×

সাহিত্য

বিদ্যাসাগরের মধ্যে বেদনা ছিল নিপীড়িতের জন্যে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:১৩ পিএম

বিদ্যাসাগরের মধ্যে বেদনা ছিল নিপীড়িতের জন্যে

বক্তব্য রাখছেন একক বক্তা অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল।

বিদ্যাসাগরের মধ্যে বেদনা ছিল নিপীড়িতের জন্যে

বাংলা একাডেমির বিদ্যাসাগর দ্বিশত জন্মবর্ষ উদ্যাপন

বিদ্যাসাগরের মধ্যে বেদনা ছিল নিপীড়িতের জন্যে

‘পড়ি বঙ্গবন্ধুর বই, সোনার মানুষ হই’ শিরোনামে জাতির পিতার রচনা পাঠ কার্যক্রম নিয়ে মতবিনিময়।

বিদ্যাসাগরের মধ্যে যে করুণা-দায়-বেদনা ছিল নিপীড়িতের জন্যে, নারীর দুঃখজর্জর শাস্ত্রধর্মশাসিত জীবনের জন্যে তাদের সঙ্গে সমানুভূতি হওয়ার মধ্য দিয়ে তাঁর যে কর্মানুশীলন সেটি আজ আমাদের মননবুদ্ধিতে চর্চা করা প্রয়োজন।

রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ‘রবীন্দ্রদৃষ্টিতে বিদ্যাসাগরের চরিতাখ্যান: আপন হতে বাহির হয়ে’ শীর্ষক বক্তৃতায় একক বক্তা অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল এসব কথা বলেন। বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

বেগম আকতার কামাল বলেন, রবীন্দ্রমতে, ‘বিদ্যাসাগর এই বঙ্গ দেশে একক ছিলেন। তাঁর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো অজেয় পৌরুষ; তাঁর অক্ষয় মনুষ্যত্ব’। এই মানুষধর্মই বিদ্যাসাগরের মননক্রিয়ায় ও কর্ম সক্রিয়ায় উদ্ভাসিত। তিনি বলেন, সমানুভূতিই পারে নিজেকে আত্মকেন্দ্র থেকে বের করে এনে অন্যের বেদনাকে উপলব্ধির মধ্যে আনতে। ফলে তখন মানুষ তৎপর হয় আপন-পর ভেদ ঘুচিয়ে মুক্ত মানুষ হতে। রবীন্দ্রনাথের বিদ্যাসাগরের চরিতাখ্যান এটাই জানায় যে, আত্মকেন্দ্রিক স্বার্থপরতা থেকে মুক্ত থাকাটাই হচ্ছে আত্মস্বাধীনতা অর্জনের চাবিকাঠি। এই অর্জনই অপর মানুষকে নিয়ে শুভ কল্যাণময় সমাজ গড়ে তুলতে পারে।

[caption id="attachment_244290" align="aligncenter" width="1280"] বাংলা একাডেমির বিদ্যাসাগর দ্বিশত জন্মবর্ষ উদ্যাপন[/caption]

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, বিদ্যাসাগর খণ্ডিত রেনেসাঁর প্রতিভূ ছিলেন না। তাঁর নবজাগরণ-চিন্তা কেবল উপরতলার বিশিষ্টদের জন্য ছিলনা বরং তা ছিল শ্রেণি-নিরপেক্ষ। তাঁর ভাষা-সাহিত্য-শিক্ষাচিন্তা কিংবা নারীভাবনা কোনোটাই কোনো বিচ্ছিন্ন প্রপঞ্চ ছিল না। বরং একটি কেন্দ্রীয় চিন্তাকাঠামোয় তিনি গোটা অনগ্রসর বঙ্গসমাজকে পরিবর্তন করতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, জীবদ্দশায় এবং এখনও বিদ্যাসাগরকে ভ্রান্ত ব্যাখ্যার বেড়াজালে আবদ্ধ করা হচ্ছে। কিন্তু তাঁর অনন্য জীবন এবং অসাধারণ সৃজন-উভয়ের মধ্য দিয়ে তিনি জন্মের দু’শ বছর পেরিয়ে আজও সমান প্রাসঙ্গিক, সমান দীপ্যমান।

স্বাগত বক্তব্যে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এক বহুমাত্রিক সৃজনপ্রতিভা; বাংলা গদ্যের জনক, নারীহিতৈষী, পরহিতব্রতী, শিক্ষাসাধক, সমাজ-সংস্কারক, সাহিত্যিক, সর্বোপরি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অবিস্মরণীয় মানবপূজারি। এই অসামান্য মনীষার দ্বিশত জন্মবর্ষে আমরা বাংলা একাডেমি পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা, বিদ্যাসাগর স্মারকগ্রন্থ এবং তাঁর রচনাবলি প্রকাশের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এসব বাস্তবায়িত হলে আমরা তাঁর প্রতি বাঙালি জাতির ঋণ স্বীকারের পথে কিছুটা হলেও অগ্রসর হতে পারবো নিঃসন্দেহে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির সহপরিচালক সায়েরা হাবীব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App