×

জাতীয়

ঢাবির ঐতিহ্যকে কলংকিত করা হয়েছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৪:৪১ পিএম

ঢাবির ঐতিহ্যকে কলংকিত করা হয়েছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক ড. মোর্শেদ হাসান খানকে চাকরি থেকে অব্যাহতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। ঢাবির বর্তমান প্রশাসন প্রকৃতপক্ষে সরকারেরই একটি প্ল্যাটফর্ম। তাই এই সরকারের কাছে সুবিচার পাওয়ার কোনো কারণ নেই। এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমে কঠোর আন্দোলনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক পেশাজীবী সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাবির অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানকে অব্যাহতির প্রতিবাদ ও পুনর্বহালের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

উল্লেখ্য যে, ২০১৮ সালের মার্চে একটি জাতীয় দৈনিকে নিবন্ধ লেখেন ড. মোর্শেদ হাসান খান। প্রকাশিত নিবন্ধে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি ও বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার অভিযোগ এনে গত ৯ সেপ্টেম্বর তাকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেয় ঢাবি সিন্ডিকেট। যিনি বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় এই মানববন্ধন হয়। সমাবেশ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ওয়াহিদুজ্জামান এপোলোকে চাকুরিতে পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়। সেইসাথে সিলেটের এমসি কলেজে ছাত্রলীগের হাতে তরুণী ধর্ষণের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন পেশাজীবীরা।

বিএসপিপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব ডাঃ জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় মানববন্ধন ও পেশাজীবী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাবির সাবেক প্রোভিসি ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, ডিইউজের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম প্রমুখ উপস্হিত ছিলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মোর্শেদ হাসান খান চারটা ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছেন। মেট্রিক ও ইন্টারে বোর্ড স্ট্যান্ড করেছেন। তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে! এভাবে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে হয়রানি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারেননা।

তিনি বলেন, বর্তমান ভিসি তো আজ্ঞাবহ। তাদের কাছে সুবিচার পাওয়ার কোনো কারণ নেই। নজরুল ইসলাম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আইন ভঙ্গ করে যাদের চাকরি খেয়েছে তাদেরকে পুনর্বহাল করতে হবে। বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে নানামুখী সংকট চলছে। আমরা করোনার কারণে একটা মাস্ক পরি। কিন্তু সরকারের আরো মাস্ক পরা দরকার। তারা নানা ভাইরাসে আক্রান্ত। এধরনের ভাইরাস থেকে বাঁচতে সবার উচিত দুর্নীতি বিরোধী মাস্ক পরা।

নজরুল ইসলাম বলেন, রাজনীতিবিদদের নিরুৎসাহিত করা গণতন্ত্র ও দেশের সুষ্ঠু রাজনীতির জন্য খারাপ। বিএনপি তো একদলীয় শাসনের কবরের ওপর বহুদলীয় গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা করেছে। সুতরাং গণতন্ত্রের জন্য তাদের আবেগ কম। কিন্তু জনগণের কাছে গণতন্ত্রের আবেগ বেশি। কারণ সেটা রক্ত দিয়ে অর্জিত। আগামীতে জনগণ একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শরিক হবেন এই প্রত্যাশা করছি।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা এই সরকার তথা আওয়ামী লীগের সেবা আর চাইনা। আপনি জনগণের মতামত নিন গদি থেকে নেমে যান। জনগণ তাদের পথ বেছে নিবে। তিনি বলেন, এই সরকারের হাতে কেউ নিরাপদ নন। আজকে দেশের কোথাও মা বোনেরা নিরাপদ নন। ছাত্রলীগের ছেলেরা মেয়েদের ধর্ষণ করে বলে ওটা আমাদের না। এই সরকার ইতিহাস নিজেরাই বিকৃতি করছে। ড. মোর্শেদ প্রবন্ধ লিখেছেন। সেটা পছন্দ নাই হতে পারে। আপনারাও লিখেন। তাই বলে চাকরি খাবেন এই অধিকার কে দিয়েছে?

শওকত মাহমুদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে কলংক লেপন করেছে। তাহলে তো যারা ড. মোর্শেদের বিরোধিতা করেছে ভবিষ্যতে সবারই চাকরি খেতে হবে। জিয়া সম্পর্কে যারা নাটক বানাচ্ছে তাদের জন্ম তো তখন হয়নি। জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবেনা। সারা দেশে সরকার এখন ধর্ষকলীগ প্রতিষ্ঠা করেছে। তাদের জন্য আলাদা অঞ্চল বরাদ্দ করা হোক। রুহুল আমিন গাজী বলেন, ডঃ মোর্শেদের চাকরি থেকে অব্যাহতি অন্যায়। আজ তাদের সোনার ছেলেরা ধর্ষণ করছে। এভাবে পার পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, সবাই আজ ঐক্যবদ্ধ। কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।

ইউসুফ হায়দার বলেন, কেবল নৈতিক স্খলন হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের চাকরি যায়। কিন্তু মুক্ত বুদ্ধি চর্চা ও বাকস্বাধীনতার জন্য চাকরি যাওয়ার সুযোগ নেই। তাকে অন্যয়ভাবে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ঢাবি প্রশাসন বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম।

কাদের গণি চৌধুরী বলেন, ড. মোর্শেদ জাতির একজন হীরার টুকরো। তাকে নিবন্ধ লেখার কারণে বহিষ্কার করা হয়েছে। এটা অন্যায় এবং বিধি বহির্ভুত। যত ষড়যন্ত্রই করুন জিয়ার অবদানকে অস্বীকার করা যাবে না। তিনি কতো বড়ো নেতা ছিলেন তার জানাযা নামাজে প্রমাণিত হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App