হয়।

বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য ফারুক খান গণমাধ্যমকে বলেন, কমিটিতে এ নিয়ে আলোচনা উঠলে আমি বলেছি- এই বিচার কাজ সার্বক্ষণিক মনিটর করতে হবে। কেউ যাতে এ থেকে ফায়দা লুটতে না পারে। মন্ত্রণালয় আমাদের জানিয়েছে- এ ঘটনার বিচারে যা যা করা দরকার, সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় সবকিছু নজরে রেখেছে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান। এ ঘটনায় গত ৫ জুলাই তার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি করা হয়।

সিনহার মৃত্যুর পর ঘটনাটিকে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল পুলিশ। পুলিশের পক্ষে নন্দলাল রক্ষিতের মামলাও হয়েছিল তার ভিত্তিতে। অন্যদিকে সিনহার বোন শারমিন সরাসরি হত্যার অভিযোগ এনে পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনকে সিনহা হত্যা মামলায় আসামি করতে আদালতে আবেদনও করেছিলেন নিহত সিনহার বোন। তবে বিচারক তা খারিজ করে দেন। ওই ঘটনার জেরে গত সেপ্টেম্বর মাসে কক্সবাজার থেকে রাজশাহী বদলি করা এসপি মাসুদ হোসেনকে।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার সে সময় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে তল্লাশিতে বাধা দেন। পরে পিস্তল বের করলে চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের কথা জানিয়ে সিনহার দুই সঙ্গীকে গ্রেফতার করে দুটো মামলাও দায়ের করে পুলিশ। সনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস গত ৫ অগাস্ট কক্সবাজারের হাকিম আদালতে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে কমিটি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গ্রহণ করা পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করতে মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App