×

রাজধানী

চার কোটি টাকা আত্মসাত, প্রাণনাশের হুমকি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০১:১৯ পিএম

চার কোটি টাকা আত্মসাত, প্রাণনাশের হুমকি

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী। ছবি: ভোরের কাগজ।

একজন ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশীর প্রতারণার জালে আটকা পড়েছেন আরো ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশী পাঁচটি পরিবার। ইতালী প্রবাসী জনৈক লিটনের প্রতারণার খপ্পরে পড়ে চার কোটি টাকা খুইয়ে ৫টি পরিবার আজ নিঃস্ব ও আতঙ্কিত জীবন যাপন করছেন। তাদের পাওনা টাকা না দিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়িতেও শান্তিতে থাকতে দিচ্ছেনা। প্রতারক লিটনের এই অপকর্মে ওই পাঁচ পরিবার সর্বস্ব হারিয়ে অসহায় ও মানসিকভাবে ইতালিতে চরম হতাশার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন।

সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রতারণার শিকার শেখ আমিনুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন দেলোয়ার হোসেন খান ও এম ডি তুহিন খান।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি ঢাকার বিক্রমপুরের ছেলে। প্রায় ২০ বছর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকার মোহাম্মদ লিটন এর সাথে ইতালীর ভিসেন্সা শহরে পরিচয় হয় আমি ও আমার ছোট ভাই জাহিরুল ইসলামের সঙ্গে। আমরা প্রায় ২০ বছর যাবত ইতালীতে বসবাস করছি। সেই সূত্রে ২০১৫ সালে রোমে হোটেল ব্যবসায় বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেয় লিটন। পরামর্শ মতে, আমরা দেশের সকল জমি এবং থাকার বাড়ি বিক্রয় করে লিটনকে তিন বারে মোট ৪ লাখ ইউরো (৪ কোটি টাকা) নগদ প্রদান করি। আমরা পাঁচ পরিবার মিলে এই টাকাগুলো লিটনকে দিই। এ টাকার বিনিময়ে ইতালীর রাজধানী রোমের টেরমিনির ভিয়া মাজ্জেনটা- ১৩ এ ঠিকানায় অবস্থিত ৩০ রুমের একটি থ্রি স্টার হোটেল ‘জর্জি’ এর ৫০ শতাংশ শেয়ার, একই সাথে রোমে একটি রেস্টুরেন্ট, ঢাকার মানিকদিতে ‘স্বপ্নচূড়া বিল্ডার্স’ এ মেয়ার হোল্ডার, উত্তরাতে একটি রেস্টুরেন্ট এবং ময়মনসিংহে একটি ইটভাটায় পার্টনার রাখার প্রতিশ্রুতি দেয় লিটন।

কিন্তু বাস্তবে আমাদের পাঁচটি পরিবারের সরল বিশ্বাসের সাথে লিটন চরমভাবে প্রতারনা করে। পুরো চার কোটি টাকা নিয়ে সব লিটন তার নামে লিখে নেয়। এক পর্যায়ে প্রতারণার ঘটনা জানতে পেরে আমরা পাঁচ পরিবার তার কাছে পাওনা টাকা দাবি করি। কয়েক বছর ঘুরেও টাকা না পেয়ে ইতালীতে আইনের আশ্রয় নিই। ইতালীর কোর্ট এক মাসের মধ্যে চার কোটি টাকা পরিশোধ করার জন্য লিটনকে নির্দেশ দেয়। কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও লিটন অদ্যবধি কোনো টাকা পরিশোধ করেনি। বিষয়টি রোমের সকল বাংলাদেশী কমিউনিটি ও রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসকে অবহিত করি। বাংলাদেশ দূতাবাস সকল ডকুমেন্ট ইতালীর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে।

এখন পাওনা টাকা চাইতে গেলে লিটন আমাদেরকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। একই সঙ্গে সরকারের মন্ত্রী, এমপির সঙ্গে তার ছবি দেখিয়ে ভয়ভীতি দেখায়। এতে আমরা পাঁচ পরিবার ইতালীতে আতঙ্ক এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

আমিনুল বলেন, আমরা জানতে পারি, প্রতারক লিটন আমরা ছাড়াও দেশের অসংখ্য লোকের কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজের নামে ইতালী ও বাংলাদেশে বিপুল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। লিটনের এসব অপকর্মের কারণে ইতালী আওয়ামী লীগ হাইব্রীড হিসেবে চিহ্নিত করে দল থেকে তাকে বহিষ্কার করে। ইতোমধ্যে ইতালীতে ৮টি মামলা হয়েছে লিটনের নামে। শারিরীকিভাবে লাি ত হয়েছে একাধিকবার। এসব অপকর্মের বিচার দাবি করে রোমে সামাজিকভাবে তাকে বয়কট করা হয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমরা ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App