×

জাতীয়

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৪৭ এএম

মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে স্থানীয় সরকারের সব ধরনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির, সেই সঙ্গে করোনা মহামারির প্রকোপও কিছুটা কম বিধায় এবার স্থানীয় সংস্থাগুলোর নির্বাচনের জোর প্রস্তুতি নিতে চলেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাছাড়া দেশের অধিকাংশ পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। এসব স্থানীয় সরকারের তৃণমূল পর্যায়ের সংস্থাগুলোর নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে শেষ করার প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে কাজ করছেন ইসির তৃণমূলের কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে প্রতিটি স্থানীয় সরকারের সংস্থাগুলোর নির্বাচনী পরিবেশ, চ্যালেঞ্জ, বন্যার ফলে ভোটগ্রহণের প্রতিবন্ধকতা, ভোটকেন্দ্রসহ ভোট গ্রহণের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচনী কর্মকর্তাদের অতিদ্রুত রিপোর্ট পাঠাতে বলেছে ইসি সচিবালয়।

ইসি সূত্র জানিয়েছে- দেশের চার হাজারেরও বেশি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও আড়াই শতাধিক পৌরসভার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে। মেয়াদ শেষের ৯০ দিনের মধ্যে এসব তৃণমূল পর্যায়ের নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে কমিশন।

এ বিষয়ে ইসি সচিব মো. আলমগীর বলেন, কমিশন সভার সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাস থেকে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের তফসিল দেয়া শুরু করা হবে। আগামী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে বাকি পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচন শেষ করা হবে।

তিনি জানান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই নির্বাচনের তফসিল দেয়া হবে। তবে এবার স্থানীয় সরকারের এসব নির্বাচন একদিন না করে একাধিক দিনে অনুষ্ঠিত করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। করোনাকালে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে ইতোমধ্যে সংসদীয় শূন্য আসনের উপনির্বাচন হচ্ছে। সেখানে ভোটাররা মোটামুটি ভালো সাড়া দিয়েছেন। সে কারণে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনও সময়মতো করতে চায় ইসি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে দেশে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। এরমধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় পাঁচ শতাধিক ইউপিতে ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট করতে হবে। বাকি ৪ হাজারের মতো নির্বাচন আগামী বছরের মার্চ থেকে এপ্রিলের মধ্যে কয়েক ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। তবে করোনার কারণে স্থানীয় সরকারের স্থগিত ১১৫টি নির্বাচন এবং অপসারণ, পদত্যাগ, মৃত্যু ও মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে নির্বাচন উপযোগী ১৮৭টি জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের তফসিল আগামী অক্টোবর বা নভেম্বর মাস থেকেই দেয়া শুরু হবে। করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব নির্বাচন হবে।

সর্বশেষ পৌরসভার সাধারণ নির্বাচনটি হয়েছিল গত ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে। এ সময় যে পৌরসভাগুলোর ভোট হয়েছিল তার বেশির ভাগের মেয়র ও কাউন্সিলররা পরের বছর ২০১৬ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি শপথ নেন। আর ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ হিসাবে আগামী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসব পৌরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। পৌরসভা আইন অনুযায়ী, পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ হিসাব অনুযায়ী যেসব পৌরসভার মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে সেগুলোতে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট করতে হবে।

এদিকে, নির্ধারিত সময়ের ৪০ থেকে ৪৫ দিন হাতে রেখে এসব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে ইসিকে। এজন্য মাঠ পর্যায় থেকে তালিকা সংগ্রহ করা, নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধকতা ও সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা খতিয়ে দেখার নির্দেশনা চিহ্নিত করতে মাঠ কর্মকর্তাদের রিপোর্ট পাঠাতে বলেছে ইসি সচিবালয়।

এদিকে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নিয়ে করোনার মধ্যেও সরগরম তৃণমূল পর্যায়। কে চেয়ারম্যান বা মেয়র প্রার্থী হবেন তা নিয়ে চলছে দরকষাকষি। বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে লবিংও শুরু করেছেন। অনেক এলাকায় দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ব্যানার বা শুভেচ্ছা বার্তাও প্রদর্শন করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে চলতি বছরের শেষ হতে আগামী বছরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের এ তৃণমূলের ভোট নিয়ে মাঠ বেশ উত্তপ্ত থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App