×

সারাদেশ

আমদানির অপেক্ষায় ওপারে ট্রাকে থেকে পচছে পেঁয়াজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৫৪ এএম

আমদানির অপেক্ষায় ওপারে ট্রাকে থেকে পচছে পেঁয়াজ

ফাইল ছবি।

পুরনো এলসির আটকে পড়া পেঁয়াজ ছাড়ে জটিলতায় আমদানি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ফলে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় ট্রাকে থাকা পেঁয়াজ পচে নষ্ট হচ্ছে। পেঁয়াজ আমদানিতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়ায়, টানা ১২ দিন ধরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় বিভিন্ন বেসরকারি পার্কিং আর সড়কে প্রায় শতাধিক পেঁয়াজবোঝাই ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। দ্রুত এসব ট্রাক ছাড় করাতে না পারলে আবারো নতুন করে ক্ষতির শিকার হবেন আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা।

এদিকে, বাংলাদেশি আমদানিকারকরা তাদের ভারতীয় রপ্তানিকারক প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পুরনো এলসির আটকে পড়া পেঁয়াজ ছাড়করণে বারবার আবেদন জানালেও এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি। ফলে দেশে পেঁয়াজ আমদানি অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজ সংকট দেখা দেয়ায় দাম আবারো বেড়ে চলেছে। গতকাল শুক্রবার সকালে পাইকারি বাজারে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা আর খুচরা বাজারে তা ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। ভারত থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ অর্ধেক নষ্ট হওয়ায় বাজারে দাম বেড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

পেঁয়াজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান শেখ ট্রেডার্সের শেখ মাহাবুব বলেন, প্রতি বছর পেঁয়াজ নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড হয়। ভারত কখনো উৎপাদন সংকট দেখিয়ে আবার কখনো রপ্তানিমূল্য তিনগুণ বাড়িয়ে আমদানি বন্ধ করতে বাধ্য করেন তারা। এক্ষেত্রে সংকট মোকাবিলায় ভারত ছাড়াও বাইরের কিছু দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের আহŸান জানান সরকারের প্রতি। বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সভাপতি মহাসিন মিলন বলেন, তারা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছিলেন কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে এ পথে আমদানি অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পেঁয়াজ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম রয়েল নামে এক ব্যবসায়ী জানান, বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ওপারের বিভিন্ন পার্কিংয়ে হেফাজতে তাদের প্রায় শতাধিক ট্রাক পেঁয়াজ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক ট্রাকের পেঁয়াজে পচন ধরেছে। নিষেধাজ্ঞার আগেই এসব ট্রাক বন্দর এলাকায় পৌঁছেছিল। দ্রুত এসব ট্রাক না ছাড়লে আবারো নতুন করে তারা লোকশানে পড়বেন।

স্থানীয় বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতারা জানান, ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি কম। আর যা আসছে তা অর্ধেক বস্তায় পচা পাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য বাজারে দাম কমছে না। বাইরে থেকে আমদানি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত একরম বাজার অস্থিতিশীল থাকবে মনে হচ্ছে। বেনাপোল বন্দরের

উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সংকট দেখিয়ে গত ১৪ সেপ্টেবর থেকে বাংলদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এ পর্যন্ত কোনো পেঁয়াজের ট্রাক দেয়নি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। দিবে কিনা তাও নিশ্চিত জানাতে পারেনি। তবে এপথে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে অন্যান্য পণ্যের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক আছে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০ দিনে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৫৪৪ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য। তবে এসব পণ্যের মধ্যে কোনো পেঁয়াজের ট্রাক ছিল না। একই সময়ে ভারতে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ২৭ ট্রাক। এসব রপ্তানি পণ্যের মধ্যে ৬৭ ট্রাক ছিল পদ্মার ইলিশ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App