×

সারাদেশ

মৃত নারীকে জীবিত দেখিয়ে দলিল নিবন্ধন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৭:১৮ পিএম

মৃত নারীকে জীবিত দেখিয়ে দলিল নিবন্ধন

দলিল/ ফাইল ছবি

বাউফলে মৃত্যুর ২৪ দিন পর রেহেনা বেগম (৫৭) নামের এক নারী স্ব-শরীরে রেজিস্ট্রি অফিসে হাজির হয়ে জমি দলিল করে দিয়েছেন। এ ঘটনায় একদিকে যেমন রেজিস্ট্রি অফিসের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তেমনি চাঞ্চল্যও সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে ওই নারীর এক ওয়ারিশ দলিল বাতিল চেয়ে পটুয়াখালী সহকারি জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যিনি সম্পর্কে ওই নারীর চাচাতো ভাই।

সূত্র জানায়, বাউফলের মদনপুরা ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামের ফজলুল হক সিকদারের ছেলে আলতাফ হোসেন সিকদারের স্ত্রী রেহেনা বেগম। স্বামী আলতাফ হোসেন ২০১১ সালে মারা যান। তাদের কোন সন্তান ছিল না। মদনপুরা ইউনিয়ন পরিষদের মৃত্যু রেজিস্ট্রার ও সনদ অনুযায়ী রেহেনা বেগম ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর মারা গেছেন। তাদের সব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির ওয়ারিশ তিন চাচাতো ভাই। কিন্তু ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর রেহেনা বেগম স্ব-শরীরে বাউফল সাব রেজিস্ট্রি অফিসে হাজির হয়ে কেমবপুর ইউনিয়নের ভরিপাশা গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে ৬৯/২০১৯ নম্বর দলিল মূলে চন্দ্রপাড়া মৌজার ৫০ শতাংশ এবং ৭০/২০১৯ নম্বর দলিল মূলে ভরিপাশা মৌজার ২৪ শতাংশ জমি লিখে দেন। তবে সাইফুল ইসলাম ওই নারীর কোনো ওয়ারিশ নয়। মদনপুরা ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত ওয়ারিশেও সাইফুল ইসলামের নাম নেই।

বাউফল সাব রেজিস্ট্রি অফিস সূত্র জানায়, জমির দলিল নিবন্ধনের নিয়মানুযায়ী দলিলদাতাকে সাব-রেজিস্ট্রারের সামনে স্ব-শরীরে উপস্থিত থেকে হলফনামায় সহি স্বাক্ষর দিতে হয়। এমনকি দলিলেও দাতা ও গ্রহিতার ছবিযুক্ত স্বাক্ষর থাকতে হয়।

মদনপুরা ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম বলেন, রেহেনা বেগম ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর মারা গেছেন যা এলাকার সবাই জানে। সে অনুযায়ী, তার ওয়ারিশ তিন চাচাতো ভাই আবুল হোসেন, একেএম শফিউল আলম, মামুন হোসেনকে মৃত্যু সনদ দেয়া হয়েছে। মারা যাওয়ার ২৪ দিন পর কীভাবে তিনি দলিল দিলেন সেটা আমার বোধগম্য নয়। এমন জাল-জালিয়াতির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

ওয়ারিশ মামুন হোসেন বলেন, রেহেনা বেগম মারা যাওয়ার আগে আমরাই তাকে দেখভাল করতাম। জমিও আমরা চাষাবাদ করতাম। সম্প্রতি জানতে পারি সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে রেহেনা বেগম অছিয়াতনামা দলিল দিয়েছেন। পরে খোঁজ নিয়ে দেখি, মারা যাওয়ার ২৪ দিন পর দলিল দিয়েছেন। পরে সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে ওই দলিলের সই মোহর উঠিয়ে দলিল বাতিল চেয়ে ২০ আগস্ট পটুয়াখালীর বাউফল সহকারি জজ আদালতে মামলা করেছি।

বাউফলের সাব-রেজিস্ট্রার কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাউফলে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। জমিদাতাকে অবশ্যই সাব-রেজিস্ট্রারের সামনে উপস্থিত থাকতে হবে। কোনভাবেই মৃত্যু ব্যক্তি জমি দাতা হতে পারবেন না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App