×

জাতীয়

শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণকাজ চলছে পুরোদমে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৪৪ এএম

শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণকাজ চলছে পুরোদমে

করোনাকালেও পুরোদমে এগিয়ে চলেছে শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণকাজ

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণের কাজ দ্রæত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তিন হাজার পাইলের মধ্যে গতকাল রবিবার পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৭০০ পাইল বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। মাটি ভরাট ও পাইলিং মিলিয়ে মোট কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮ শতাংশের বেশি। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) অন্য সব বড় প্রকল্পের তুলনায় এ প্রকল্পের অগ্রগতি সন্তোষজনক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশের প্রধান বিমানবন্দর ঢাকার শাহজালালের সক্ষমতা বাড়াতে এ প্রকল্পটি হাতে নেয় সরকার। ২০১৭ সালে প্রকল্পের জন্য ৪টি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয় বেবিচক। এরপর ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার ব্যয়ে নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০২৩ সালের জুনে এর নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে জাপানি দাতা সংস্থা জাইকা। জাপানের সিমুজি ও কোরিয়ার স্যামসাং কোম্পানি যৌথভাবে এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম (এডিসি) নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। শাহজালাল বিমানবন্দরে বর্তমানে যাত্রী হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি বছরে ৮০ লাখ এবং কার্গো হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি ২ লাখ টন। এরই মধ্যে কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতা শেষ হয়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে যাত্রী হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটিও ফুরিয়ে যাবে। থার্ড টার্মিনাল নির্মাণের পর শাহজালালে যাত্রী হ্যান্ডেলিং ক্ষমতা বছরে ২ কোটি এবং কার্গো হ্যান্ডলিং ক্ষমতা বছরে ৫ লাখ টনে উন্নীত হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণ এলাকায় বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। কয়েকশ শ্রমিক পাইলিংয়ের কাজে ব্যস্ত। মেশিনের সাহায্যে লোহার রিং তৈরি করে সেগুলো ঝালাই করে পাইলিংয়ের বিশাল বিশাল ফ্রেম তৈরি করা হচ্ছে। অন্যদিকে এক্সকাভেটর, ডাম্প ট্রাক ও রোলার দিয়ে মাটি ও বালু ভরাটের কাজ করছে অনেকে। পাঁচ কোটি ঘনফুটের মধ্যে দুই কোটি ঘনফুট বালু ও মাটি ভরাট করা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। বিদেশি প্রকৌশলীদের সঙ্গে দেশি প্রকৌশলীরাও এসব কাজের তদারকি করছেন। নির্মাণ এলাকায় একটি অস্থায়ী হাসপাতালও করা হয়েছে। কোনো শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে বা দুর্ঘটনার শিকার হলে তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে সেখানে। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারে ৩৭টি উড়োজাহাজ রাখার অ্যাপ্রোন ও ১ হাজার ২৩০টি গাড়ি রাখার সুবিধা, ৬৩ হাজার বর্গফুট জায়গায় আমদানি-রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্স এবং ১১৫টি চেক ইন কাউন্টার থাকবে। বহির্গমনে ৬৪টি ও আগমনী যাত্রীদের জন্য থাকবে আলাদা ৬৪টি ইমিগ্রেশন কাউন্টার। এছাড়া ২৭টি ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন, ১১টি বডি স্ক্যানার, ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ ও ১৬টি লাগেজ বেল্ট থাকবে এই টার্মিনালে। এছাড়াও রেসকিউ ও ফায়ার ফাইটিং স্টেশন, কানেক্টিং ট্যাক্সিওয়ে, র‌্যাপিড এক্সিট ট্যাক্সিওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার, এলিভেটেড রোড ও ফানেল টানেলও রয়েছে এই প্রকল্পে। এ বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান জানান, করোনা মহামারির কারণে বিশ্বে অনেক কিছুই থমকে গিয়েছে। কিন্তু এ প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলছে। শুরুর দিকে স্থাপনা অপসারণসহ কিছু বিষয়ে জটিলতা ছিল। তবে এখন আর সেগুলো নেই। তাই আশা করা যাচ্ছে, নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ হবে। এটি চালু হলে শাহজালাল বিশ্বের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ও সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন বিমানবন্দর হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App