×

সারাদেশ

তিন দশকেও বাঁশের সাঁকো হয়ে উঠেনি সেতু

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৫:২৪ পিএম

তিন দশকেও বাঁশের সাঁকো হয়ে উঠেনি সেতু

দেড়শত ফুট দীর্ঘ এই সাঁকোটি নির্মাণের বয়স প্রায় ৩০ বছর। ছবি: প্রতিনিধি

তিন দশকেও বাঁশের সাঁকো হয়ে উঠেনি সেতু

ছবি: প্রতিনিধি

ভোটে পাস করার পর জনপ্রতিনিধিরা ভুলে যান সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি

লক্ষ্মীপুরের রামগতির চরবাদাম ইউনিয়নের ভূলুয়া নদীর উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি ত্রিশ বছর পরও সেতুর মুখ দেখেনি। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার মানুষ চলাচল করে। নড়বড়ে সাঁকোটি সেতুর মুখ দেখবে- জনপ্রতিনিধিরা বারবার এমন প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ১৮ শতকের সত্তর দশকে ভূলুয়া নদীর উপর দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা মহাজনী নৌকা-জাহাজ এখানে নোঙর করত। সেই থেকে এই জায়গাটির নাম দেনা মাঝির খেয়া হিসেবে পরিচিত। এলাকাবাসীর অর্থায়নে নির্মিত দেড়শত ফুট দীর্ঘ এই সাঁকোটি নির্মাণের বয়স প্রায় ৩০ বছর। দুর্গম এ অঞ্চলটিতে বসবাসরত প্রায় দুই শতাধিক বাড়ি-ঘরের বৃদ্ধা বণিতাসহ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এই দেনা মাঝির বাঁশের সাঁকোটি।

স্থানীয়রা জানায়, বাদামতলি, বটতলি, জুগিগো সমাজের কয়েক হাজার মানুষ চরকাদিরা ফজুমিয়ার হাট, করুনানগর বাজার, জমিদারহাট ও আলেকজান্ডার বাজার প্রবেশের একমাত্র সংযোগ সাঁকো এটি। সাঁকোটির ওপাড়ে হাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরজগবন্ধু সফিগঞ্জ দাখিল মাদ্রাসা। শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন সাঁকোটি পাড় হতে হয়। এছাড়া কৃষকের ফলানো ফসল ঘরে তুলতে পারাপারে দূর্ভোগের অন্ত নেই।

এ বিষয়ে শিক্ষক আব্দুর রহিম বলেন, গ্রামের মানুষ চাঁদা তুলে আড়াই যুগ ধরে সাঁকোটি মেরামত করে আসছে। বর্তমানে সাঁকোটি জরাজীর্ণ হয়ে আছে। একটি সেতুর অভাবে প্রসূতি মায়েদেরকে হাসপাতালে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া অসুস্থ ও মৃতদেহ আনা-নেয়াটাও চরম কষ্টসাধ্য।

[caption id="attachment_243851" align="aligncenter" width="700"] ছবি: প্রতিনিধি[/caption]

চা দোকানি আব্দুল করিম বলেন, কেবলমাত্র নির্বাচন এলেই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা এখানে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। ভোটে পাস করার পর প্রতিশ্রুতির কথা কেউ মনে রাখে না।

শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান বলেন, সাঁকো পাড় হয়ে স্কুলে যেতে হয়। অনেক সময় আসা-যাওয়ার সময় পানিতে পড়ে যাই। পুরো দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। পল্লী গাঁয়ের প্রতিটি জায়গায় উন্নয়ন করছে সরকার। আমাদের দাবি, আমাদের এখানে দ্রুত একটা সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা করা হোক।

ষাটোর্ধ্ব মহসীন সর্দার বলেন, আমি সাঁকো পাড় হতে পারি না। ভয় লাগে, একদিন সাঁকো থেকে নিচে পড়ে গিয়েছিলাম।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস শহীদ বলেন, ভূলুয়া নদীর উপর একটি সেতু খুবই জরুরি। বিষয়টি নিয়ে অনেকবার সংশ্লিষ্টদের নিকট ধরনা দিয়েও কোন কাজ হয়নি।

চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন জসিম বলেন, ওই স্থানে সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) বরাবর আবেদন করা হয়েছে। আশা করি, দ্রুতই এর একটা ফল পাওয়া যাবে।

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোমিন বলেন, বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ওই স্থানে সেতু নির্মাণের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App