×

সাহিত্য

‘আমরা টিকে থাকব কীভাবে?’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:০২ এএম

‘আমরা টিকে থাকব কীভাবে?’

নৃত্যের তালে আদিবাসী নারী (ফাইল ছবি)

বাংলাদেশের পাহাড়ি কন্যা নামে খ্যাত বান্দরবান। পাহাড়, নদী ও ঝরনার মিলনে অপরূপ সুন্দর বান্দরবানের পর্যটনের মূল উপকরণ পাহাড়ে ঘেরা সবুজ প্রকৃতি যা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন রূপে পর্যটকদের কাছে ধরা দেয়। ক্ষণে ক্ষণে প্রকৃতির রূপ বদলানোর খেলা। বান্দরবান জেলার আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে বগা লেক, তাজিনডং, কেওক্রাডাং, মেঘলা, নীলগিরি, নীলাচল, নাফাকুম, স্বর্ণমন্দিরসহ ছড়িয়ে আছে আরো অনেক সুন্দর। শহর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে বালাঘাটায় রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম বৌদ্ধমন্দির। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৌদ্ধ মূর্তি। এছাড়া শহরের মধ্যেই রয়েছে জাদিপাড়ার রাজবিহার এবং উজানীপাড়ার বিহার। শহর থেকে চিম্বুকের পথে যেতে পড়বে বম ও ম্রো উপজাতীয়র গ্রাম। বান্দরবান শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শৈলপ্রপাত একটি আকর্ষণীয় পাহাড়ি ঝরনা, যা দেখে যে কারো নেচে ওঠে মন। কিন্তু এমন সুন্দরের মাঝেই লুকিয়ে আছে কষ্টের এপাশ ওপাশ! করোনার হানায় এখানকার শিল্পীদের অনেকে আজ বেকার হয়ে গেছে। সরকারি প্রণোদনা বরাদ্দ হলেও কতিপয় মহলের নয়ছয়ে তা জোটেনি অনেক শিল্পীর বরাতে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বান্দরবানে চাকমা, মারমা, খুমি, বমসহ ২ হাজার শিল্পী রয়েছেন যাদের অধিকাংশই সরকারি প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ঢাকায় ২০ জন দুঃস্থ শিল্পীর নাম পাঠানো হয়েছিল, তাদের মধ্য থেকে পেয়েছেন মাত্র ৫ জন। প্রণোদনা কমিটিতে যারা ছিলেন তারা তাদের আত্মীয়স্বজন ছেলেমেয়ে এমনকি ঢাকায় অবস্থানরত শিল্পীর নাম দিয়ে তাদের নামে প্রণোদনা তুলে নিয়েছেন। তালিকায় অনেকের নাম দেয়া হয়েছে যারা নিজেরাই তা জানেন না! মূল দুঃস্থ শিল্পীরা রয়ে গেছেন উপেক্ষিতই। নির্বাচন কমিটিতে স্বচ্ছতা এবং প্রকৃত দুঃস্থ শিল্পীদের হাতেই প্রণোদনা তুলে দেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন তারা। জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ শিল্পী ভোরের কাগজকে বলেন, কমিটিতে যারা ছিলেন তারা ব্যাপক স্বজনপ্রীতি করে প্রণোদনাকেই কলঙ্কিত করেছেন। এটা অন্যায় এবং জঘন্য অপরাধ। অথচ পেটের দায়ে অনেক শিল্পী আজ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গৃহস্থালির কাজ করছেন। তিনি বলেন, আমরা এমনিতেই সংখ্যালঘু। আমাদের মধ্যেকার দুঃস্থ শিল্পীদের সঙ্গে যদি এভাবে অন্যায় করা হয় তাহলে শিল্পচর্চা নিয়ে আমরা কীভাবে টিকে থাকব? শিল্পী উখাইন মারমা বলেন, বান্দরবানের শিল্পীরা কোনোরকমে বেঁচে আছে। বান্দরবান ছোট শহর। যেখানে অনুষ্ঠান আয়োজনও হয় সীমিত আকারে। তার ওপর করোনার কারণে সেই সীমিত আয়ের রাস্তাটাও বন্ধ হয়ে গেছে। এদের দিকে মানবিক হাত বাড়িয়ে দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা জ্যোতি প্রু বলেন, বান্দরবানের সব শিল্পীরা এমনিতে সংখ্যালঘু। তাদের অনেকে চেনেনই না। কিন্তু তারা সবাই করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসব শিল্পীদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো ভারি দরকার। কিন্তু আমরা কার কাছে বলব এই দুঃখের কথা?  

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App