×

সাহিত্য

তিনটি বই পড়লে সত্যিকার অর্থে বাঙালি হওয়া যায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৭:২৬ পিএম

তিনটি বই পড়লে সত্যিকার অর্থে বাঙালি হওয়া যায়

জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের মতবিনিময় সভা

তিনটি বই পড়লে সত্যিকার অর্থে বাঙালি হওয়া যায়

জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের মতবিনিময় সভা

বঙ্গবন্ধুর তিনটি বইয়ের মধ্যে বাংলাদেশের একশ বছরের ইতিহাস আছে। একশ বছরের রাজনীতি আছে, সমাজনীতি আছে, অর্থনীতি আছে। তিনটি বই পড়ার মধ্য দিয়ে একজন মানুষ সত্যিকার অর্থে বাঙালি হয়ে উঠতে পারে। একজন মানুষ সত্যিকারভাবে অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শক্তি পাবে। জাতির পিতার লেখা গ্রন্থসমূহ নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। এসব বই পাঠ করে দেশপ্রেমের দীক্ষা নিতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তাই বঙ্গবন্ধুর রচনা পাঠ কার্যক্রম সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের সভা কক্ষে আয়োজিত জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘পড়ি বঙ্গবন্ধুর বই, সোনার মানুষ হই’ শিরোনামে জাতির পিতার রচনা পাঠ কার্যক্রমের উপদেষ্টামণ্ডলীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গ্রন্থাগারসমূহের প্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক, কবি মিনার মনসুরের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম। স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের উপ পরিচালক সুহিতা সুলতানা। উপস্থিত ছিলেন পাঠ কার্যক্রমে অংশ নেওয়া ১০টি লাইব্রেরি সীমান্ত গ্রন্থাগার, গ্রন্থবিতান, দনিয়া পাঠাগার, অনির্বাণ পাঠাগার, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি পাঠাগার, বুকল্যান্ড লাইব্রেরি, শহীদ রুমি স্মৃতি পাঠাগার, সৃষ্টি পাঠোদ্যান, শহীদ বাকী স্মৃতি পাঠাগার, তাহমিনা ইকবাল পাবলিক লাইব্রেরির কর্মকর্তারা। বই পড়া কার্যক্রম প্রকল্পের মধ্য দিয়ে গ্রন্থকেন্দ্র তাদের চিন্তার বিস্তার ঘটিয়েছে, যদিও এতে বেশি কুশীলব নেই এমন মন্তব্য করে মফিদুল হক বলেন, ঢাকা মহানগরী একটা বিশাল ব্যাপার। যেখানে এক কোটির ওপরে মানুষ। দশটা লাইব্রেরী সেখানে কিছুই না। বুদ্বুদের মতো মিলিয়ে যাবে মনে হবে। কিন্তু দশটা পাঠাগার যে কাজটা করছে তা মিলিয়ে যাবার নয়। বরং একটা মশাল থেকে আরেকটা মশালে আলো জ্বালানোর কাজ করবে। এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে ঘুমন্ত লাইরেরিগুলো জাগিয়ে তুলছে। পাড়ায় পাড়ায় সাড়া পড়ছে। এটা অসাধারন ঘটনা। এই ঘটনার সঙ্গে অনেকগুলো দিক জড়িত। তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি কথাটা যখন উচ্চারিত হয়, তার পেছনে যে গভীরতা, ব্যক্তিসত্তা এর মধ্য দিয়ে তিনি গোটা জাতির সত্তার প্রতীক হয়ে উঠেছেন, জাগিয়ে তুলেছেন এবং শক্তি যুগিয়েছেন। এসব জানতে এবং বুঝতে অনেক অনেক মাত্রা প্রয়োজন। কিন্তু একাত্তরে এবং পঁচাত্তরে যে নৃশংসতা আমরা দেখেছি। এর মধ্য দিয়ে তার নাম মুছে ফেলাই ছিল তাদের লক্ষ্য। অথচ তিনি থেকে গেলেন এবং জেগে উঠলেন। [caption id="attachment_244279" align="aligncenter" width="1280"] জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের মতবিনিময় সভা[/caption] সেলিনা হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সামাজিকভাবে জানার চেষ্টা করতে হবে। ৭ই মার্চের ভাষনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু যে আন্তর্জাতিক পরিসর তৈরী করে গেছেন। সেই বাঙালিত্বের চেতনা শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সিলেটের এমসি কলেজের ঘটনায় যে কোনো ছাত্র নিজেকে ছাত্র পরিচয় দিতে লজ্জা বোধ করবে। এসব ছেলেরা যে সংগঠন করছে তাদের বড় দায়িত্ব তাদের বিচারের কাটগড়ায় দাঁড় করানো। তা হয়নি বলেই আজ মূল্যবোধের এমন অবক্ষয় দেখতে হলো। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই। এটা মুখে বললে হবে না। প্রকৃত অর্থে সোনার মানুষ হওয়া কঠিন। এটা নতুন প্রজন্মকে শেখাতে হবে। সোনার মানুষ স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হবে এবং বাংলাদেশকে জানতে হলে পাঠ করতে হবে বঙ্গবন্ধুর তিনটি বই। সাইফুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধুর বই পড়ে একজন মানুষ আত্মপরিচয় ফিরে পেতে পারে। শোষন বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা পাবে। একজন মানুষ যদি তিনটি বই পড়ে এবং উপলদ্ধি করে জীবনাচারে অনুসরণ করার চেষ্টা করে তাহলে বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার মানুষ গড়ার সোনার মানুষগুলো চেয়েছিলেন, সেটি আমরা ফিরে পাবো সত্যিকার অর্থে। মিনার মনসুর বলেন, মুজিব বর্ষ এবং স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীকে স্মরণীয় করে রাখতে বই পড়া কর্মসূচি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। যার লক্ষ্য, গৃহবন্দি পাঠক, বিশেষ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পাঠ্যবইবহির্ভূত সৃজনশীল ও মননশীল বই পৌঁছে দেয়া।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App