×

জাতীয়

বিজয় দিবসেই রাজাকারদের ‘আংশিক’ তালিকা প্রকাশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৫:১৪ পিএম

বিজয় দিবসেই রাজাকারদের ‘আংশিক’ তালিকা প্রকাশ

জাতীয় সংসদে সংশ্লিষ্ট কমিটির বৈঠকে শাজাহান খান

আগামী বিজয় দিবসের আগেই একাত্তরের রাজাকারদের ‘আংশিক’ তালিকা প্রকাশ করার উদ্যোগ নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় উপ-কমিটি। উপকমিটি এরই মধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কমিটির সভাপতি ও উপ-কমিটির আহ্বায়ক শাজাহান খান।

রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে সংশ্লিষ্ট কমিটির বৈঠকের পরে তিনি এ তথ্য জানান। কমিটির সভাপতি শাজাহান খান বলেন, রাজাকারের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে, কিছু তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। আগামী ৭-১০ দিনের মধ্যে উপ কমিটি একটা মিটিং করবে। আশা করছি আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে আংশিক তালিকা প্রকাশ করতে পারবো। পর্যায়ক্রমে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ৯ অগাস্ট রাজাকারের তালিকা তৈরি করতে ছয় সদস্যের এই উপ-কমিটি গঠন করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কয়েকটি রাজনৈতিক দল পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষ নিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামী অন্যতম। তখন যুদ্ধরত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতাকারী এই বাহিনীগুলোকে সাধারণ অর্থে রাজাকার বাহিনী হিসেবেই পরিচিত বাংলাদেশে। এসব বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সমর্থনে ব্যাপক যুদ্ধাপরাধ ঘটায়।

প্রায় এক দশক আগে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর রাজাকারের তালিকা তৈরির দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর বিজয় দিবসের আগের দিন সংবাদ সম্মেলন করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী ১০ হাজার ৭৮৯ জন ‘স্বাধীনতাবিরোধীর’ তালিকা প্রকাশ করেন। কিন্তু ওই তালিকায় গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের নাম আসায় ক্ষোভ আর সমালোচনার প্রেক্ষাপটে সংশোধনের জন্য ওই তালিকা স্থগিত করা হয়। এ বছর জানুয়ারি মাসে সংসদেও এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে। খোদ সরকারি দলের সদস্যরাই এ নিয়ে মন্ত্রী সমালোচনায় মুখর হন। সেসময় নতুন করে তালিকা তৈরির কথাও জানান মন্ত্রী ।

সে কারণে রাজাকারদের তালিকা সঠিকভাবে তৈরির জন্য একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। এ উপকমিটির আহ্বায়ক করা হয় কমিটির সভাপতি ও সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানকে। এদিকে রবিবারের বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে একটি সংসদীয় উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সংগঠন এবং একজন মুক্তিযোদ্ধার পৃথক আবেদনের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়ে এ উপ-কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সভাপতি শাহাজাহান খানকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন কাজী ফিরোজ রশীদ ও মোসলেম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।

খেতাবপ্রাপ্ত শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদ্য সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ওসমান গণি কমিটির কাছে লিখিত আবেদন করে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি মো. ইফতেখারুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানান। চিঠিতে তারা এমডির বিরুদ্ধে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতাসহ’ নানা দুর্নীতির অভিযোগ করেন।

বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, কাজী ফিরোজ রশীদ এবং মোছলেম উদ্দিন আহমদ অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্ত সম্মানী পর্যালোচনাপূর্বক অপ্রতুল বলে মনে করেন কমিটি। মুক্তিযোদ্ধাগণ যেন আরেকটু স্বচ্ছলভাবে জীবন যাপন করতে পারেন সে লক্ষ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী বৃদ্ধি করে মোট বিশ হাজার টাকা করার সুপারিশ করা হয়। সকল প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের নামের পূর্বে ‘বীর’ শব্দটি ব্যবহার সংক্রান্ত সচিব কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকসহ মুক্তিযোদ্ধাদের যোগাযোগ রয়েছে এমন সব প্রতিষ্ঠানে প্রদান করার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App