পরিবারের ভালোবাসায় ভাগ বসানোয় বোনকে খুন
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:৫২ এএম
হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশু মিম
র্যাবের হেফাজতে আটক বড় ভাই আল আমিন
বাবা-মায়ের ভালোবাসায় ভাগ বসানো সইতে না পেরে ৪ বছর বয়সী ছোট বোন নুসরাত জাহান মিমকে হত্যা করে ১৪ বছর বয়সী বড় ভাই আল আমিন। র্যাবের হেফাজতে আটক বড় ভাই আল আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্যই উঠে আসে।
বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) র্যাব-২ সিনিয়র এএসপি কামরুজ্জামান ভোরের কাগজকে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আল আমিনকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পেয়েছে এমন কথা প্রায়ই বলতো তা বাবা-মা। মজার ছলে হয়তো বলা হলেও আলামিন তা স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারেনি। এছাড়াও ঘরে যে কোন কিছু খাদ্য বা উপহারসামগ্রীর সমান ভাগ না পাওয়া নিয়েও আলামিনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও তাকে মারধর করা হত। এ কারণেই বোনকে তার রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করে সে। গত ৭ দিন ধরে সে এ চেষ্টাতেই ছিল।
গত বুধবার বোনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বাথরুমে ফেলে আসে আল আমিন। র্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার লে.কর্ণেল শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, আসলে বিষয়টি একটি ছোট মনের ক্ষোভ থেকে সৃষ্ট ঘটনা। তাই বলবো এর থেকে শিক্ষা নিয়ে মা-বাবারা সচেতন হবেন। সন্তানরা যেন এমনটি বোধ না করে তাদের মধ্যে কোন বৈষম্য করা হচ্ছে।
এর আগে নিহত শিশুর বাবা লিটন মিয়া জানান, তাদের বাড়ি নরসিংদী রায়পুরা সিংড়াপুর গ্রামে। কড়াইল বস্তির জামাইবাজার হেমেলা এর বাড়িতে একটি কক্ষে ভাড়া থাকেন। এই বাড়িতে ৪ বছর ধরে আছেন তারা।
[caption id="attachment_243675" align="aligncenter" width="700"] র্যাবের হেফাজতে আটক বড় ভাই আল আমিন[/caption]
তিনি জানান, বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে একই বিছানায় ছেলে আল আমিন, মিম ও তার মাসহ চারজনই শুয়ে ছিলেন। ৭টার দিকে স্ত্রী রোকসানা কাজে চলে যায়। এরপর সাড়ে ৭টার দিকে ছোলে আল আমিনও মাদ্রাসায় যায়। তখন বাবা মেয়ে দুজনই শুয়ে ছিলেন। ৮টার দিকে আলআমিন বাসায় আসলে বাবা লিটন বাইরে গিয়ে দাত ব্রাশ করে। এরপর ছেলেকে নিয়ে বাহিরে যান। ১০-১৫ মিনিট পর তিনি রুমে এসে দেখেন বিছানায় মেয়ে নাই। এরপর শুরু হয় তার খোঁজ। এলাকায় মাইকিংও করা হয়।
তিনি আরো বলেন, পরে সোয়া ৯টার দিকে তাদের বস্তির গোসলখানায় বর্ষা নামে এক মেয়ে মিমকে পড়ে থাকতে দেখেন সেখানে। তখনই সে সবাইকে ডাকলে মিমের লাশ তেখতে পাই। তার গলায় হাতের ছাপ, মুখে দাগ রয়েছে।
শিশুটির মৃতদেহের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডাঃ সোহেল মাহমুদ তখন জানান, আপাতদৃষ্টিতে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তার ভিসেরা, নেকট্যিস্যুসহ কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে শিশুটির যৌন নির্যাতনের আলামত পাইনি।