×

সারাদেশ

বান্দরবানে শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জাল সনদ প্রদানের অভিযোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৩:৪৯ পিএম

বান্দরবানে শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জাল সনদ প্রদানের অভিযোগ

বান্দরবান জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক মঞ্জু

বান্দরবান জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক মঞ্জুর আহমেদ এর বিরুদ্ধে ঘনিষ্ঠ নারীকে নিজের অফিস স্টাফ বানিয়ে ভূয়া প্রত্যয়ন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্ত্রী’র পাওনা টাকা উদ্ধার করতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যুরো বাংলাদেশ থেকে ঋন পাইয়ে দিতে রুবি প্রু মারমা নামে ঐ নারীকে গত ৯ জানুয়ারি জাল প্রত্যয়ন সনদ প্রদান করেন সরকারী এ কর্মকর্তা। প্রত্যয়নে রুবী প্রু মারমা, স্বামী সুইথুইমং মারমা, মাতা ম্রানুপ্রু মারমা, সাং মধ্যম পাড়া ৫নং ওয়ার্ড বান্দরবান পৌরসভ, বান্দরবান পার্বত্য জেলা তিনি অত্র কার্যালয়ের ডিস্ট্রিক্ট প্রোগ্রাম অর্গানাইজার (ডিপিও)হিসেবে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন বলে উল্লেখ করা হয়। সহকারী পরিচালকের এই প্রত্যয়ন পত্র দিয়ে রুবি প্রু মারমা ব্যুরো বাংলাদেশ বান্দরবান শাখা হতে ৩ লক্ষ টাকা ঋন নিয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো বান্দরবান কার্যালয়ে রুবী প্রু মারমা নামে কোনো নারী কর্মরত নেই। ঘটনাটি জানাজানি হবার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বিষয়টি জানতে বৃহস্পতিবার গনামাধ্যমকর্মীরা জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক মঞ্জুর আহমেদের কার্যালয়ে গেলে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গেও অশোভন আচরণ করেন। এছাড়াও জাল সনদে ঋণ প্রদানকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দায়ের না করে নিজের কুকর্ম ঢাকতে সংবাদ প্রকাশে বাধা সৃষ্টি করার লক্ষে উল্টো তথ্য প্রদানকারী এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে থানায় জিডি দায়ের করেন এই কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী’কে অফিসের মাস্টার ট্রেইনার বানিয়েছেন। শিক্ষকের চাকরি দেয়ার নামে প্রার্থীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। জাল সনদ নেয়া রুবি প্রু মারমা’র কাছ থেকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী টাকা পেত। পাওনা টাকা আদায়ের সুবিধার্থে জাল সনদ দিয়ে ঋণ পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন শিক্ষা কর্মকর্তা। দীর্ঘ ১৪টি বছর একটানা এক অফিসে কর্মরত থাকার সুবাধে তিনি বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডেও জড়িয়ে পড়েছেন। জানাগেছে, ২০০৬ সালে মঞ্জুর আহমেদ অফিস সহকারী হিসেবে বান্দরবান কার্যালয়ে যোগদান করেন। পরে তিনি পদোন্নতি পেয়ে একই কার্যালয়ে সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে গণশিক্ষা কার্যক্রমে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘ ৪ বছর ধরে বান্দরবান জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা অফিসে কর্মরত থাকার সুবাদে জড়িয়ে পড়েছেন নানা ধরণে অনৈতিক কর্মকাণ্ডেও। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বান্দরবান জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক মঞ্জুর আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন এই অঞ্চলে কাজ করার সুবাধে আমি অনেককেই চিনি। রুবি প্রু মারমাও পরিচিত। তবে জাল সনদ পত্র আমি দেইনি। সে আমার অফিসের কর্মচারীও নয়। তারসঙ্গে আমার কোনো ধরণের সম্পর্ক নেই। জাল সনদ আমি এখনো হাতে পাইনি। তবে ব্যুরো বাংলাদেশ বান্দরবান শাখা তার বিরুদ্ধে মামলা করবে। ব্যুরো বাংলাদেশ বান্দরবান শাখার ম্যানেজার জাহেদ আজাদ বলেন, রুবি প্রু মারমা আমাদের একজন ঋন গ্রহীতা। সে বান্দরবান জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর ডিস্ট্রিক্ট প্রোগ্রাম অর্গানাইজার হিসেবে কর্মরত আছে এমন প্রত্যয়ন পত্র দেখে স্বশরীরে জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো বান্দরবান কার্যালয়ে গিয়ে যাচাই-বাছাই করেই ঋণটি দেন প্রতিষ্ঠানের আগের ম্যানেজার। আমি নতুন এসেছি। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, প্রত্যয়ন পত্রটি জাল সেটি প্রমানিত হয়েছে। কারণ সহকারী পরিচালক স্বাক্ষরটি তার নয় বলে দাবি করেছে। সুতরাং যে এটি জাল করেছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে বান্দরবান জেল প্রশাসক দাউদুল ইসলাম বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা এভাবে কাউকে প্রত্যয়ন পত্র দিতে পারেননা, এটি বেআইনি। যদি একজন সহকারী পরিচালকের নাম দিয়ে কেউ জাল সনদ ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে ঐ কর্মকর্তা কেন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App