অপার সম্ভবনা থাকা সত্ত্বেও ২৮ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি ভোলার ক্ষুদ্র কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্প নগরী। গড়ে ওঠেনি উল্লেখযোগ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান। অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও অব্যবস্থাপনার অভাবে মুখ থুবরে পড়েছে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটি দিনের বেলায় গরু ছাগলের বিরানভূমি। আর রাতের বেলায় মাদকসেবীদের দখলে।

[caption id="attachment_244146" align="alignnone" width="960"] নগরীটি পরিণত হয়েছে গরু-ছাগলের বিরানভূমিতে[/caption]

অন্যদিকে প্লট দখল, রাস্তাঘাট, গ্যাস সংযোগ স্থাপন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব ও বহিরাগতদের নগ্ন হস্তক্ষেপে আস্থা হারাচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। বিসিক কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও অনিয়মকেও দায়ী করছেন উদ্যোক্তরা। ফলে সব সম্ভবনার দ্বার নিস্তেজ হয়ে এক ভুতুরে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে ভোলার ক্ষুদ্র কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্প নগরী।

[caption id="attachment_244147" align="alignnone" width="1280"] অবকাঠামোগত উন্নয়নে রয়েছে অব্যবস্থাপনা[/caption]

সূত্রমতে, ভোলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও শিল্পায়নের লক্ষ্যে শহরের খেয়াঘাট সড়কের চৌমুহনী এলাকায় ১৯৯২ সালে ১৪ দশমিক ৪৫ একর জমিতে গড়ে তোলা হয় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরী। ৯৩টি প্লটের মধ্যে বরাদ্দ হয়েছে ৭১টি। অথচ গড়ে ওঠে মাত্র ৯টি শিল্প প্রতিষ্ঠান, যার মধ্যে চালু আছে মাত্র ৫টি। বাকি প্লটগুলো দখল করে আছে এক শ্রেণির প্রভাবশালী চক্র। ফলে নতুন উদ্যোক্তা হারাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। যার ফলে প্রতিষ্ঠার ২৮ বছরেও গড়ে উঠেনি প্রত্যাশিত কর্মসংস্থান। এর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিল্প মালিকরা।

[caption id="attachment_244148" align="alignnone" width="960"] স্থবির দৃশ্যমান উন্নয়ন[/caption]

বিসিক শিল্প এলাকার মূল ফটক থেকে শুরু করে দেড় কিলোমিটার রাস্তাই খানাখন্দে ভরা, সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু সমান পানি। সবুজবেষ্টিত গাছগুলো আগের মত নেই, গরু ছাগলের বিচরণের ফলে বর্জের দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। স্থানীয় বালি ও পাথরের ব্যবসায়ীদের কারণে রাস্তার পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। এর থেকে উত্তরণের পথ খুঁজছেন শিল্প মালিকেরা।

[caption id="attachment_244149" align="alignnone" width="1280"] প্রতিষ্ঠানটির অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় বিনিয়োগ হারাচ্ছে উদ্যোক্তরা[/caption]

শিল্পদ্যোক্তরা বলছেন, বিসিক কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর আমাদের কাছ থেকে সার্ভিস চার্জ নিলেও আমাদের জন্য কোন সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করছে না। দিনের বেলায় এখানে আসতে পারলেও রাতের বেলায় একেবারেই অসম্ভব। শিল্পনগরীতে বিদ্যুৎব্যবস্থা না থাকায় সন্ধ্যা হতেই অন্ধকারে ছেঁয়ে যায়। এই সুযোগে শহরের মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য পরিণত হয় গোটা বিসিক শিল্প এলাকা। এছাড়া নেই সীমানা দেয়ালও। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বিসিক এলাকার মালিক-শ্রমিকেরা।

[caption id="attachment_244150" align="alignnone" width="1280"] চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে নগরীর রাস্তাটি[/caption]

ভোলা বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. সোহাগ হোসেন বলেন, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। অচিরেই বিসিক শিল্প নগরীর সব সমস্যা সমাধান হবে।

[caption id="attachment_244151" align="alignnone" width="1280"] নেই কর্মচাঞ্চল্য[/caption]

ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা সকল ধরনের সমস্যা নিরসণের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। আশা করছি অচিরেই সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।